স্বাধীনতা মানেই আমার স্বদেশ আমার জীবন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


স্বাধীনতা মানেই আমার স্বদেশ আমার জীবন

বাংলার মাটি ও মানুষ পরাজিত হতে জানে না। বিশ্বায়নের এ যুগেও রক্তের পলিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে বাংলাদেশ-এমন প্রত্যাশা জাতির। স্বাধীনতা এক সময় ছিলো স্বপ্ন, পরে হলো লক্ষ্যবস্তু-এক পর্যায়ে সে লক্ষ্য অর্জিত হয়েছিলো। এখন আমাদের লক্ষ্য অর্থনৈতিক মুক্তি। এই মুক্তিকে অর্জন করতে হলে আমাদের বিপুল জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে হবে। জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগানোর নিরন্তর প্রয়াস থাকলেই দেশগড়ার প্রত্যয়টি প্রবাহিত হবে ইতিবাচক খাতে। স্বাধীনতার শপথে, শক্তিতে একদিন আমরা জেগে উঠেছিলাম। এখন আমরা জেগে উঠবো অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। কৃষিভিত্তিক আমাদের দেশে কৃষি অর্থনীতির বুনিয়াদকে শক্তিশালী করতে হবে। মোদের গরব, মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা! তোমার কোলে তোমার বলে কতই শান্তি ভালোবাসা। এমন লেখা হৃদয়কে আবেগে আপ্লুত করে বারবার। ১৭৬০ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে জনগণ কমপক্ষে সতেরবার বিদ্রোহ করেছে। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তানের জন্মের আগে থেকেই বঞ্চিত ও শোষিত বাঙালি জনগোষ্ঠী নিজের ভাষায় কথা বলার জন্য সংগ্রাম শুরু করেছিল। ১৯৪৮ ও ১৯৪৯ সাল থেকে নিয়ে এই আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে ১৯৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারি। তবে ভাষার অধিকারের জন্য বাঙালিকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল আরো ৫টি বছর। ১৯৫৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সংবিধান উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। দীর্ঘ সংগ্রামের পর এলো বাংলা ভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা, আর এই ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত গড়ে উঠেছিল। বাহান্নর ভাষা আন্দোলনই একাত্তরের সূচনা! 

১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যবিত্ত শিক্ষিত বাঙালিদের আন্দোলন ছিলো। সংগ্রামে যদি পূর্ববর্তী প্রজন্ম পরাজিত হতো তাহলেও বাংলাভাষা শেষ হয়ে যেতো না; বাংলাদেশের মানুষ বাংলাতেই কথা বলতো এবং শিক্ষিতদেরকে সরকারি চাকরি বা সরকারি সুবিধার জন্যে উর্দুই শিখতে হতো! এখন যেমন ইংরেজি শিখতে হয়! রাষ্ট্রভাষা উর্দু হলে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা কি বাংলা ভুলে যেতো? ইংরেজ শাসনামলে ভারতবর্ষের সরকারি ভাষা ছিলো ইংরেজি এবং তারও আগের মুসলিম শাসনামলে দাপ্তরিক ভাষা ছিলো ফার্সি। তাতে তো বাংলা বা ভারতবর্ষের অন্য কোন ভাষা লোপ পায়নি! পুরোটাই আসলে অর্থনীতি, রাজনীতি এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করাই ভাষা আন্দোলনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল এমনটা নয়! বরং এটা বৃহত্তর অর্থে বাঙালিদের স্বাধিকারের দাবি! কথিত মুখের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষায় স্বীকৃতি দেয়ার অধিকার আদায়ের ১০০% ন্যায়সংগত দাবি। নিজের মুখের ভাষায় কথা বলতে পারার স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেয়া হেলার ব্যাপার না! বাঙালি অর্থনৈতিক, রাজনেতিক ও রাষ্ট্রীয় আর কোন ধরনের নিপীড়নই মেনে নিতে পারছিলো না! ভাষা আন্দেলন সাফল্যই বাঙালির মনের ভিতরের লুকিয়ে থাকা আগুন দপ করে জ্বালিয়ে দিয়েছিল। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার অধিকারের দাবিতে রক্ত দিয়েছিল রফিক, সালাম, বরকত, সফিউর, জব্বাররা। তাদের রক্তে শৃঙ্খলমুক্ত হলো পূর্ববাংলায় বাংলা। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের সংগ্রামের সূচনা সেদিনই ঘটেছিল। এরপর এক এক করে: ১৯৫৬ সালে সরকারি ভাষায় বিতর্ক, আইয়ুব খানের শাসন, পাকিস্তানে পাঞ্জাবি ও পশতুনদের দেনা বাঙালিদের ওপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়া, সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও সামরিক এবং বেসামরিক চাকরির ক্ষেত্রে বাঙালিদের নগণ্য সুযোগ দেওয়া, জাতীয় রাজস্ব এবং সরকারি সাহায্যের দিক থেকে বাঙালিদের সামান্য অংশ বরাদ্দ ইত্যাদি কারণে।

