কোস্টগার্ডের মামলায় পুরুষ শূণ্য সেন্টমার্টিন


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৩৮ অপরাহ্ন, ১৫ই আগস্ট ২০২৪


কোস্টগার্ডের মামলায় পুরুষ শূণ্য সেন্টমার্টিন
ছবি: প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপ এখন পুরুষ শূণ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কোস্টগার্ডের দায়ের করা সন্ত্রাসী বিরোধী আইনের মামলার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

 

গত ২৪ জুলাই টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নৌ রুটের বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবিতে ৩ জনের মৃত্যু এবং উদ্ধার তৎপরতায় বাঁধা প্রদানের জের ধরে কোস্টগার্ডের সাথে দ্বীপবাসির উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জের ধরে ২৭ জুলাই ২৯ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করে ৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিন স্টেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার অনিক মাহমুদ বাদি হয়ে এই মামলাটি দায়ের করা হয়।

 

আরও পড়ুন: কক্সবাজারের ১৫ খাতে ৮ দিনে ব্যবসায়িক ক্ষতি ৭০০ কোটি টাকা


বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে এই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক মামলা হিসেবে প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। দ্বীপবাসির পক্ষে আইনজীবী আবদুল মান্নান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত টেকনাফে এই আবেদনটি করেন।

 

আইনজীবী আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত টেকনাফের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক হামিমুন তানজিন আবেদনটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলার তদন্তকারি পুলিশ কর্মকর্তা টেকনাফের সেন্টমার্টিন ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর মো. আবদুলবাতেনকে নিদের্শ দিয়েছেন।


এই আইনজীবী জানান, গত ২৪ জুলাই টেকনাফ সদরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাবেশ হয়েছে। ওখানে যোগদানের জন্য সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ কিছু লোকজন রওয়ানা হন। এসময় আসা-যাওয়ার কালে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এসময় উদ্ধার তৎপরতায় দ্বীপবাসিকে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে দায়িত্বরত কোস্টগার্ড সদস্যরা। এতে দ্বীপবাসি ও কোস্টগার্ডের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।


আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে কক্সবাজারের ২০০ গ্রাম প্লাবিত



এসময় ট্রলার ডুবিতে ছাত্র সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ২৭ জুলাই কোস্টগার্ডের পক্ষে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে ৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেয়া জরুরি হলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয় না। একই সঙ্গে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য মুলক অনেককেই আসামি করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে ফয়সালকে। এই ফয়সালের এক ভাই ট্রলার ডুবিতে মারা গেছে। একইভাবে মামলায় সেন্টমার্টিন বিএনপির সভাপতি নুরুল আলম, সহসভাপতি আবদুর রহমান, জাময়াতের নায়েবে আমির নুর আহমদকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য যাদের নাম এজাহারে রয়েছে তারা সকলেই ছাত্র ও অভিভাবক। 


এই মামলার জের ধরে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পুরুষ শূন্য হয়ে গেছে এবং গ্রেপ্তার আতংকে রয়েছে দ্বীপবাসি এমন মন্তব্য করে আবদুল মান্নান জানান, ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি হয়রানীমুলক মামলা কাউকে হয়রানী না করার ও প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে আদালতে আবেদনটি করা হয়েছে। আদালত মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদেশ নিয়েছেন।


আরও পড়ুন: কক্সবাজারের ৭ মামলায় গ্রেফতার আরও ৮


সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খেরশেদ আলম জানান, ২৪ জুলাই ট্রলার ডুবি, উদ্ধার তৎপরতায় কোস্টগার্ডের বাঁধার কারণে সৃষ্ট উত্তেজনাটি অপ্রীতিকর ছিল। এ ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যুতে দ্বীপবাসি শোকাহত। যে শোকাবহ পরিবেশ এখন দ্বীপ জুড়ে রয়েছে। এর মধ্যে মামলার কারণে দ্বীপ জুড়ে আতংক দেখা দিয়েছে। দ্বীপে এখন কোন পুরুষ নাই বললেও চলে। এ মামলা প্রত্যাহার করে কোস্টগার্ডের সাথে দ্বীপবাসির সম্পর্ক উন্নত করতে হবে।


টেকনাফ ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি জানিয়েছেন, এসংক্রান্ত আদালতে নিদের্শনা এখনও হাতে আসেনি। আসলে আদালতের নির্দেশনা মতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


 এসডি/