নানার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত স্কোয়াড্রন লিডার পাইলট আসিম


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:১৮ অপরাহ্ন, ১০ই মে ২০২৪


নানার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত স্কোয়াড্রন লিডার পাইলট আসিম
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে দুর্ঘটনায় নিহত স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।


শুক্রবার (১০ মে) বিকেল ৩টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের সেওতা কবরস্থানে নানা মরহুম মোহাম্মদ রউফ খানের কবরে তাকে দাফন করা হয়।


এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদের মরদেহ বহনকারী বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার শহরের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন। এর কিছুক্ষণ পর হেলিকপ্টার থেকে তার কফিনবন্দি মরদেহ কাধে করে নামিয়ে আনে বিমানবাহিনীর সদস্যরা। পরে নিহত আসিমকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। ছেলের কফিনবন্দি মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা নিলুফা খানমসহ আত্মীয় স্বজনরা।


আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ধান ক্ষেতের আইলে নারীর মরদেহ উদ্ধার


পরে দুপুর ২টার দিকে শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে জুমার নামাজের পর পাইলট আসিম জাওয়াদের তৃতীয় জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এর পর লাশবাহী গাড়িতে করে মরদেহ সেওতা কবরস্থানে নেওয়া হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে নানা মরহুম মোহাম্মদ রউফ খানের কবরে দাফন করা হয় এই পাইলটকে।


এদিকে পাইলট আসিম জাওয়াদের মরদেহ শেষবারের মতো এক নজর দেখতে সকাল থেকেই স্টেডিয়ামে ভিড় করতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ তার আপনজনেরা। আসিমের মরদেহ বহনকারী বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার করে তার বাবা আমানউল্লাহ, স্ত্রী অন্তরা আক্তার ও দুই সন্তানসহ স্বজনরা সেখানে পৌছান। এ সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।


জানা গেছে, সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক নিলুফা আক্তার খানম ও চিকিৎসক আমানুল্লাহর একমাত্র সন্তান ছিলেন আসিম জাওয়াদ রিফাত। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে কান্না করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন মা নিলুফা আক্তার।


আরও পড়ুন: গরিব হতদরিদ্রদের সেবা করতে চাই: ডা. জামান


নিহত জাওয়াদের বড় মামা সুরুজ খান জানান, অত্যন্ত মেধাবী ছিল জাওয়াদ। স্কুল ও কলেজজীবনে সব সময় প্রথম হয়েছে। আর ছোটবেলা থেকেই জাওয়াদের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয়ে পাইলটও হয়েছিল। কিন্তু সেটি মাত্র অল্প সময়ের জন্য ছিল। শুক্রবার জাওয়াদের মরদেহ মানিকগঞ্জে আনা হবে বলেও জানান তিনি।


জাওয়াদের খালাতো ভাই মশিউর রহমান শিমুল জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে যোগদান করে ২০১১ সালে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন জাওয়াদ। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আসিম চট্টগ্রাম বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহরুল হকের অফিসার্স আবাসিক এলাকার নীলিমাতে থাকতেন।


উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর মোহনায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ইয়াক-১৩০ বিধ্বস্ত হয়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে উড্ডয়নের কিছুসময় পর বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।


আরও পড়ুন: গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ চলছে


বিমানের পাইলট উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন এবং স্কোয়াড্রন লিডার ছিলেন মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ এ সময় বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে সক্ষম না হওয়ায় পরবর্তীতে দুই পাইলট প্যারাস্যুটের মাধ্যমে অবতরণ করেন। আর বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে বোট ক্লাবের পাশে নদীতে পড়ে। এতে গুরুতর আহত হন বিমানের পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।


এমএল/