চাঁবিপ্রবি: ‘অজ্ঞাতস্থান’ থেকে বরখাস্তের আদেশ ভিসির, প্রত্যাখ্যান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের


Janobani

বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:৫৪ অপরাহ্ন, ১২ই সেপ্টেম্বর ২০২৪


চাঁবিপ্রবি: ‘অজ্ঞাতস্থান’ থেকে বরখাস্তের আদেশ ভিসির, প্রত্যাখ্যান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের
ছবি: প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাধা দিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে ‘অজ্ঞাতস্থানে’ থাকা চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নাছিম আখতারের পাঠানো আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতি ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবারের (৯ সেপ্টেম্বর) ওই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে বুধবার পৃথক দুইটি বিবৃতিতে এই প্রত্যাখ্যানের কথা জানায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।


শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক ও সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. জাহিদুল ইসলাম এবং ব্যবসায়ে প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক খাদিজা খাতুন টুম্পা। অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে দেয়া বিবৃতিটি সিএসটিউই ইনসাইডার নামক ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়। 


শিক্ষক সমিতির দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “গত ০৯/০৯/২০২৪ খ্রি. তারিখে উপাচার্য কর্তৃক, উনার DUET-এর অফিসিয়াল ইমেইল ব্যবহার করে প্রেরিত অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত সূত্রোক্ত দুইটি পৃথক অফিস আদেশের মাধ্যমে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক জনাব নাজিম উদ্দিন এবং কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক জনাব প্রিন্স মাহমুদ–কে অব্যাহতি প্রদান করেন। উক্ত অফিস আদেশ সমূহে শিক্ষকদ্বয়ের বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০ (২০২০ সনের ১৬ নং আইন) –এর ৪৩(৭) ধারায় উল্লেখিত শর্ত অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতন ভোগী শিক্ষক বা কর্মচারীকে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে কোন তদন্ত কমিটি কর্তৃক তদন্ত অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এবং তাকে ব্যক্তিগতভাবে বা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করে চাকরী হতে অপসারণ বা পদচ্যুত করা যাবে না।”



বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “উক্ত ধারাটি এক্ষেত্রে লঙ্ঘন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বিরোধী আন্দোলনে অব্যাহতি প্রাপ্ত শিক্ষকদ্বয়সহ সকল শিক্ষকদের সমর্থন থাকায় উপাচার্য ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে তাদেরকে কোন ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করে অব্যাহতি প্রদান করেন। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি সকল শিক্ষকদের পক্ষ থেকে উপাচার্যের এহেন সিদ্ধান্ত ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে এবং উনার বিধিবহির্ভূত সকল কর্মকাণ্ডের জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।”


শিক্ষার্থীদের দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেরাচারী উপাচার্য ড. মোহাম্মদ নাছিম আখতার অবৈধভাবে গত ০৯/০৯/২০২৪ ইং তারিখে যে অফিস আদেশ জারি করেছেন তা চাঁবিপ্রবি এর সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখান করেছে। স্বৈরাচারী উপাচার্য নাছিম আখতার কৃর্তৃক প্রদত্ত কোনো আদেশ চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানবে না। আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছি যে চাঁবিপ্রবি এর স্বৈরাচারী উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের অব্যাহতি দিয়ে জারি করা অবৈধ অফিস আদেশ বাতিল না করা পর্যন্ত চাঁবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা কোনো প্রকার একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না।”



প্রসঙ্গত, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে উপাচার্য সরাসরি বাধা দেন এবং ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে নিজের লেখা একটা বই উৎসর্গ করেছেন তিনি। সরকার পতনের পর থেকেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাস ছেড়ে ‘অজ্ঞাতস্থানে’ অবস্থান করছেন তিনি।


জেবি/এসবি