গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগে গাজীপুর প্রেসক্লাবের নির্বাচন স্থগিত


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, ২৮শে জুলাই ২০২৫


গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগে গাজীপুর প্রেসক্লাবের নির্বাচন স্থগিত
ছবি: প্রতিনিধি।

নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়ায় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠায় গাজীপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। গাজীপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক এস এম আনোয়ারুল করিম স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।


সোমবার (২৮ জুলাই) স্বাক্ষরিত চিঠিটি ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়, নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রবহির্ভূত কার্যক্রমের অভিযোগ তদন্তাধীন থাকায় নির্বাচন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখতে হবে।


এর আগে, গত ২২ জুলাই গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পাঠানো এক পত্রের ভিত্তিতে এই নির্দেশনা জারি করে সমাজসেবা অধিদপ্তর।


চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক (কার্যক্রম), গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, সমাজসেবা উপপরিচালক (নিবন্ধন), শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা এবং নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর।


প্রশাসক নিয়োগের দাবি সাংবাদিকদের

গাজীপুর প্রেসক্লাবে দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী আচরণ ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গত ১৭ জুলাই জেলা প্রশাসক, সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেন গাজীপুরের একটি অংশের সাংবাদিকরা।


পরবর্তীতে ২০ জুলাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে প্রেসক্লাবে প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের পেশাদার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।


মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা ও হেফাজতে ইসলাম গাজীপুর জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতি নাসির উদ্দিন খান।


বক্তারা অভিযোগ করেন, প্রেসক্লাবের বর্তমান কমিটি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে এবং ভিন্নমতের সাংবাদিকদের সদস্যপদ থেকে বঞ্চিত করেছে।


তাঁদের অভিযোগ, বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে সদস্য আহ্বানে অগঠনতান্ত্রিক শর্তারোপ করে। ৪৯ জন সাংবাদিক সদস্য ফরম সংগ্রহ ও ৪৪ জন আবেদন জমা দিলেও তাঁদের অধিকাংশকে অজুহাত দেখিয়ে সদস্যপদ দেওয়া হয়নি।


এছাড়া, সাংবাদিকদের দাবি, বর্তমান কমিটির অধিকাংশ সদস্য বিতর্কিত সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক এসপি হারুনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ফলে নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের ক্লাবে প্রবেশাধিকার নেই।


জানানো হয়, প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ আগামী তিন বছর নতুন কোনো সদস্য অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়ে প্রেসক্লাবের বাইরে থাকা সাংবাদিকদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।


মানববন্ধন শেষে সাংবাদিক প্রতিনিধিরা জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিনের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। জেলা প্রশাসক আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।


পরে জেলা প্রশাসক সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষকে প্রেসক্লাবে প্রশাসক নিয়োগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। এরই প্রেক্ষিতে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর।


তবে, বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি তা আমলে না নিয়ে নির্বাচন আয়োজনের পথে এগিয়ে যেতে থাকায় শেষমেশ নির্বাচন স্থগিত রাখার আদেশ জারি করা হলো।



এসডি/