ডুয়েটে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯:২৯ অপরাহ্ন, ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এ মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২.০১ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপ-উপাচার্য, ডীন, বিভাগীয় প্রধান ও পরিচালকবৃন্দ। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রভোস্টগণের নেতৃত্বে বিভিন্ন হলসমূহের শিক্ষার্থীবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) এর দপ্তর, অফিসার্স এসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্রিতে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১১: ৩০ মিনিটে শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে মহান শহিদ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসার। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম এবং পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) অধ্যাপক ড. উৎপল কুমার দাস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী সকল ভাষা শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ও তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এ সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়ে আমাদের দেশ উপহার দানকারী সকল শহিদ এবং পৃথিবীর ইতিহাসে আলোড়ন সৃষ্টিকারী জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সকল শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের পূর্ণ সুস্থতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে শহিদদের স্মরণ করে ২১শেফেব্রুয়ারি পালিত
তিনি বলেন, ‘১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি, আমরা মায়ের ভাষা পেয়েছি। এই আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলাম। এই আত্মত্যাগের আদর্শ ধারণ করে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। এই ধারাবাহিকতায় আমরা সকল বাধা পেরিয়ে ২০২৪ সালে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।' তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, আমরা কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করি না। সকল ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে আমাদের অধিকার ও দাবি আদায়ের জন্য সকলেই এক কাতারে দাঁড়িয়ে সংগ্রাম করতে জানি। সেই সংগ্রাম মুখর মন-মানসিকতা নিয়ে আমরা আমাদের প্রাণের এই ডুয়েটকে দেশ ও বিশ্বের ইতিহাসে একটি উদাহরণ সৃষ্টিকারী অবস্থানে নিয়ে যাবো।' এ সময় তিনি শিক্ষা, গবেষণা ও প্রকাশনায় ডুয়েটকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসার মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ও তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এ সময় তিনি মহান শহিদ দিবসের তাৎপর্য ও ইতিহাস তুলে ধরে শিক্ষা, গবেষণা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও অর্থনীতিসহ সকলক্ষেত্রে বাংলা ভাষা চর্চার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক, প্রভোস্ট, অফিস প্রধানগণসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মহান শহিদ দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে সূর্যোদয় থেকে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বা'দ জুমা ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ দোয়া, শান্তি কামনায় মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা এবং ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুলের উদ্যোগে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
এমএল/