নির্বাচনে জিতলে দেশে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে: তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৬ অপরাহ্ন, ১০ই ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে জন সাধারণ বিএনপিকে দায়িত্ব দিলে ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। পরিবারে জবাবদিহিতা আছে বলেই পরিবার ঐক্যবদ্ধ থাকে। পরিবারের জবাবদিহিতা থাকে বলেই পরিবার ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যায় বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ ও জনসম্পৃক্তি কুমিল্লা বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান কালে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।
এ সময় তারেক রহমান বলেন, দেশের জন্য কাজ করতে গিয়েই আমার বাবা শহীদ হয়েছেন। আমার ভাই শহীদ হয়েছেন। আর আমার মায়ের কারাগার ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা আজ না হয়, নাই বললাম। এমন ধরণের গল্প দেশের অনেক বিএনপি পরিবারের। তাদের অনেকেই ডান্ডাবেড়ি পরানো অবস্থায় স্বজনদের জানাজায় গিয়েছে। এরপরও বলি, শুধু নিজের কথা ভাবলে হবে না। দেশের জনগণের জন্যও আমাদের সবার ভাবতে হবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক হলেন সারজিস আলম
এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, কাউকে কোনো কিছু দিয়ে নয়, আদর্শ দিয়ে দলে রাখতে হবে। আদর্শ দিয়ে তাকে দলের কর্মী হিসেবে আগামী দিনের জন্য তৈরি করতে হবে। আমাদের কথাবার্তা আচার-আচরণ যেন অপরজনকে আকৃষ্ট করে।
আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করতে চেয়েছিল জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা ১৫ বছর যাবত নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গুম, খুন ও নির্যাতনের পর এখনও বিএনপি নেতাকর্মীর সংখ্যাই বেশি। বিএনপি নেতাকর্মীদের দিকেই তাকিয়ে আছে দেশের সাধারণ জনগণ। অনেকেই বলে থাকেন, লন্ডন আমেরিকার মতো যদি আমাদের দেশ হতো। জবাবদিহিতা তৈরি করলে আর লন্ডন আমেরিকার উদাহরণ দিতে হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
তারেক রহমান আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পল্লী চিকিৎসক পদ্ধতি চালু করা হবে। এক লাখ পল্লী চিকিৎসক নিয়োগ করবো। এরমধ্যে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ হবে নারী চিকিৎসক। এর সুবিধা হবে তারা বাংলার ঘরে ঘরে যেতে পারবে। একটা পরিবারের মা বা গৃহিনীকে যদি সচেতন করতে পারি তাহলে পরিবারের সবার মধ্যে সচেতনতা ফিরে আসবে আশা করি। তাদের জনজীবন উন্নত করা হবে। সচেতনতার মাধ্যমে মানুষের অসুস্থতার পরিমাণ কমাতে তারা বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
কৃষকদের কথা বলতে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, তাদের কষ্টে উৎপাদিত পণ্য যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য ছোট ছোট কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করা হবে। কনটেইনারের মাধ্যমে এখন ছোট ছোট কোল্ডস্টোরেজ স্থাপন করা যায়। এটা কৃষকরা নিজেরাই চালাবে। এছাড়া, পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা ও সড়ক উন্নত করার পরিকল্পনাও আছে বিএনপির।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করলে ভারত দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না: গয়েশ্বর
রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, আরও দুই বছর আগে আমরা ৩১ দফার কথা বলেছিলাম। যখন আমরা কেউই জানতাম না স্বৈরাচার কখন বিদায় নেবে। যখন অনেকে বিশ্বাসই করতো না স্বৈরাচার বিদায় হবে, তখন আমরা এটি দিয়েছিলাম। এটির মূল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য হচ্ছে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কিছু করা।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতি দেশের অধিকাংশ মানুষের আস্থা রয়েছে। বিশ্বাস রয়েছে। আপনাদের কথা সঠিক। কিন্তু এ আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার (বিএনপি নেতাকর্মীদের)।
বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভুইয়ার সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
কর্মশালা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন। উপস্থিত ছিলেন, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনসহ কুমিল্লাসহ ছয়টি জেলা বিএনপি, মহানগর, পৌরসভার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন: যেসব দেশের ভিসা পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া ছেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার বানু, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আরলি, সহ গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুর সাত্তার পাটোয়ারী ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবা হাবিব।
এমএল/