ধামরাইয়ে কোরবানীর জন্য ষাঁড় গরুসহ বিপুলসংখ্যক পশু প্রস্তুত
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:০৬ অপরাহ্ন, ১২ই জুন ২০২৪
ঢাকার ধামরাইয়ে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ষাঁড় গরুসহ বিপুলসংখ্যক পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। খামারি ও গৃহস্থ পরিবারের সদস্যরা ঈদকে সামনে রেখে পশু পালনে বাড়তি যত্ন নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যে মতে, কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে উপজেলায় খামার ও গৃহস্থ পরিবারগুলোতে ৫২হাজার ৪৩৫টি পশু সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে মোটা তাজা করে প্রস্তুত করা হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলায় ছোট-বড় খামার ও পারিবারিকভাবে এবার ধামরাই উপজেলায় ৩২,৪৬৫টি ষাঁড় গরু, ৪২টি মহিষ, ১৩২০টি গাভী, ১৬, ৫৯৩টি ছাগল এবং ২০১৫টি ভেড়াসহ মোট ৫২৪৩৫টি পশু কুরবানীর জন্য লালন পালন করা হয়েছে।
এসকল খামারীকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সব সময় সঠিক পরামর্শ ও চিকিৎসা দিয়ে আসছে। যাতে করে সকল খামারিরা সঠিকভাবে পশু লালন পালন ও মোটাতাজাকরণ করতে পারে। এবার গরুর দাম ভালো থাকলে প্রান্তিক খামারীরা বেশ লাভবান হবেন।
আরও পড়ুন: সাভারে দুই দিনের উদ্ধার অভিযান শেষে মাথার খুলি উদ্ধার
উৎপাদিত কুরবানীর পশু উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত ২২ হাজার ৭০৩ টি পশু রাজধানী ঢাকা সহ আশেপাশের জেলাগুলোতে সরবরাহ করা হবে।
কোরবানির পশুগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করতে প্রাকৃতিকভাবে তাজা ঘাস, গমের ভুসি, ছোলা, খেসারি ও মসুরের ভুসি খাওয়ানো হচ্ছে।
খামারিরা জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেপারীরা এসে বাড়ি থেকে গরু কিনে নিয়ে যান। অনেকে হাটে যেতে পছন্দ করেন না, তারা খামারে এসে দেখে শুনে নিজের পছন্দ মত গরু নিয়ে যান। আবার আমরা নিজেরাই স্থানীয় হাট গুলোতে পশু গুলো বিক্রি করে থাকি। তারা জানান গোখাদ্য ও ওষুধপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের তুলনায় তুলনামূলক ভাবে পশু লালন-পালনে খরচ বেড়ে গেছে। তবে যদি বাজার ভালো থাকে এবং চোরাই পথে দেশের বাইরে থেকে পশু না আসে তাহলে ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে খামারিরা আশা করছেন।
খামারিরা জানান, কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে কয়েক মাস বা বছর আগে বিভিন্ন হাঁট থেকে এসব গরু কিনে খামারে এনে প্রাকৃতিক ভাবে লালন-পালন করেন ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে।
আরও পড়ুন: ধামরাইয়ে নিখোঁজ শিশু জিসানের মরদেহ উদ্ধার
সাইম এগ্রো খামার মালিক সিকান্দার হোসেন বলেন, আমার খামারে ৯০টি গরু আছে, গরুগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করেছি। দেশের বাইরে থেকে অবৈধ ভাবে পশু না এলে আমার ভালো লাভ হবে।
ডেমরান গ্রামের খামারি নূরুল ইসলাম জানান, তার খামারে এবার ১৫টি গরু প্রাকৃতিক উপায়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে লালন-পালন করা হচ্ছে। তার খামারে দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে। তবে গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু মোটাতাজাকরণে খরচ বেড়েছে বলে জানান তিনি।
শৈলান সজাগ খামারের ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান জানান, আমাদের গরুগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন ও খাবার দেওয়া হয়। আমরা পশু খাদ্যে কোন ধরনের ফিড, সার বা ইনজেকশন ব্যবহার করি না। আমাদের খামারে পশুগুলোকে ওজনে বিক্রি করা হয়। আমাদের এই খামারের পশুগুলো ওজনে মেপে বিক্রি করার কারণে কোন ক্রেতার ঠকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
এদিকে ধামরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা ডা. সেলিম জাহান জানান, কোরবানীর ঈদেকে সামনে রেখে উপজেলায় ৫২হাজার ৪৩৫টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। খামারিরা ও গৃহস্থরা পশু লালন-পালনের জন্য হৃষ্টপুষ্ট করতে পশুখাদ্যের পাশাপাশি স্টেরয়েড ওষুধ ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে পশুগুলো লালন-পালন করছেন।
আরও পড়ুন: ধামরাইয়ে অটো রিক্সা চালকের লাশ উদ্ধার
এবার ধামরাই উপজেলায় মোট আটটি বৈধ পশুর হাট অনুমোদন দেয়া হয়েছে। হাটের পশু গুলোকে মনিটরিং করার জন্য প্রত্যেকটি হাটে উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে ভেটেনারি মেডিকেল টিম রাখা হবে, যাতে করে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাটে আসা পশু গুলোর কোন ধরনের অসুবিধা হলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
এমএল/