অন্ধ হয়েও মাছ কেটে সংসার চালাচ্ছেন জুলহাস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:১৬ অপরাহ্ন, ৯ই জুন ২০২৪
জুলহাস বেপারী। তিনি একজন অন্ধ। অন্ধ চোখেই মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি।
রাজধানীর ফকিরাপুলের মাছ বাজারে কাঠের ছোট্ট একটি পাটাতনের উপরে বসে ছোট বড় সব ধরনের মাছ কাটেন জুলহাস। অন্ধ হলেও নিজের দক্ষতার উপরে বাবার এই পেশা ধরে রেখেছেন ২০ বছরের ও বেশি।
অন্ধ হয়েও ধারালো এই বটিতে মাছ কেটে তাক লাগিয়েছে তিনি। তার এই দক্ষতা দেখে প্রথম দেখায় যে কেউই অবাক হবে। দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি অন্ধ। চোখের দৃষ্টিতে তিনি অন্ধ হলেও মনের দৃষ্টিতে নৈপুণ্য হাতে কেটে যাচ্ছেন মাছ।
ছোটবেলায় হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি, আর এই দৃষ্টিশক্তি হারানোর জন্যই হারাতে হয় তার পরিবারকে, হয়ে পড়েন একা, এমন পরিস্থিতিতে ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়া খোলা ছিল না কোন পথ। তবে তা না করে তিনি বেছে নেন বড় ধারালো বটিতে মাছ কাটার এই পেশা।
আরও পড়ুন: পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত, যা বললেন আইজিপি
মাছ কেটে মজুরি নেন খুবই অল্প, খুশি হয়ে অনেকেই তাকে দেন বকশিশ। মজুরির টাকা হাতে পেলেই বলে দিতে পারেন এটি কত টাকার নোট।
প্রতিনিয়তই কাটছেন কয়েক মন মাছ। ছোটবেলায় বাবার কাছ থেকেই শিখে নেন মাছ কাটার এই কাজ, একসময় ছিল তার নিজেরও একটি মাছের ব্যবসা। অন্ধ হওয়ার পরে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে না নিলেও এখন প্রতিদিন মাছ কেটেই আয় আয় করছেন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।
যেখানে স্বাভাবিক মানুষের কাছে এই পেশাটি জটিল মনে হয়। সেখানে জুলহাস আপন করে নিয়েছেন এই পেশাটিকে। মাছ কাটতে গিয়ে কেটে গিয়েছে বহুবার তার হাত, তারপরে থেমে যাননি জুলহাস ।
আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীরের শীর্ষ নেতা গ্রেফতার
প্রতিদিন না দেখেই কেটে যাচ্ছেন নানা ধরনের ছোট বড় মাছ, তিনি এতটাই দক্ষ যে প্রথম দেখায় বোঝার উপায় নেই তিনি দৃষ্টিহীন। অথচ সামনে থাকা মাছ তো দেখা দূরের কথা দেখতে পান না পৃথিবীর কোন আলো।
ভিক্ষাবৃত্তী ছারাও অন্ধরা চাইলে কর্মঠ হয়ে উঠতে পারে,এরই বাস্তব উদাহরণ হার না মানা এই জুলহাস ব্যাপারী। তার এই দক্ষতা দেখে অবাক হন মাছ কাটাতে আসা ব্যক্তিরা।
জেবি/এসবি