লুট হওয়া ১৪০০ অস্ত্র, আড়াই লাখ গোলাবারুদ এখনো উদ্ধার হয়নি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৬ অপরাহ্ন, ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আবদুল হাফিজ বলেছেন, ৫ আগস্টের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে লুট হওয়া ১ হাজার ৪০০ অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। পাশাপাশি আড়াই লাখ বিভিন্ন ধরনের গুলি উদ্ধার সম্ভব হয়নি। একইসঙ্গে তিনি জানান, দেশব্যাপী যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তিন দিনের জেলা প্রশাসক সম্মেলনের শেষ দিনের প্রথম কর্ম অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।
আরও পড়ুন: নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুলের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ডিসিদের কী কী নির্দেশনা দিয়েছেন– জানতে চাইলে আবদুল হাফিজ বলেন, দু’একটি জেলায় অস্ত্র এবং গোলাবারুদ যেগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে সেগুলো কীভাবে তাড়াতাড়ি ধ্বংস করা যায়, সেটা সম্পৃক্ত প্রশ্ন ছিল। আগামী দিনে তাদের কি কি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে যেমন আমি তাদের উল্লেখ করেছি যে, প্রায় ১ হাজার ৪০০ অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি; যেগুলো ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে লুট হয়ে গিয়েছিল। আড়াই লাখ বিভিন্ন ধরনের গুলি এখনো উদ্ধার হয়নি, সেগুলো জেলায় কোনো না কোনো জায়গায় আছে। সেগুলো সন্ত্রাসীদের হাতে পড়তে পারে এবং তারা ব্যবহার করতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী জানান, প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র লুট হয়েছে। তিন ভাগের চার ভাগ উদ্ধার হয়ে গেছে। ৬ লাখ গুলির মধ্যে মাত্র আড়াই লাখ উদ্ধার করা যায়নি, তার মানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে চলমান যে অভিযান আছে সেগুলোর মাধ্যমে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, আমি উল্লেখ করেছি স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় সংগঠিত হচ্ছে এবং তারা কর্মসূচি দিচ্ছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে, সে ব্যাপারে তাদের সজাগ থাকতে হবে। আমি আরও উল্লেখ করেছি, সামনে রমজান আসছে তখন তাদের ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে। বাজারদর তারা যেন নিজ নিজ এলাকায় কম রাখতে পারেন। বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিতে পারেন, সেটা যেন মোকাবিলা করতে পারেন।
‘আমি বলেছি সাধারণ মানুষের তিনটা প্রত্যাশা। এটা আকাশচুম্বী নয়। তারা নিরাপদে চলাফেরা করতে চায়, রাতে শান্তিতে ঘুমাতে চায় এবং দ্রব্যমূল্য তাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে যেন থাকে এবং যে সেবা সরকারের কাছে তাদের পাওয়ার কথা সেটা যেন কোনো ঝামেলা ছাড়া পেতে পারে। আমি বলেছি, মাঠ পর্যায়ে যারা আছে মানুষের জন্য তারাই সরকার।’ যোগ করেন আবদুল হাফিজ।
চলমান অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, চলমান অভিযান যেটা আছে সেটা চলবে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজন হলে সরকার সেখানে ব্যবস্থা নেবে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে সামরিক বাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনীর বোঝাপড়া আরও কীভাবে করা যায় সেটি আলোচনায় এসেছে। যুবসমাজের জন্য ইউনিভার্সেল মিলিটারি ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেখানে আমাদের যুবসমাজের যারা আছেন তারা মিলিটারি ট্রেনিং পেতে পারেন। তারা দেশের প্রতিরক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন।
ডিসিরা নিজ নিজ জেলায় অভিযান করতে চান জানিয়ে আবদুল হাফিজ বলেন, তারা নিজ নিজ কয়েকটি জেলায় বিশেষ অভিযান করতে চান সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, রিমোট জায়গায় বা ইন-এক্সসেবল বা চর এলাকায় যেখানে হয়ত বেশি পরিমাণ ফোর্স দরকার বা বেশি পরিমাণে লজিস্টিক দিতে হয়। নরসিংদীর ছয়টি ইউনিয়ন একটু দুর্গম, সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষ হত্যা হচ্ছে, সেখানে অভিযান অভিযান পরিচালনা করতে চান। সেখানে স্পেশাল অপারেশন দরকার।
আরও পড়ুন: কারো ধমক শুনবেন না : ডিসিদের প্রধান উপদেষ্টা
যুব সমাজের প্রশিক্ষণের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আর্থিক সংশ্লিষ্টতা আছে। এটা আমার মনে হয় চিন্তা করতেই পারি। আমরা বলেছি, সরকারের নির্দেশনা পেলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এটা করতে প্রস্তুত।
ঝাটকাবিরোধী অভিযানে অতীতের যে সম্পদ আছে সেটা রক্ষায় তারা (জেলা প্রশাসকরা) সিভিল প্রশাসনকে আরও সহায়তা করতে পারে সে বিষয়ে নৌবাহিনীর কাছে প্রশ্ন ছিল বলেও জানান তিনি।
আরএক্স/