এবং জাতিগতভাবে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে বৈষম্যে বাঙালিদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের জন্ম দিল! পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আরো বড় অধিকার আদায় ও গণতন্ত্রের দাবিতে ছয় দফা আন্দোলন শুরু করলো। এ আন্দোলনই পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়ে উঠলো! ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য কি ছিল? পাকিস্তান রাষ্ট্রটির মৌলিকনীতি ও ধারণার বিপরীতে অসাম্প্রদায়িক, কল্যাণমুখী, মানবিক ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে এদেশের মানুষের মৌলক অধিকার ও ন্যায়সংগত অধিকার নিশ্চিত করা, জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠা, শোষণ, বৈষম্য, অন্যায়ের অবসান ঘটনা ও সাধারণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা। বাহান্ন ও একাত্তর তাই একই আদর্শ ও উদ্দেশ্য গাঁথা। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববাংলার বাঙালির স্বাধিকারের আন্দোলন এবং বাংলাদেশের জন্মের দুই স্তম্ভ। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত আলাদা স্বাধীনতা লাভ করলেও বাঙালির সার্বিক মুক্তি ঘটেনি। বহুদিনের বঞ্চনা, শোষণ, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে মুক্ত হয়ে শ্যামল সোনালী আবাস ভূমিতে বসতি করার স্বপ্নই মুক্তিযুদ্ধ আর ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনই ছিল এই স্বপ্নের যাত্রামূল। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের ৩০তম সম্মেলনে ২৮টি দেশের সমর্থনে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের ১৮৮ দেশ ২১ ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। খারাপ লাগে যে স্মৃতিচারণ শুরু হয় ২০ ফেব্রুয়ারি রাত বারোটার পর থেকে! বাঙালি বাংলা ভাষা দিবসে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে খালি পায়ে ছুটে যাচ্ছে ইংরেজি সংস্কৃতির হাত ধরে!! একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটা বাংলায় ৮ ফাল্গুন বেশিরভাগ ভুলেই যায়! একটা সোনালী সকালের হাত ধরে দিনটা শুরু করা যায় না? সংস্কৃতিগত দিক থেকে আমরা বাঙালিরা বড় বেশি বিশ্বায়নের দিকে পা বাড়িয়ে দিয়েছি! 

২৫ মার্চ ১৯৭১, বাঙালির রক্তাক্ত ইতিহাসের কালো অধ্যায়। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ২৫ মার্চ গভীর রাতে ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, চালায় ইতিহাসের বর্বরোচিত গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ অপারেশন সার্চলাইট নামের বর্বর অত্যাচার। এ হায়েনার দল রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা, ইপিআর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় নিরস্ত্র জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুরো ঢাকা শহরে চালায় ধ্বংসযজ্ঞ। ২৫ মার্চ ১৯৭১ ইতিহাসের কালরাত্রি হিসেবে থেকে যায় বাঙালির জীবনে, কিন্তু সে কাল অধ্যায় ছাপিয়ে ২৬ মার্চ সূচিত হয় স্বাধীনতার গৌরবময় অধ্যায়। ২৬ মার্চ জ্বলে ওঠে স্বাধীন বাংলার স্বর্ণশিখা। মুক্তিপাগল জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতার সংগ্রামে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা এলেও স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল মূলত ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার ডাক। তার বজ্রকণ্ঠের সেই ডাক বাঙালির জীবনে আজো অমলিন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম‘। মার্চ বাঙালি জাতির জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। তাই এই মাসটিকে তিলে তিলে উপলব্ধি করা আমাদের প্রয়োজন। জাতি হিসাবে আমরা এতটা অকৃতজ্ঞ নই। কারো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে কার্পণ্য করি না। যদিও এই কালচারটা তৈরি করতে অনেক বছর লেগেছে। আবার সবার মনের উদারতা যে এক রকম তা-ও কিন্তু নয়। সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করলে গর্জে ওঠে গোটা বাংলাদেশ। একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ডাক দেন অসহযোগের। 

