৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন: আজহারী


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:০৪ পিএম, ৫ই আগস্ট ২০২৫


৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন: আজহারী
ফাইল ছবি।

জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, ৩৬শে জুলাই বা ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। এ দিনটি স্মরণ করলেই স্মৃতিতে ভেসে ওঠে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান, যেদিন দীর্ঘ এক জুলুমের শাসনের ‘স্থগিত’ ঘটে।


মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।


স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, গত বছরের এই দিনটিতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ এক জুলুমের শাসন ‘স্থগিত’ হয়। এটি শুধুই একটি তারিখ নয়, এটি ইতিহাস বদলের প্রতীক।


অভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের টালমাটাল অর্থনৈতিক অবস্থাকে যেভাবে সামাল দেওয়া হয়েছে, তাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সত্যিকার অর্থেই প্রশংসার দাবিদার। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে রাখতে যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন তারা।


আজহারী লেখেন, ইউনূস সরকার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন সংস্কার। ভবিষ্যৎ-বাংলাদেশের জন্য এই সংস্কারটা ভীষণ জরুরি ছিল। তবে, গুরুত্বপূর্ণ কোনো খাত এই সংস্কার-প্রকল্প থেকে বাদ পড়ল কি-না, সেটিও খতিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি, বিতর্কিত এক বা একাধিক কমিশনের প্রতিবেদন পুনর্মূল্যায়ন ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। কারণ, একটি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও মূল্যবোধকে অগ্রাহ্য করে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যায় না। একই সাথে এ-বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা অপরিহার্য— প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে ভবিষ্যতে যেন কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। স্থগিত হওয়া জুলুমের শাসন আবারও যেন দেশের মানুষের ওপর চেপে বসার সুযোগ না পায়।


নতুন বাংলাদেশের মানুষ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরিচ্ছন্ন এবং প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতির চর্চা দেখতে চায়। কোন প্রকার হানাহানি, মারামারি বা বিভক্তি আর দেখতে চায় না। জাতিকে বিভক্ত করার রাজনীতিতে কারো জন্যই কল‍্যাণ নেই। দেশে এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অত‍্যন্ত জরুরি। একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেশকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।


তিনি লেখেন, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় ও স্বাধীনচেতা। দেশের সাধারণ জনগণ প্রত্যাশা রাখে, তারা স্বাধীনভাবে স্ব-স্ব আদর্শ ও বিশ্বাস নিয়ে নির্বিঘ্নে জীবন-যাপন করবেন। কোনো বৈদেশিক শক্তির আঞ্চলিক শাখায় পরিণত হওয়া তারা বরদাস্ত করবেন না কিছুতেই। এদেশের মানুষ আরও চায়, নিজ-নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী প্রত্যেকেই কর্মের সুযোগ পাবেন এবং নিজেদের অন্ন-বস্ত্রের জোগান দিতে পারবেন— কোনো ধরনের বৈষম্য ছাড়াই। পথে-ঘাটে এক মুহূর্তের জন্যও তারা অনিরাপদ অবস্থায় পড়তে চান না।


মহান আল্লাহ তাআলার কাছে মিনতি জানাই, তিনি যেন আমাদেরকে সঠিক পথে চলার শক্তি দেন। অভিভাবক হিসেবে আমাদেরকে উপহার দেন যোগ্য ও ন্যায়পরায়ণ শাসক। দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশে আমরা যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারি। সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি বিশ্ব দরবারে।


শেষে তিনি আরও লেখেন, ভেদাভেদ দূরে ঠেলে ঐক্যবদ্ধ হই— ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ ও জুলুমের স্থায়ী অবসান ঘটিয়ে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে আমরা সফল হবোই, ইনশাআল্লাহ।


এসডি/