কুষ্টিয়ায় মিল মালিক সমিতির সভাপতির বাড়িতে গুলি
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯:২৮ অপরাহ্ন, ৯ই এপ্রিল ২০২৫

কুষ্টিয়া শহরে এক ব্যবসায়ির বাড়িতে দিনে দুপুরে গুলি করে পালিয়ে যায় দুজন দুর্বৃত্ত।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর পৌনে দুইটার দিকে শহরের গোশালা গলিতে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সেসময় ওই বাড়ির মালিক আব্দুর রশিদ বাড়ির বাইরে ছিলেন, তবে ঘটনার কিছু সময় পরই তিনি সেখানে উপস্থিত হন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল নারীসহ ৪ জনের
আব্দুর রশিদ কুষ্টিয়ার খাজানগরের বৃহত্তম চালের মোকাম রশিদ অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের মালিক। তিনি জানান, বুধবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকে এক মোটরসাইকেলে দুইজন হেলমেট পরিহিত ব্যক্তি এসে আমার বাড়ির সামনে থেকে দুই রাউন্ড গুলি করে, এতে বাড়ির তিন তালার কাছের গ্লাস ভেঙ্গে যায়, এবং বাড়িতে যারা উপস্থিত ছিল সবার মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়, বিষয়টি আমি জানার সাথে সাথেই প্রশাসনের সর্বস্তরেই জানিয়েছি।
কি কারনে এমন ঘটনা ঘটতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আইলচাড়া হাট নিয়ন্ত্রণ করি, আমার বড় ভাই চেয়ারম্যান, ভাতিজা জিহাদুজ্জামান জিকু এই হাটের জন্য টেন্ডার ড্রপ করেছে, টেন্ডারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা বলে তিনি জানান।
হাটের ইজারাদার জিহাদুজ্জামান জিকু মুঠোফোনের মাধ্যমে জানান, বর্তমানে আমি সন্ত্রাসীদের ভয়ে আত্মগোপনে আছি। আমাকে প্রাননাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমরা আইলচারার হাটটি ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকায় পেয়েছি। আমরা পাওয়ার আগে থেকে এই হাটটি ইজারা বাদেই নেওয়ার চেষ্টা করছিলো কুষ্টিয়া সদর থানা বিএনপির সদস্য সচিব বিপ্লব। তিনি টেন্ডার বাদেই হাটটি নিয়ে চালানোর জন্য বলছিলো। আমরা বলেছিলাম আমরা ব্যবসায়িক মানুষ আমরা সরকারকে রাজস্ব দিয়েই হাট চালাবো। এর জন্য আমাকে আর আমার চাচাকে এক সপ্তাহের ভিতরেই সন্ত্রাসীরা যেখানে পাবে সেখানেই মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলো। আর এই এক সপ্তাহের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
সপ্তাহখানেক আগে শীর্ষ সন্ত্রাসী স্বপন ঠাকুর আমার বাবাকে ফোন দিয়েছিলো। ফোনে বলেছিলো বিপ্লব ও মুন্নাফের সাথে আমাদের কথা হয়েছিলো। এটা আপনারা টেন্ডার না করলে আমরা ৫০ লাখ টাকায় হাটটি পেতাম এবং বিপ্লব ও মুন্নাফ আমাদের এক কোটি টাকা দিতো। আপনাদের কারনে আমার ১ কোটি টাকা লস হয়ে গেছে এখন আপনারা আমাদের এক কোটি টাকা দিবেন না হলে আপনি আপনার ভাই এবং আপনার ছেলে প্রানে মেরে ফেলবো। এক সপ্তাহের মধ্যে এই টাকা দিতে বলেছিলো। সপ্তাহ না পুজতেই আমাদের এই আতংক করেছে আমরা প্রশাসনের কাছে জোড়ালো দাবি জানাচ্ছি এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করার জন্য।
বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া সদর থানা বিএনপির সদস্য সচিব বিপ্লবের সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ব্যাক্তিগত ইমেজ নষ্ট করার জন্য আমার নামে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। আমি বিএনপির রাজনৈতি করি। আমার সাথে কোন সন্ত্রাসীর যোগাযোগ নেই। এই হাট নিয়ে আমাকেও অনেক সন্ত্রাসীরা ফোন করে হুমকি ধামকি দিয়েছে। বলেছে আমি যাতে সিডিউল না কিনি। আমার সাথে তো উনাদের এ ব্যাপারে কোন কথা হয়নি। তারপরেও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে এটা পরিকল্পিত এই সত্য একদিন সামনে আসবেই।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় জাল ভোট দেওয়ার সময় পৌর কমিশনার বাবু গ্রেফতার
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা ঘটনা স্থলে আছি এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি আমরা সিসি ফুটেজ এবং বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করছি, প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করব।
এসডি/