মানুষ মারা গেলে কখন বুঝতে পারে সে মারা গেছে, যা বলে ইসলাম


Janobani

ইসলাম ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯:২৮ পিএম, ২৪শে আগস্ট ২০২৫


মানুষ মারা গেলে কখন বুঝতে পারে সে মারা গেছে, যা বলে ইসলাম
ছবি: সংগৃৃহীত

ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী মুমিনের জন্য শস্যক্ষেত্রের মতো। পরকালে সফল হতে হলে অবশ্যই এই শস্যক্ষেত্রে সফলকাম হতে হবে। এরপরই মিলবে কাঙ্ক্ষিত জান্নাতের স্বাদ। তবে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সফর শেষে প্রত্যেককে মৃত্যুর মধ্যদিয়ে চিরকালের আবাসস্থলে প্রবেশ করতে হবে। চিরসত্য মৃত্যুকে ঘিরে তাই জল্পনা-কল্পনার যেন কোনো শেষ নেই।


প্রশ্ন আসে, মানুষ মারা গেলে কখন বুঝতে পারে সে মারা গেছে? ইসলামের আলোকে এই প্রশ্নের উত্তর অত্যন্ত স্পষ্ট: মৃত্যুর আগ মুহূর্তে একজন মানুষ টের পেয়ে যায় যে তার  গন্তব্য কোথায় হতে যাচ্ছে। কোরআন, সহিহ হাদিস ও প্রখ্যাত ইমামদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে এ বিষয়ে আমরা আরও ধারণা পাই।


মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, অবশেষে যখন তাদের কারও মৃত্যু আসে, সে বলে, হে আমার রব! আমাকে আবার ফেরত পাঠান, যাতে আমি ভালো কাজ করতে পারি। (সুরা মুমিনুন: ৯৯–১০০)


আরও পড়ুন: ৬ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হবে


এ আয়াতে স্পষ্ট, মৃত ব্যক্তি জানতে পারে যে সে মারা গেছে এবং অনুতপ্ত হয়ে আমল করার জন্য দুনিয়াতে পুনরায় ফিরতে চায়।


বারা ইবনে আজেব (রা.) বর্ণিত বিখ্যাত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যখন একজন মুমিন মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছায়, তখন আসমান থেকে সুন্দর ও উজ্জ্বল চেহারার ফেরেশতারা আসেন। ফেরেশতারা জান্নাতের সুগন্ধি ও কাফন নিয়ে আসেন। মালাকুল মাওত বলেন- ‘হে শান্ত আত্মা! আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টির দিকে বেরিয়ে এসো।’ আত্মা তার শরীর থেকে পানির ফোঁটার মতো সহজে বেরিয়ে যায়। আর বদকারের প্রাণ নেন আজাবের ফেরেশতারা। তারা কালো চেহারা নিয়ে আসেন। তারা বলেন- ‘হে নাপাক আত্মা! আল্লাহর গজব ও ক্রোধের দিকে বের হয়ে আয়।’ আত্মা তখন কষ্টসহকারে ছটফট করে বের হয়। (মুসনাদে আহমদ: ১৮৫৫৭) এই হাদিস প্রমাণ করে, ভালো খারাপ সবাই তার মৃত্যুর অবস্থা বুঝতে পারে।


মৃতব্যক্তি সবকিছু শুনতে পায়


রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যখন মানুষকে কবরস্থ করা হয় এবং সেখান থেকে মানুষ সরে যায়, তখন সে তাদের পদচাপ শুনতে পায়।’ (বুখারি: ১৩৩৮; মুসলিম: ২৮৭০)


আরও পড়ুন: হাশরের ময়দানে প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা, কি বলে ইসলাম?


এটি প্রমাণ করে, মৃত ব্যক্তি তার দাফনের সময় আশপাশের জগত সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং বুঝতে পারে যে সে মারা গেছে।


ইবনে তাইমিয়াহ বলেন, ‘মৃত ব্যক্তি তার দাফন ও পরবর্তী অবস্থা বুঝতে পারে।’ (মাজমুউল ফতোয়া: ২৪/৩৬২)


কবরে জান্নাতি ও জাহান্নামিদের অবস্থা


জান্নাতিদের কবর ৭০ গজ প্রশস্ত হয়ে যাবে। আলোর ব্যবস্থা করা হবে। তাকে জান্নাতের বিছানা দেওয়া হবে, জান্নাতের পোশাক পরানো হবে। তাকে এমন শান্তির ঘুম পাড়ানো হবে কেয়ামতের আগে তার ঘুম ভাঙবে না। তার দিকে জান্নাতের স্নিগ্ধকর হাওয়া ও সুগন্ধি বইতে থাকবে। ওই দরজা তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করা হবে। আর বদকারকে মাটির চাপসহ কঠিন শাস্তি পেতে হবে। এক অন্ধ ও বধির ফেরেশতা এসে হাতুড়ির আঘাত করতে থাকবে। তখন সে বিকট শব্দে চিৎকার করবে। আঘাতের ফলে সে মাটিতে মিশে যায়। অতঃপর (শাস্তি অব্যাহত রাখার জন্য) পুনরায় তাতে রুহ ফেরত দেয়া হয়। (সুনানে তিরমিজি: ১০৭১; সুনানে আবু দাউদ: ৪৭৫৩)


এমএল/