দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক, যেসব লক্ষণ দুশ্চিন্তার বিষয়


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮:৪১ অপরাহ্ন, ২৬শে জুলাই ২০২৫


দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক, যেসব লক্ষণ দুশ্চিন্তার বিষয়
ছবি: সংগৃহীত

মানব শরীরের একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক ও প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া হলো প্রস্রাব। এটি কেবল শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও বর্জ্য পদার্থ বের করার মাধ্যম নয়, বরং আমাদের কিডনির কার্যকারিতা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়াকে আমরা ‘স্বাভাবিক’ বলব?


স্বাভাবিক হার কী?


একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ সাধারণত দিনে ৬ থেকে ৮ বার প্রস্রাব করেন। তবে এটি বয়স, তরল গ্রহণের পরিমাণ, ওষুধ, আবহাওয়া, কফি বা চা খাওয়ার অভ্যাস এবং শারীরিক সক্রিয়তার ওপর নির্ভর করে ৪ থেকে ১০ বার পর্যন্ত হতে পারে এবং এটিও স্বাভাবিক হিসেবেই ধরা হয়।


আরও পড়ুন: সহজ যে ৭ পদ্ধতিতে যৌবনের শক্তি ধরে রাখা সম্ভব


কোন কোন বিষয়ে নির্ভর করে প্রস্রাবের পরিমাণ?


তরল গ্রহণের পরিমাণ


আপনি যদি দিনে বেশি পানি খান, তাহলে প্রস্রাবের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে। আবার কম পানি খেলেও প্রস্রাব কম হতে পারে, কিন্তু এটি সবসময় ভালো লক্ষণ নয়।


ক্যাফেইন ও ডাইরেটিকস


চা, কফি, সফট ড্রিংকস বা ডাইরেটিক ওষুধ গ্রহণ করলে কিডনিতে পানি ছাঁকনির হার বেড়ে যায়, ফলে বেশি প্রস্রাব হতে পারে।


আরও পড়ুন: যে ৬ খাবার ধীরে ধীরে লিভারের ভয়াবহ ক্ষতি করে


স্বাস্থ্যগত অবস্থা


ডায়াবেটিস: অনিয়ন্ত্রিত রক্তে শর্করার কারণে অতিরিক্ত প্রস্রাব হতে পারে।

ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI): ঘন ঘন প্রস্রাবের অনুভূতি হতে পারে, যদিও প্রকৃত প্রস্রাবের পরিমাণ কম।

প্রোস্টেট সমস্যা: পুরুষদের ক্ষেত্রে বারবার প্রস্রাবের তাগিদ বা ব্যথা হতে পারে।

গর্ভাবস্থা: জরায়ু বড় হওয়ায় মূত্রাশয়ের ওপর চাপ পড়ে, ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।


যখন চিন্তিত হওয়া উচিত


যদি আপনি লক্ষ্য করেন যে—


দিনে ১০ বারের বেশি প্রস্রাব করছেন, অথচ পানি বেশি খাননি,

রাতে ঘন ঘন ঘুম ভেঙে প্রস্রাব করতে হয়,

প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হচ্ছে,

প্রস্রাবে রঙ, গন্ধ বা ফেনা অস্বাভাবিক,

অথবা প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বা খুব কম হচ্ছে—

তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।


আরও পড়ুন: বর্ষায় পেটের সমস্যা কমাতে যে খাবারগুলো খেতে পারেন


সুস্থ প্রস্রাব অভ্যাস বজায় রাখার উপায়


প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন (সাধারণত ২-৩ লিটার)।

প্রস্রাব চেপে না রাখার অভ্যাস করুন।

ইউরিন ইনফেকশন প্রতিরোধে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।

ক্যাফেইন ও কৃত্রিম মিষ্টি সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করুন।

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে অবহেলা না করে পরীক্ষা করান।


দিনে কতবার প্রস্রাব হচ্ছে, সেটা আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সংকেত। হঠাৎ করে প্রস্রাবের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া – দুটোই কোনো অন্তর্নিহিত শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। তাই নিজের প্রস্রাবের অভ্যাস সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং কোনো অস্বাভাবিকতা বুঝলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


এমএল/