কোটা আন্দোলন

‘আমাদের পেটে লাথি মারলে আমরা বসে থাকব না’


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮:৩২ অপরাহ্ন, ১২ই জুলাই ২০২৪


‘আমাদের পেটে লাথি মারলে আমরা বসে থাকব না’
ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরির সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করে সংসদে আইন পাস না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একইসাথে দেশব্যাপী সমন্বয়কদের সঙ্গে পরামর্শসাপেক্ষে শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।


শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বকর মজুমদার।


সমন্বয়ক মো. মাহিন বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কারও একার নয়। এখানে সবদলের শিক্ষার্থী রয়েছেন। আমাদের পেটে লাথি মারলে আমরা বসে থাকব না।


আরও পড়ুন: শাহবাগ ছাড়লেন আন্দোলনকারীরা, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা


এ সময় তিনি আরও বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের আবেগ নিয়ে ফুটবলের মতো খেলছে। ফুটবল লাথি দিয়ে একবার সংসদে, একবার হইকোর্টে পাঠাচ্ছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।


সমাবেশে নতুন কর্মসূচির বিষয়ে আরেক সমন্বয়ক আবু বকর মজুমদার জানান, সব বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শনিবার বৈঠক করা হবে। এরপর সন্ধ্যায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।


উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।


আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ইবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল


ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।


এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন।


টানা কয়েক দিন আন্দোলনের পর গত ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। পরেরদিন হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। তবে শিক্ষার্থীরা আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।


এমএল/