ফের লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে বিপাকে ভোক্তারা


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:৩৯ পিএম, ১৫ই আগস্ট ২০২৫


ফের লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে বিপাকে ভোক্তারা
ছবি: সংগৃহীত

মাছ-মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের প্রধান ভরসা ছিল সবজি। কিন্তু ফের বেড়েই চলেছে সবজির দাম। বাসাবাড়িতে নিয়মিত খাওয়া হয় এমন অধিকাংশ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার ওপরে। সবজির দাম চড়া থাকায় ক্রেতাদের অস্বস্তি বেড়েছে; বিশেষ করে নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বেশি সংকটে।


শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর খিলক্ষেত, নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজারে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আরও অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। এছাড়া শাকসবজি, মাছ-মাংস, ডিমসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।


বাজারে বর্তমানে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ৮০ টাকার ওপরে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেগুনের দাম—১০০ টাকার নিচে কোনো বেগুন নেই, সর্বোচ্চ ২০০ টাকা কেজি। তিন সপ্তাহ আগেও এক কেজি বেগুন ৬০ থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে কেনা যেত। করলা, বরবটি, কাঁকরোলের দাম ১০০-১২০ টাকা; আমদানি করা টমেটো ১৬০-১৮০ টাকা; পটোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙা ৮০-১০০ টাকা; চিচিঙা, ধুন্দুল, কচুমুখি ৬০-৮০ টাকা; আর ৫০ টাকার নিচে কেবল মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, কাঁচকলা ইত্যাদি। প্রতিপিস লাউ ৭০-৮০ টাকা ও চালকুমড়া ৫০-৭০ টাকা। কাঁচা মরিচের কেজি ২০০-২৪০ টাকা।


ইলিশের দাম কিছুটা কমলেও অন্যান্য মাছের দাম চড়া। এক কেজি ওজনের ইলিশ ২২০০ টাকা, ৫০০-৬০০ গ্রাম ইলিশ ১৬০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ১৮০০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩০০০-৩২০০ টাকা। বোয়াল ৭৫০-৯০০, কোরাল ৮৫০, আইড় ৭০০-৮০০, চাষের রুই ৩৮০-৪৫০, কাতল ৪৫০, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩0, কৈ ২০০-২২০, পাবদা ও শিং ৪০০-৫০০, ট্যাংরা ৭৫০-৮০০, কাঁচকি ৬৫০-৭০০ এবং মলা ৫০০-৫৫০ টাকা।


মুরগির দামও বেড়েছে। ব্রয়লার কেজি ১৭০, সোনালি ৩২০-৩৪০, দেশি ৬০০-৭০০, সাদা লেয়ার ৩১০, লাল লেয়ার ৩২০ এবং জাতভেদে হাঁস প্রতিপিস ৫০০-৬০০ টাকা।


ডিমের দামও ঊর্ধ্বমুখী। লাল ডিম ডজনপ্রতি ১৪৫-১৫০, সাদা ডিম ১৩৫-১৪০ এবং হাঁসের ডিম ২৩০ টাকা। বিক্রেতাদের দাবি, চাহিদা বেড়েছে কিন্তু সরবরাহ বাড়েনি, তাই দাম বাড়ছে।


গরুর মাংস কেজি ৭৫০-৮০০, খাসির মাংস ১২০০ এবং ছাগলের মাংস ১১০০ টাকা।


পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরা বাজারে এখনো প্রভাব পড়েনি; কেজি ৮৫-৯০ টাকা। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে তদারকি বাড়াতে হবে।


বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, বর্তমানে ‘লিন সিজন’ বা কম উৎপাদনের মৌসুম চলছে। আবহাওয়ার কারণে জমিতে সবজি চাষ কম হওয়ায় সরবরাহও কমেছে, ফলে দাম বেড়েছে।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, অধিকাংশ সবজি রবি বা শীত মৌসুমে (অক্টোবর-মার্চ) উৎপাদিত হয়। বর্তমানে বৃষ্টির মৌসুম হওয়ায় চাষ কম হয়েছে। অক্টোবর থেকে নতুন সবজি আসতে শুরু করলে সরবরাহ বাড়বে ও দামও কমে আসবে।

এসএ/