পুতুলের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের তথ্য লুকালেন দুদক কর্মকর্তা


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:০১ পূর্বাহ্ন, ৫ই মার্চ ২০২৫


পুতুলের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের তথ্য লুকালেন দুদক কর্মকর্তা
দুর্নীতি দমন কমিশন

শেখ হাসিনার পতন পরবর্তী সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক নিয়মিতই বিভিন্ন দুর্নীতিবাজ সাবেক এমপি, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আইনি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় প্রতিদিনই এসব দুর্নীতিগ্রস্তদের সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিচ্ছেন আদালত। 


এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্রতিষ্ঠিত সূচনা ফাউন্ডেশনের ১৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। প্রকাশ্য আদালতে এ সম্পদ জব্দের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়র জজ মো. জাকির হোসেন গালিব। আদেশ হওয়ার পর সংবাদ প্রকাশের জন্য বিস্তারিত তথ্য চাইতে কয়েকজন সাংবাদিক ঢাকার আদালতে অবস্থিত দুদকের সাধারণ নিবন্ধন (জি.আর) শাখায় যান। এসময় সংস্থাটির আদালত পরিদর্শক আমির হোসেনের কাছে তথ্য চাইলে তিনি বিষয়টি লুকান। 


তিনি বলেন, "আমাদের কাছে তথ্য থাকলেও দিতে পারবোনা। কিছুদিন আগে ট্রেনিং থেকে এসেছি। সেখানে সাংবাদিকদের তথ্য না দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেন।" যদিও পরবর্তীতে পুতুলের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।


অভিযোগ রয়েছে, বিগত স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর আদালতে দুদকের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তারা আওয়ামী দুর্নীতিবাজদের কোনো তথ্য দিতে চাননা। ফলে এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সফল পদক্ষেপের সংবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশবাসী। তবে কি সরকারের সাফল্য গোপন করতেই দুদক জিআর শাখার কর্মকর্তারা তথ্য গোপন করছেন কিনা এমন প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। 


বিগত সরকারের আমলে যখন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের বা চার্জশিট দাখিল করত, তার তথ্য স্বাভাবিকভাবেই সকল সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হতো। তবে তাদের যত আপত্তি আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রীসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মামলা, সম্পদ জব্দ, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদির তথ্য দিতে।


এ বিষয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, দুদকের জিআর শাখার উচিত সাংবাদিকদের তথ্য দেয়া, যাতে দেশবাসী এসব দুর্নীতিবাজদের সম্পত্তির তথ্য জানতে পারে।


দুদকের আদালত পরিদর্শক আমির হোসেনের এমন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম ও কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের মুঠোফোন নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউই ফোনকল রিসিভ করেননি।