শ্রীপুরে বিদ্যুৎপৃষ্টে পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:৫৫ অপরাহ্ন, ২১শে আগস্ট ২০২৪
গাজীপুরের শ্রীপুরে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে একটি তৈরি পোশাক কারখানার এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার সূত্রপাতে হঠাৎ কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
নিহত শ্রমিক জুয়েল রানা (৩০) উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের বাউনী গ্রামের মো. মজিবুর রহমানের ছেলে। তিনি ওই কারখানায় কাটিংম্যান পদে কর্মরত ছিলেন।
বুধবার (২১ আগস্ট) সকালের দিকে ওই কারখানা ফটকে বন্ধের নোটিশ পাওয়া যায়।
এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের পটকা গ্রামের প্রোস্টার এ্যাপারেলস্ (চায়না ফ্যাক্টোরি) নামক কারখানায় ওই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: শ্রীপুরে উড়াল সেতুর পিলারে শোভা পাচ্ছে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী উক্তি
কারখানার কয়েক জন শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরেই ওই সেকশনের বিদ্যুৎ লাইনে ত্রুটি ছিল। বিষয়টি প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তাঁরা কোনো পদক্ষেপ নেননি।
মঙ্গলবার বিকেলের দিকে ওই সেকশনের কাটিংম্যান জুয়েল কাজ করা অবস্থায় হঠাৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে লুটিয়ে পড়েন। এসময় কয়েকজন শ্রমিক মিলে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সুত্র আরও জানায়, রাত পৌনে ৯টার দিকে কারখানার এইচআর ম্যানেজার আবু সাইদ এসে কোন আইনী ব্যবস্থা না নিয়েই দুইলাখ টাকা রফাদফা করে নিহতের লাশ নিয়ে যেতে চান। এসময় কারখানার শ্রমিক ও স্বজনরা বিষয়টি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান । এতে সেখানে তাদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে কারখানার এইচ আর ম্যানেজার আবু সাইদ শ্রমিকদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কারখানায় শ্রমিকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়। কোন প্রকার ত্রুটি নেই। শ্রম আইন অুনযায়ী নিহতের পরিবারকে দুই লাখ টাকা দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: শ্রীপুরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও সড়ক পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা
নিহতের ভাই সোহরাব হোসেন জানান, জুয়েল ওই কারখানায় চাকরি করতো। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সে কাজ করার সময় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে মারা গেছে বলে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে জুয়েলের লাশ দেখতে পাই। কর্তৃপক্ষ দুইলাখ টাকাসহ আরও সুবিধা দিবে বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শারমিন সুলতানা জানান, সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। পুলিশে খবর দিলেও পুলিশ আসেনি। পরে নিহতের ভাই লাশ বুঝে নেয়।
এ বিষয়ে কারখানার ডিজিএম আব্দুর রাজ্জাক লিটন বলেন, শ্রমিক নিহতের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করবো। তাই,আপাতত কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাইরে থেকে ইলেক্ট্রিশিয়ান এনে সমগ্র কারখানার বৈদ্যুতিক লাইন যাচাই-বাছাই করা হবে। এছাড়াও নিহতের নামে কারখানায় বেতন চলমান থাকবে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ থানায় অবগত করেনি। এছাড়াও আমরা এখনও পরিপূর্ণ ভাবে আমাদের থানার কার্যক্রম চালাতে পারিনি।
এসডি/