হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট নিযুক্ত হলেন জাবি অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:১২ অপরাহ্ন, ২৮শে আগস্ট ২০২৪


হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট নিযুক্ত হলেন জাবি অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম
ফাইল ছবি

একাডেমিক দক্ষতা ও গবেষণার কৃতিত্ব স্বরূপ দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বসেরা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট-(Visiting Scientist) হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম।


চলতি বছরের মার্চ এবং এপ্রিলে প্রথমবারের মতো তিনি ভিজিটিং স্কলার হিসেবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ( ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট-Visiting Scientist হিসাবে) দ্বিতীয়বার নিযুক্ত করেছে। গত এপ্রিলে কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্টে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট, ডিজাস্টারে নেতৃত্ব এবং জলবায়ু মাইগ্রেশন বিষয়ে ড. তারিকুল ইসলামের একাডেমিক আলোচনা শোনার পর, সেখানকার সম্মানিত পরিচালক HHI-এর ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট হিসেবে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে।


আরও পড়ুন: জাবিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল


শিক্ষা ও গবেষণামূলক বিষয়ে এক বছরের জন্য সেখানে কাজ করবেন তিনি। তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তার দায়বদ্ধতা এবং শিক্ষাদান ও গবেষণামূলক কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে এবার প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ থেকে হার্ভার্ডের সাথে ভার্চুয়ালি কাজ করবেন। ঢাকা এবং বোস্টনের মধ্যে প্রায় ১১ ঘন্টা সময়ের পার্থক্যের কারণে অনলাইনে প্রতিমাসে দুইদিন বৃহস্পতিবারে সন্ধ্যা ৯ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন গবেষণা তত্ত্বাবধান এবং শিক্ষাদান কার্যক্রমে যুক্ত থাকবেন। এছাড়াও সামনের বছর একমাসের জন্য সেখানে গিয়ে বিভিন্ন গবেষণার তত্ত্বাবধান এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার আমন্ত্রণ পেয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফিসিয়াল অনুমতি পাওয়ার পর মাসে দুবার সন্ধ্যায় হার্ভার্ড এ অনলাইনে যোগ দেবেন বলে জানান তিনি।


অনুভূতি প্রকাশ করে অধ্যাপক ড. তারিকুল ইসলাম বলেন, আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গবেষণায় আমাকে সহযোগিতা করেছেন। অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ ও দেশ-বিদেশের অন্যান্য কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের অভিজ্ঞতা আমাকে হার্ভার্ডে ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট হিসেবে যুক্ত হতে সহায়তা করেছে।


তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনও যথেষ্ট গবেষণাবান্ধব হতে পারেনি। বিশ্বের নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সেজন্য আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও গবেষণা পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি অভিজ্ঞতা অর্জনের চেষ্টা করেছি। অর্জিত এই অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে দেশের শিক্ষাঙ্গনে গবেষণার গুরুত্ব ও শিক্ষার মান বাড়াতে চেষ্টা করে যাবো।


আরও পড়ুন: গেস্ট-গণরুম মুক্ত হল চায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা


উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বাংলাদেশের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের একজন অধ্যাপক, যিনি দক্ষিণ এশিয়ার একজন উদীয়মান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃত। ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের আগে, তিনি গবেষণা ও প্রকল্প পরিচালনার ভূমিকায় জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি বাংলাদেশে সাত বছর কাটিয়েছেন। ইউএনডিপির সাথে তার কাজ স্থানীয় সরকার, জলবায়ু আলোচনা, সংকট এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উপর তার বর্তমান গবেষণা এবং শিক্ষার অভিজ্ঞতা প্রশংসনীয়।


২০১৯ সাল থেকে ড. তারিকুল ইসলাম বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টারে রিসার্চ গাইড হিসেবে কাজ করেছেন এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে কোর্স অফার করেছেন। তিনি LSE-এর সাউথ এশিয়া ব্লগ, অক্সফোর্ড পলিটিক্যাল রিভিউ, SOAS ব্লগ এবং NUS-এর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ ইনস্টিটিউটে নিয়মিত অবদান রাখেন। রাউটলেজ, এলসেভিয়ার, কেমব্রিজ, সেজ, অক্সফোর্ড এবং স্প্রিংগারের মতো আন্তর্জাতিক আউটলেটগুলিতে তার প্রকাশনাগুলি উপস্থিত হয়।


ড. তারিকুল ইসলামের উল্লেখযোগ্য বইগুলির মধ্যে রয়েছে "বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার," "দুর্যোগ, শাসন ও উন্নয়ন: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত," এবং "দক্ষিণ এশিয়ায় কোভিড-১৯: সমাজ, অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে এর প্রভাব।" তিনি কেমব্রিজ, এলএসই, এসওএএস, অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড এবং এশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে উপস্থাপনা করেছেন। তিনি অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড, কেমব্রিজ এবং এসওএএস-এর সাথে বিভিন্ন ক্ষমতায় যুক্ত। তার গবেষণার আগ্রহের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সরকার, সংকট ব্যবস্থাপনা, মানব নিরাপত্তা, জলবায়ু কূটনীতি, টেকসই উন্নয়ন, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা এবং জোরপূর্বক অভিবাস


এমএল/