সবজি-মুরগি-মাছের দাম চড়া, স্বস্তি নেই চালের বাজারেও


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:৫৬ অপরাহ্ন, ২৫শে জুলাই ২০২৫


সবজি-মুরগি-মাছের দাম চড়া, স্বস্তি নেই চালের বাজারেও
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম অনেক বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। পাশাপাশি বাজারে মিনিকেট চালের দাম চড়া রয়েছে, সবজি ও মাছের দামও বাড়তি।


শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল ও মালিবাগ বাজারসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বাজার সরেজমিনে  ঘুরে এমনই চিত্র দেখা যায়।


বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঢাকায় বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। সপ্তাহ দুয়েক আগে এই মুরগির কেজি ছিল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। সে হিসাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ২০ টাকা ও সোনালি মুরগির কেজিতে ২০-৩০ টাকা দাম বেড়েছে।


আরও পড়ুন: চড়া মূল্যে কিনতে হচ্ছে সবজি, কাঁচা মরিচ ৩০০ পার


খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এ কারণে দাম বাড়তি। তবে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। বড় বাজারে এক ডজন ডিমের দাম এখন ১২০ টাকা; আর পাড়া-মহল্লায় তা ১২৫-১৩০ টাকা।


এদিকে গত দুই সপ্তাহে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে সবজির দাম বেড়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মৌসুমি বৃষ্টি শুরুর আগে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ কেনা যেত ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, বাজারে এখন দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচের সরবরাহ কিছুটা কম। এই সুযোগে সরবরাহ বেড়েছে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচের। এটিও মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ার একটি কারণ।


বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির দামও আগের তুলনায় বেশি। করলা, কাঁকরোল, বেগুন, বরবটিসহ অধিকাংশ সবজির কেজি এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকার আশপাশে। দেশি টমেটো এখন পাওয়া যায় না বললেই চলে। এ কারণে আমদানি করা টমেটোর দাম বেশি, প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। তবে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু প্রভৃতি পণ্য আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে।


মাস দেড়েক আগে বাজারে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছিল। এখনো সে দামেই বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে ডায়মন্ড, সাগর, মঞ্জুর প্রভৃতি ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৮০ টাকা ও মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


এদিকে বাজারে বেড়েছে মাছের রাজা ইলিশের দামও। বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০০-২৬০০ টাকায়; যা আগে ছিল ২২০০ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ২০০-৩০০ টাকার মতো। এছাড়া ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২২০০ টাকা ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০-৩২০০ টাকায়।


আরও পড়ুন: বেশির ভাগ সবজির দাম এখন ৬০-৮০ টাকার ওপরে


মাছ কিনতে আসা এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইলিশ তো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই চলে গেছে। কেজিতে অন্তত তিনশো টাকা বেড়েছে সপ্তাহ ব্যবধানে। অন্যান্য মাছের দামও চড়া।

 

বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় ইলিশের বাজার বাড়তি। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মাছের দামেও। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ইলিশ বিক্রেতা বলেন, সাগরে এবার ইলিশ কম ধরা পড়ছে। যা ধরা পড়েছ তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এতে বেড়ে গেছে দাম।

 

বাজারে শুধু ইলিশ নয়, অন্যান্য মাছের দামও ক্রেতাদের ভোগাচ্ছে। প্রতিকেজি বোয়াল ৭৫০-৯০০ টাকা, কোরাল ৮৫০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, চাষের রুই ৩৮০-৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩০, কৈ ২০০-২২০ এবং পাবদা ও শিং বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। আর চাষের ট্যাংরা প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, কাঁচকি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা ও মলা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


ডিমের বাজারে কিছু স্বস্তি বিরাজ করছে। প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়, আর প্রতি ডজন সাদা ডিমের জন্য গুনতে হচ্ছে ১১০ টাকা। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে ডজনে ৫-১০ টাকা বাড়তি দামে ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে।

 

অন্যদিকে গরু ও খাসির মাংসের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায়।


এমএল/