সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২৫ অপরাহ্ন, ২৫শে ডিসেম্বর ২০২৪
রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের ওপর ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলার শিকার ডা. রুহুল আমিন ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: আবারও বনানীর সড়ক অবরোধ করল প্রাইম এশিয়ার শিক্ষার্থীরা
ডা. রুহুল আমিন মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে মেডিভয়েসকে বলেন, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের বহির্বিভাগের সামনে বিডিএস কোর্সের কিছু শিক্ষার্থী ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদল সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম সৈকতের স্ত্রীর ভাইকে কিছুটা দূরে সরে বসার অনুরোধ করেন তারা।
এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদল সভাপতি সৈকতের স্ত্রী। তিনি শিক্ষার্থীদের হুমকির সুরে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে তোমরা খারাপ ব্যবহার করেছো কেন? আমার স্বামী এই মেডিকেলের ছাত্রদলের সভাপতি। আমাদের কথায় এই হাসপাতালে সব ট্রান্সফার হয়। এখানকার দোকান সব কিছু আমরা নিয়ন্ত্রণ করি। চাইলে তোমাদের খেলাও বন্ধ করে দিতে পারি।’
একই সময়ে তার পাশে থাকা মধ্যবয়সী মহিলা (সৈকতের শাশুড়ি) বলেন, ‘পিটিয়ে একদম শুইয়ে দেবো সবাইকে।’
এ সময় ঘটনাস্থলে বহির্বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুহুল আমিন তাকে সংযত হতে বলেন। এতে ছাত্রদল নেতার স্ত্রী ডা. রুহুল আমিনের কাছে জানতে চান, তিনি ডা. সৈকতকে চিনেন কিনা। ডা. রুহুল আমিন তাকে চিনেন না বলে কর্মস্থলে চলে যান।
কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলকর্মী এবং ২০১৬-১৭ সেশনের অনিয়মিত শিক্ষর্থী ইফতেখার শিহাব, ২০১৯-২০ সেশনের ছাত্রদল কর্মী সালমান রহমান সাদিক এবং মেহেদী হাসান রনি ঘটনাস্থলে এসে ডা. রুহুল আমিনকে ডেকে এনে মারধর করেন। এতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ পরিস্থিতিতে নিরাপদ ক্যাম্পাস চেয়ে ডা. রুহুল আমিন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সবাই যেন নিরাপদ থাকে, ভবিষ্যতে যেন কোনো চিকিৎসককে হামলার শিকার না হতে হয়, কর্তৃপক্ষের কাছে এমন ক্যাম্পাস চাই।’
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সোহরাওয়ার্দীর ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল বারী বাবর ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে একজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের উপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ৫ আগস্টে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করে কি লাভ হলো? যদি ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই এই ধরনের অপরাজনীতি শুরু হয়, তাহলে ক্ষমতায় যাওয়ার পর কি হবে?’
আরও পড়ুন: বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ চিকিৎসকদের
হামলায় সম্পৃক্ততা জানতে ২০১৬-১৭ সেশনের অনিয়মিত শিক্ষার্থী ইফতেখার শিহাবকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। তবে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে মেডিভয়েসকে বলেন, কোনো পক্ষ থেকেই তার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি, অভিযোগ আসলে কারো প্রতি কোনো বৈষম্য করা হবে না। সকলেই ন্যায় বিচার পাবে।
এসডি/