সবজির বাজারে স্বস্তি, অস্বস্তিতে চাল-মুরগি-মাছের বাজার


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:১৪ অপরাহ্ন, ১০ই জানুয়ারী ২০২৫


সবজির বাজারে স্বস্তি, অস্বস্তিতে চাল-মুরগি-মাছের বাজার
ফাইল ছবি

শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। নতুন নতুন টাটকা সবজিতে ভরে গেছে বাজার; ফলস্বরূপ দামও অনেকটা কমেছে। কয়েক মাস ধরে অস্বস্তি ছড়ানো আলুর দামও বেশ কমেছে। বাজারে এই মুহূর্তে শীতকালীন সব সবজির দামই ভোক্তা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল আছে ডিমের দামও। তবে, কিছুটা অস্বস্তি বিরাজ করছে চাল, মুরগি ও মাছের বাজারে।


শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর, কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার সরেজমিনে ঘুরে এমন  চিত্র দেখা গেছে।


বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজির সরবরাহ অনেকগুণ বেড়েছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি ও টমেটোর দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা করে। বাকি সবজিগুলোও বিক্রি হচ্ছে বেশ সহনীয় দামেই।


আরও পড়ুন: পবিত্র রমজানে রাজধানীর ১০০ পয়েন্টে ন্যায্যমূল্যে ডিম-মুরগি বেচবে বিপিএ


প্রতি কেজি গোল ও লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। প্রতি কেজি মুলা ১৫ থেকে ২০টাকা, পেঁপে ও শালগম ২০ থেকে ৩০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাধাকপি ১০ থেকে ২০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৩০ থেকে ৫০ টাকা ও কলার হালি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ও ক্ষিরা ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


সে তুলনায় করলা, পটল, ঝিঙা ও ধুন্দলের দাম কিছুটা বেশি; প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। এছাড়া চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৬০ টাকা ও টমেটো ৪০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সেইসঙ্গে লালশাক, পালং শাক, কলমি শাক ও কুমড়া শাকসহ বিভিন্ন শাকের আঁটি মিলছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়।


আলুর দামেও স্বস্তি ফিরেছে। গত সপ্তাহে যে আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। ঝাঁজ কমেছে পেঁয়াজের বাজারেও। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ইন্ডিয়ান নতুন পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে, রসুন এবং আদা এখনো কিনতে হচ্ছে চড়া দাম দিয়েই।


আরও পড়ুন: সবজির দাম কমায় স্বস্তি ফিরছে বাজারে


শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দেশি রসুন কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা ও ইন্ডিয়ান রসুন কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা এবং চীনা আদা কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


এদিকে গত সপ্তাহের মতো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৮০ টাকায় এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে, বেশ অস্বস্তি বিরাজ করছে মুরগির বাজারে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এখন। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে  প্রতি কেজি ৩৪০ টাকায়।


এ ছাড়া মাছের বাজারেও নেই কোনও সুসংবাদ। প্রকারভেদে প্রতিকেজি পাবদা মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, ছোট রুই ২৫০-৩০০ টাকা, ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের রুই ৪০০-৪৫০ টাকা, টেংরা ৬৫০ টাকা, চাষের শিং ৪৫০ টাকা ও পাঙাশ প্রকারভেদে ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


আরও পড়ুন: পেঁয়াজ-আলুতে স্বস্তি মিললেও বেড়েই চলেছে চাল-মুরগির দাম


ভরা মৌসুমে চালের বাজারও দেখা যাচ্ছে অস্বস্তি। প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৮০-৯০ টাকা, মান ভেদে মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকা, বিআর- ২৮ চাল ৬০- ৬৫ টাকায়, মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) ৫৫- ৫৮ টাকা, পুরোনো আটাশ ৬৫ টাকা, পাইজাম ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৮৫ টাকা, বাসমতি ৯৪- ৯৮ টাকা, পোলাওর চাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও আমন ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।


চালের দামের এই ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ ভোক্তারা। তাদের প্রশ্ন, ৭০ টাকার নিচে ভালো কোনো চাল বর্তমানে বাজারে নেই। ভরা মৌসুমে চালের এতো দাম হলে, সামনে মাহে রমজানে কী হবে? অভিযোগ করে অনেকে বলেন, বাজার মনিটরিং না থাকার কারণেই যাচ্ছেতাইভাবে দাম বাড়াচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।


এমএল/