র্যাব গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দেশের একমাত্র এলিট ফোর্স র্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এরই মধ্যে জননিরাপত্তা রক্ষায় গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
সোমবার (২৮ মার্চ) র্যাবের ১৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবন ছিলো জলদস্যুর অভয়ারণ্য। র্যাবের ক্রমবর্ধমান চাপে আজ সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত হয়েছে। অপরাধীদের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’
আসাদুজ্জামান আরো বলেন, ‘র্যাব চরমপন্থিদের আগ্রাসন থেকে দেশকে মুক্ত করেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রক্তাক্ত জনপদে মানুষ পেয়েছে নিরাপদ জীবন। ফলে সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা প্রেয়েছে। জঙ্গি দমনের মাধ্যমে দেশের আপামর জনগণের নিরাপত্তা সমুন্নত হয়েছে। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, জলদস্যুতা দমনের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিরাজমান। বিভিন্ন হত্যা, খুন, অপহরণ, ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ভিকটিম পরিবারের বিচার পাওয়ার পথ সুগম করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘র্যাব মানবপাচারবিরোধী অভিযান পরিচালনা ও ভিকটিম উদ্ধার করার ফলে নতুন জীবনের স্বাদ পেয়েছে অনেকে। বিভিন্ন রকম দুর্ঘটনায় সাধারণ মানুষের পাশে থাকে। র্যাব মানবিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে দুস্থ, অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিগত ও বর্তমান সময়ে শীর্ষ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান চালিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনে এই এলিট ফোর্স। সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি দমনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি ও কৌশলের আলোকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিদমনে যে সফল তৎপরতা চালিয়েছে, তাতে র্যাবের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’
২০১৬ সালে হলি আর্টিজানসহ শোলাকিয়া, সিলেটের আতিয়া মহল, ঢাকার আশুলিয়া, মিরপুর, তেজগাঁও, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরাঞ্চলে ও ঝিনাইদহসহ প্রতিটি জঙ্গি দমন অপারেশনে র্যাব তার পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে। ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর র্যাব একই দিনে আশুলিয়া, গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে অভিযান চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করে। এই দিন হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও জেএমবি প্রধান সারোয়ার জাহান গ্রেপ্তার এড়াতে বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তার মৃত্যু হয়। এ ধরনের বহু অভিযান চালিয়ে র্যাব জনমনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল। পাশাপাশি বিপথগামী জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে র্যাব। মোটিভেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম সহায়তা প্রদান করে স্বাবলম্বী করা হচ্ছে। র্যাবের এই মানবিক উদ্যোগটি সফল হোক। এভাবে র্যাব মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। মানবিকতা দিয়ে অপরাধ দমনের এ সাফল্য বিশ্বের বুকে নজিরবিহীন।
মাদক বিস্তার রোধে র্যাব গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ এই সামাজিক যুদ্ধ এবং অভিযাত্রা আমাদের সফল করতে হবে। পাশাপাশি মাদকবিরোধী অভিযানের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা মাদকবিরোধী অভিযান সুসংহত কারার লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলায় একটি পরিপূর্ণ ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করেছি। একই সঙ্গে আমরা একটি যুগোপযোগী ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন’ প্রণয়ন করেছি। গত ১ বছরে র্যাবের অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ পিস ইয়াবা, ১৪৯ কেজি হেরোইন, ২৮ কেজি আইস, ১ লাখ ৩৯ হাজার বোতল ফেনসিডিলসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭১১ কোটি টাকা।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দমন, চরমপন্থি দমন, জলদস্যু দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সর্বশেষ বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে মাদকবিরোধী অভিযানে রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। র্যাবের বিশেষ উদ্যোগে র্যাব ডি-র্যাডিকালাইজেশন ও রি-হ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রাম ‘নবদিগন্তের পথে’ অত্যন্ত অভিনব ও যুগান্তকারী এই উদ্যোগ। অপরাধীর মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজের মূলধারায় আবার তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসা। আত্মসমর্পণকৃত ৪২১ জন সন্ত্রাসীদের (জলদস্যু ও জঙ্গি) পুনর্বাসন প্রক্রিয়া যুক্ত রয়েছে।’
ওআ/