তিনি বলেন, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো, শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। ওই ভাষণটাই মূলত স্বাধীনতার ঘোষণা। সারা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। প্রত্যেক বাঙালিই বুঝতে পারে সামনে আমাদের কঠিন সময়। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা মুক্তির যে শিখাটি প্রজ্বলিত করেছেন তাকে অনির্বাণ রাখতে তরুণ সমাজের দায়িত্বই সমধিক। তাদের স্বাধীনতার সংগ্রামের আদর্শ, শহীদদের আত্মদান, দেশপ্রেম ও দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে তারাই সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের ভিত রচনা করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসকে কি কখনও বিকৃত করা যাবে? মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং যে বিরাট সংগ্রামী ঐতিহ্যের অধিকারী এই বাঙালি জাতি, তাদের নিয়ে কি কোনো ধূম্রজাল সৃষ্টি করা কারও পক্ষে সম্ভব হবে? জাতি অর্জন করেছিল একটি জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত। স্বাধীনতা মানে ইচ্ছার স্বাধীনতা, রাজনীতির স্বাধীনতা এবং অবশ্যই অর্থনৈতিক মুক্তি। বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্পষ্টভাবেই উচ্চারণ করেছিলেন : এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। এই মুক্তির সংগ্রামে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে আমাদের তরুণ প্রজন্ম একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামীদের মতোই স্বপ্ন ও সাহস নিয়ে এগিয়ে আসুক, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করে ঐক্যবদ্ধের শপথ নিয়ে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এটিই প্রত্যাশা। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তার বিখ্যাত কবিতায় লিখেছেন ‘কেউ কথা রাখেনি’। সাধারণ বিবেচনায় বলা যায় যে, আমাদের দেশের রাজনীতিতে একথাটি এখন একটি দুঃখজনক ও নিষ্ঠুর সত্য হয়ে উঠেছে। এর ব্যতিক্রম যে নেই, তেমন অবশ্য নয়। তবে, বর্তমানে চলতি হাওয়ার রাজনীতির যে প্রাবল্য দেশে বিদ্যমান, তার মাঝে পড়ে তা অনেকটা কোণঠাসা হয়ে দুর্বল ব্যতিক্রম হিসেবে বিরাজ করছে। 

২৫ মার্চ রাত বারোটার পর পাক হানাদার বাহিনীরা বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রথমে ওরা রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আক্রমণ করে এবং ঘুমন্ত লোকদেরকে হত্যা করে। তারপর ভারী ভারী অস্ত্র দিয়ে ঢাকা শহরে অগণিত নিরীহ লোকদেরকে হত্যা করে। মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ দেখেনি ওরা। সামনে যাকে পেয়েছে তাকেই সোজা গুলি। মায়ের কোলের শিশুটি পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। রক্ষা পায়নি রিকশাওয়ালাও। তাদের স্পষ্ট কথা মানুষের কোনো দরকার নেই। দরকার শুধু এদেশের মাটির। আস্তে আস্তে তারা বড় বড় শহরগুলো দখল করে নেয়। তারপর থানা, এক পর্যায়ে প্রত্যন্ত গ্রামেও ক্যাম্প স্থাপন করে ফেলে। বিপথগামী কিছু বাঙালিও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। তারা হল জাতির চিরশত্রু। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ছিল অলিখিত ১২ নং সেক্টর- কেননা এখান থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠান মুক্তি যোদ্ধাসহ সব বাঙালিকে দিয়েছে স্বাধীনতার মনোবল আর সাহস ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি-পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ এ সব কালজয়ী গান দৃঢ় করেছে স্বাধীনতার চেতনাকে। দীর্ঘ নয় মাস পর একসাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি বাংলার স্বাধীনতা, স্বাধীন মানচিত্র, সার্বভৌম বাংলাদেশ। ২৬ মার্চ বাঙালির আত্মশক্তি ও আত্মপ্রত্যয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার দিন। আজ স্বাধীনতার সাড়ে চার দশক পেরিয়েছে। এখনো হতাশাগ্রস্ত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অনেক সিপাহসালার। এখনো আমরা মাথা উঁচু করে ন্যায়সঙ্গত অধিকারের কথা বলতে ব্যর্থ হচ্ছি। অথচ স্বাধীনতা মানেইতো ন্যায়সঙ্গত অধিকার ফিরে পাওয়া। স্বাধীনতা মানেই তো দেশের কল্যাণে নিজের কল্যাণ খোঁজা। স্বাধীনতা মানেই নিরাপত্তার গ্যারান্টি। স্বাধীনতা মানেই বিশ্বাসের পতাকা হাতে নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে সামনে এগিয়ে চলা। স্বাধীনতা মানেই তো আমার স্বদেশ আমার জীবন। স্বাধীনতা মানেই আমার সবুজ স্বপ্নের বিনির্মাণ। ছেলেহারা মায়ের মতো আজো আমরা দৃপ্ত শপথে সে পথেই চেয়ে আছি।

<