সরকারি চাকরিজীবীদের আন্দোলন করলে বাধ্যতামূলক অবসর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:২৭ অপরাহ্ন, ২৪শে জুলাই ২০২৫

সরকারি চাকরিজীবীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ বা সহকর্মীদের কর্মে বাধা দিলে বাধ্যতামূলক অবসর কিংবা বরখাস্তের বিধান রেখে জারি করা হয়েছে সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫।
বুধবার (২৩ জুলাই) আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীর স্বাক্ষরে এই অধ্যাদেশটি জারি করা হয়।
নতুন অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী যদি নিজে কর্মবিরতিতে যান বা অন্যকে কাজে বাধা দেন, তবে সেটি "সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অসদাচরণ" হিসেবে গণ্য হবে এবং এজন্য তাকে তিনটি দণ্ডের যেকোনো একটি দেওয়া যেতে পারে:
নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ,
বাধ্যতামূলক অবসর, অথবা
চাকরি থেকে বরখাস্ত।
নতুন ধারা ৩৭(ক): কী আছে?
ধারাটি বলছে, কোনো সরকারি কর্মচারী যদি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করেন, সরকারের আদেশ বা নির্দেশ বাস্তবায়নে বাধা দেন, অন্য কর্মচারীদের প্ররোচিত করেন, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া সমবেতভাবে কর্মবিরতি করেন।
অথবা অন্য কর্মচারীকে কাজ করতে বাধা দেন— তবে তাকে উপযুক্ত দণ্ড দেওয়া যাবে।
শুনানি ও আপিল প্রক্রিয়া: অভিযোগ প্রমাণের জন্য আগে অভিযোগ গঠন করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে ৭ (সাত) দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হবে। তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না।
তবে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করতে পারবেন, যা রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সংসদ বর্তমানে ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে পরিস্থিতি আশু ব্যবস্থা গ্রহণের উপযোগী বলে প্রতীয়মান হয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
যদিও অধ্যাদেশে ‘আন্দোলন’ শব্দটি সরাসরি উল্লেখ নেই, তবে আইনের ভাষা ও প্রেক্ষাপটের মাধ্যমে এটি যে মূলত কর্মবিরতি ও আন্দোলন প্রতিরোধের জন্যই প্রণীত, তা স্পষ্ট, বলে মত দিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র: বাসস