জাবিতে গনসংযোগে বুধবার দুই ঘন্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:২৫ অপরাহ্ন, ২রা জুলাই ২০২৪
চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে প্রত্যাখ্যান করে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কোটা বাতিলের দাবিতে গনসংযোগ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে গণসংযোগের উদ্দেশে একটি মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি চৌরঙ্গী হয়ে ছাত্রী হলগুলো প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় বিশ মিনিট বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। এছাড়া সমাবেশ শেষে বুধবার (৩ জুলাই) বিকাল তিনটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত দুই ঘন্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ইবিতে কোটা সংস্কার বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী-মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন
উদ্ভিদবিজ্ঞান ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, কোটা রাখা হয় শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের জন্য। তাছাড়া আমাদের সংবিধানের ১৯ তম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘সুযোগের সমতা’। কিন্তু এই সাম্য বিনষ্ট হচ্ছে হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহাল সিদ্ধান্তের কারণে। সুতরাং আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, মেধার উপর গুরুত্ব আরোপ এবং শুধু সুবিধাবঞ্চিত জনগণের কথা বিবেচনা করেই কোটা সংস্কার করা উচিত।
অবরোধ কর্মসূচিতে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি হচ্ছে মেধার স্বীকৃতি। মেধাবীদের স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য দিনে দিনে বেকারত্বের হার বাড়ছে। সরকারের কোন পরিকল্পনা নেই বেকারত্ব কিভাবে কমানো যায় বরং শিক্ষার্থীদের উপর বৈষম্যমূলক কোটা প্রথার বোঝা চাপিয়ে দিয়ে বেকারত্ব বৃদ্ধি করার পাঁয়তারা করছে। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে, আপনারা দেখে থাকবেন যারা অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তাদের বেশিরভাগেরই বয়স মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই বছর তিন বছর কারো কারো জন্মই হয় নাই তবুও তারা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছে। তারা মূলত সরকারের চাটুকারিতা করে, পা চেটে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: জাবি শিক্ষার্থীদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি শরণ এহসান বলেন, সংবিধানে বলা আছে শুধু মাত্র অনগ্রসর, আদিবাসী, কিংবা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যই কোটা থাকবে। সংবিধানে অন্য কোনো কোটার উল্লেখ নেই। বাঙালি যুদ্ধ করেছে বৈষম্য রোধের জন্য। কিন্তু আমরা স্বাধীনতার বায়ান্ন বছর পরও বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোট সবসময় ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনের পক্ষে।
সমাবেশে সমাপনী বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম আগামী চার জুলাই আপিল বিভাগের শুনানির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছাত্র সমাজের বিরুদ্ধে যদি এই শুনানি দেয়া হয় তাহলে রাজপথে কোনো গাড়ি চলবে না। আগামী ৩ জুলাই আমরা একটি শক্ত অবস্থান নেব এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক বিকাল (৩-৫ টা) দুই ঘন্টার জন্য অবরোধ রাখবো। সেই সাথে এই কোটা বাতিলের আন্দোলনকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য সকলকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেন।
এমএল/