সরকারি জমি দখলে কানুনগোর বিরুদ্ধে অভিযোগ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৪৯ অপরাহ্ন, ১৩ই জুলাই ২০২৫


সরকারি জমি দখলে কানুনগোর বিরুদ্ধে অভিযোগ
ফাইল ছবি।

ইসমাইল হোসেন: সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা ভূমি অফিসে চাঞ্চল্যকর এক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি একজন ব্যক্তির নামে নামজারি করে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন কানুনগো শামিম রেজা। অভিযোগ রয়েছে, ভূমি অফিসের একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের সহায়তায় এই অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে।


সূত্র জানায়, ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের জনস্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সিরাজগঞ্জ শহরের শিয়ালকোল এলাকায় ৭৩৬২ নম্বর দলিলের মাধ্যমে মিজানুর রহমান নামক এক ব্যক্তির কাছ থেকে .৩১ শতক জমি ক্রয় করে। পরে ওই জমি দখলে নিয়ে নামজারি সম্পন্ন করে এবং নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে আসছে সংস্থাটি। জমির একাংশে স্থাপনা নির্মাণ করে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল।


তবে দীর্ঘ ৪৫ বছর পর, ২০২৩ সালে মিজানুর রহমানের ছেলে ইকবাল ও তার পরিবার ওই জমির মালিকানা দাবি করে বসে। অভিযোগ রয়েছে, কানুনগো শামিম রেজা ও তার সিন্ডিকেটের সহায়তায় ইকবাল কৌশলে জমিটি নিজের নামে নামজারি করে নেন। এমনকি হালনাগাদ ভূমি উন্নয়ন করও পরিশোধ করা হয়, যাতে কাগজপত্র দেখে জমিটি সরকারি কিনা বোঝা না যায়।


শিয়ালকোল ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিল আফরোজ জানান, “সরকারি এই সম্পত্তি আমরা ১৯৭৯ সালেই কিনে নিয়েছিলাম। নিয়মিত খাজনা দিচ্ছি। কিন্তু ইকবালসহ কিছু ভূমিদস্যু এখন এই জমি দখলের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে তারা নিজেদের নামে নামজারি করিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।”


ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. হাছান আলী বলেন, “আমার পূর্ববর্তী কর্মকর্তা ইকবালের কাছ থেকে খাজনা আদায় করেছেন। খাজনা হালনাগাদ থাকায় উপর মহল থেকে নামজারির চাপ আসে। পরে জানা যায় এটি সরকারি জমি, তাই নামজারি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছি।”


অভিযোগের বিষয়ে কানুনগো শামিম রেজা বলেন, “সরকারি সম্পত্তি নামজারির ঘটনায় আমার দায় আছে। তবে কোনো অর্থ লেনদেনের অভিযোগ সঠিক নয়। কর্তৃপক্ষ যা ব্যবস্থা নেবে, মাথা পেতে নেব।”


সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা ভূমি অফিসার আফিফান নজমু বলেন, “নামজারির সঙ্গে জড়িত সবাইকেই তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে। জমিটি সরকারি কিনা তা যাচাইয়ে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে কমিশনার বরাবর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।”


এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ৪৫ বছর আগে বিক্রি হওয়া জমির মালিকানা এখন দাবি করাটা সন্দেহজনক এবং এটা ভূমি অফিসে চলমান দুর্নীতিরই প্রমাণ। তারা দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।


আরএক্স/