তিস্তার পানি ফের বিপৎসীমার ওপরে, নদীপাড়ে বন্যা আতঙ্ক


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ৩রা আগস্ট ২০২৫


তিস্তার পানি ফের বিপৎসীমার ওপরে, নদীপাড়ে বন্যা আতঙ্ক
ফাইল ছবি।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদীপাড়বর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে বন্যার শঙ্কা। আতঙ্কে রয়েছেন নদীর তীরবর্তী হাজারো মানুষ।


রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।


পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ছিল ৫২.১৭ মিটার, যা বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচে। সকাল ৯টার দিকে পানি এসে দাঁড়ায় বিপৎসীমায় এবং দুপুরে তা বেড়ে যায় ৫ সেন্টিমিটার।


এর আগেও গত ২৯ জুলাই রাতে তিস্তার পানি একই মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করায় ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছিল।


টানা বৃষ্টিপাতে নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় নদীতীরবর্তী নীলফামারী ও লালমনিরহাটের বিস্তীর্ণ এলাকায় মানুষজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেক নিচু এলাকা ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি।


নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বখড়িবাড়ী গ্রামের কৃষক সোলেমান আলী বলেন, “গত কয়দিনে আমাদের সব আমনের চারা ডুবে গেছে। এখন আবার পানি বাড়ছে। প্রতিদিন পানি দেখে ঘুমাতে পারছি না।”


লালমনিরহাটের বাইশপুকুর চরের মর্জিনা বেগম বলেন, “প্রতি বছরই বন্যায় ক্ষতি হয়। এবারও সেই আশঙ্কা করছি। আমরা সাহায্য চাই না, চাই তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন।”


হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের বাসিন্দা শামসুল আলম বলেন, “সকালে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। এখন উজান থেকে পানি আসায় আমাদের বাড়িঘরের উঠানে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।”


আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের চন্ডিমারী ও গোবর্ধন এলাকার কিছু অংশও প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে বহু ধানক্ষেত, ফলে কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উৎকণ্ঠা।


সিন্দুর্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আরিফুল ইসলাম জানান, “নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি ওয়ার্ডে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দ্রুত সহায়তা প্রয়োজন।”


ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান, “পানির প্রবাহ বাড়ছে এবং তা নিয়মিত নজরে রাখা হচ্ছে।”


ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “পানি কিছুটা বেড়েছে ঠিকই, তবে এখনো বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”


লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, “উজানে ভারি বৃষ্টি এবং পানি আসার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। 


আরএক্স/