বিশ্ববাজারে ফের বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১০:৪৪ এএম, ১৩ই জুলাই ২০২৫


বিশ্ববাজারে ফের বাড়লো   জ্বালানি তেলের দাম
সংগৃহীত ছবি।

আন্তর্জাতিক বাজারে ফের বাড়তে শুরু করেছে অপরিশোধিত তেলের দাম। গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ মৌসুম, বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেলের ব্যবহার এবং সরবরাহ ঘাটতির আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে আবারও চাপ তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধারা স্বল্পমেয়াদে অব্যাহত থাকতে পারে।


শুক্রবার (১১ জুলাই) আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল প্রতি ব্যারেল ১.৭২ ডলার বা ২.৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০.৩৬ ডলার। একইদিনে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) প্রতি ব্যারেল ১.৮৮ ডলার বা ২.৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৬৮.৪৫ ডলার।


বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি বিশ্লেষক সংস্থা আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (IEA) জানিয়েছে, বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা যতটা অনুমান করা হয়েছিল, বাস্তবে তা আরও বেশি। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ ও বিদ্যুৎ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে পরিশোধনাগারগুলো ফুল-ক্যাপাসিটিতে চলছে, যা চাহিদাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।


এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে টানা ১১ সপ্তাহ তেল ও গ্যাস রিগের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। সর্বশেষ এমন অবস্থা দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালের জুলাইয়ে, যখন করোনা মহামারিতে জ্বালানির চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছিল।


তবে দীর্ঘমেয়াদে চিত্র ভিন্ন হতে পারে। আইইএ একদিকে সরবরাহ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়ালেও, অপরদিকে চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা কমিয়েছে, যা ভবিষ্যতে বাজারে উদ্বৃত্ত তৈরির ইঙ্গিত দিচ্ছে।


বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ওপেক প্লাস চাইলে দ্রুত তেলের সরবরাহ বাড়াতে পারে। এতে ভবিষ্যতে অতিরিক্ত সরবরাহের ঝুঁকি রয়েছে। তবে, আপাতত রাশিয়া, সৌদি আরবসহ জোটভুক্ত দেশগুলো চাহিদার চাপ সামাল দিতে স্বল্পমেয়াদে উৎপাদন বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।


রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নভাক জানিয়েছেন, চলতি বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অন্যদিকে সৌদি আরব আগস্টে চীনে ৫১ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করতে যাচ্ছে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।


তবে, দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে কিছুটা সংশয় রয়েছে। ওপেক প্লাস তাদের ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ল্ড অয়েল আউটলুক’ প্রতিবেদনে ২০২৬ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক তেলের চাহিদা কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে, বিশেষত চীনের অর্থনৈতিক গতির ধীরগতির কারণে।


রাজনৈতিক অস্থিরতাও তেলের দামে প্রভাব ফেলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া নিয়ে সোমবার ‘গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা’ দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া ইউরোপীয় কমিশন নতুন করে রাশিয়ার ওপর ভাসমান তেলমূল্য নির্ধারণসহ একটি নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ উত্থাপন করতে যাচ্ছে।


তেলের বাজারে স্বল্পমেয়াদে মূল্যবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।



এিডি/