‘জনবাণী’তে সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮:২০ অপরাহ্ন, ১৩ই মে ২০২৪


‘জনবাণী’তে সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান
ছবি: প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুর-ভোলা জেলার সীমান্তবর্তী চর রমনি মোহন ইউনিয়নের মেঘনা নদীতে জেগে ওঠা দ্বীপ চর মেঘা দখলে নিয়ে সয়াবিন লুট করছে রাসেল খার নেতৃত্বে একদল দস্যু। অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে মারধর করে কৃষকদের তাড়িয়ে দেয় চর থেকে। এতে জমির কোটি টাকার সয়াবিন ও চরের বাড়িঘর হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন দেড় শতাধিক কৃষক। বিষয়টি দৈনিক জনবাণী সহ জাতীয় ও স্থানীয় একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। 


পরে রবিবার (১২ মে) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের প্রতিনিধি দল। এসময় রাসেল খা সহ অন্যান্য অভিযুক্তরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক কিংবা জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি।


রাসেল খা’র নেতৃত্বে দখলে থাকা চর রমনি মোহন ইউনিয়নের ওই দ্বীপ চর মেঘা এবং চর কাছিয়া সরেজমিনে পরিদর্শনে যান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসান মোস্তফা স্বপন, সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভি দাস, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আনোয়ার, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়ালসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।


আরও পড়ুন: উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিকে গুলি করে হত্যা


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসান মোস্তফা স্বপন বলেন, বিরোধকৃত চর’টি সরকারের মালিকানাধীন। তবে লক্ষ্মীপুর না ভোলা জেলার অর্ন্তগত সেটি এখনো সুনির্দিষ্ট হয়নি। এজন্য পূর্বে এখানে কৃষকরা যেভাবে চাষাবাদ করেছে এখন সেভাবে তারা ফসল তুলবে। যদি কেউ শক্তি প্রদর্শন করে এ সিদ্ধান্তের ব্যত্যয় ঘটায় কিংবা চেষ্টা করে তাহলে সেটি চাঁদাবাজি ও ফৌজদারী অপরাধ বলে গণ্য হবে। পুলিশ এখন ছাড় দিলেও তখন আর কাউকে ছাড় দিবে না। দ্রুততার সঙ্গে সকল অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে। তবে অভিযুক্তদের যদি কোন কাগজপত্র থাকে তাহলে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে মালিকানা প্রমাণ করে চরের জমি ভোগদখল করতে পারবে।


তিনি আরও বলেন, অস্ত্রের মহড়ায় কৃষকদের ভয়ভীতি দেখানো ও মারধরের বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু আজ তাদের কাউকে চরে দেখা যায়নি। তাই আটক কিংবা জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি। তবে চরে থাকা লোকদের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে জমি চাষাবাদের নির্দেশ প্রদান করেছি।


এদিকে চরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাৎক্ষণিক পালিয়ে যায় দস্যু বাহিনীর সদস্যরা। তবে তাদের টিলায় (থাকার যায়গা) রান্না করতে দেখা যায় রাসেল খার চাচার। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাসেলদের চরের জমির মালিকানার সকল কাগজপত্র রয়েছে। তবুও লক্ষ্মীপুরের লোকজন তাদেরকে ওই চরে চাষাবাদ করতে দিচ্ছে না। কয়েক মাস পূর্বে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে রাসেলদের ঘরবাড়ি।


আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে ‘বিশ্ব মা দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা


রাসেল খার চাচা আরও বলেন, চরে কৃষকদের আবাদকৃত সয়াবিন লুটের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। রাসেল কারো সয়াবিন লুট করছে না। কোন ভয়ভীতি দেখিয়ে কাউকে চর থেকে তাড়িয়েও দিচ্ছে না। ওই দেখেন কৃষকরা জমি থেকে তাদের সয়াবিন তুলছে। তবে চরের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলো আমরা অবশ্যই পালন করবো।


যদিও এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানায় তারা এখনো আতঙ্কে রয়েছে।


এমএল/