যথাযথ মর্যাদায় মশুরীখোলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:৩৭ পিএম, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫


যথাযথ মর্যাদায় মশুরীখোলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত
ছবি: প্রতিনিধি

হাফিজুর রহমান: যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হচ্ছে। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পবিত্র মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি ওফাত লাভ করেন।


পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীর নারিন্দা মশুরীখোলা দরবার শরীফের উদ্যোগে ১৪৫৫ তম পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আয়োজন করা হয়। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে  জশনে জুলুস, বিকেলে নাতে রাসুল, সন্ধা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে।


 মশুরীখোলা দরবার শরীফের বর্তমান গদ্দিনেশীন পীর সাহেব হাফেজ মাওলানা মুফতি শাহ মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান (মা:জি:আ:) সভাপতিত্বে ত্রয়োদশ শতাব্দির মহান মুজাদ্দিদ,  হজরত ক্বেবলা শাহ্ আহসানুল্লাহ রহ: এর সুযোগ্য নাতি হযরতুল আল্লামা শাহ মুহাম্মদ আহছানুজ্জামান রহমাতুল্লাহি আলাইহির চেহলাম উপলক্ষেও দোয়া-মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।


মশুরীখোলা দরবার শরীফে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অব্দি মানুষের ঢল নামে। তবে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অংশ নেয় কয়েক হাজার মুসল্লি ও ভক্তবৃন্দ। জানা যায় এখানে মানুষ আসে শান্তির খোঁজে, আল্লাহ ও রাসূলকে পাওয়ার উদ্দেশ্যে, ইহকাল ও পরকালের মুক্তির আশায়।


আয়োজিত ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অনুষ্ঠানে ‎সভাপতির বক্তব্যে মশুরীখোলা দরবার শরীফের বর্তমান গদ্দিনেশীন পীর সাহেব হাফেজ মাওলানা মুফতি শাহ মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান (মা:জি:আ:) বলেন রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুপম জীবনাদর্শ, সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ আজকের এই দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে। ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ বিশ্ববাসীর জন্য উৎকৃষ্টতম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় এবং এর মধ্যেই মুসলমানদের জন্য অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে। কুরআনের ভাষা প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শকে বলা হয়েছে, উসওয়াতুন হাসানাহ তথা সর্বোত্তম জীবনাদর্শ। তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য যে অনিন্দ্য সুন্দর অনুসরণীয় শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন, তা প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষের জন্য মুক্তির দিশারি হিসেবে পথ দেখাবে। প্রিয় নবিজি হযরত মুহাম্মদ (সা.) দুনিয়ায় এসেছিলেন 'সিরাজাম মুনিরা' অর্থাৎ আলোকোজ্জ্বল প্রদীপরূপে।

 

দারুল উলুম আহসানিয়া কামিল মাদরাসার মুদাররিস মাওলানা মুহাম্মদ নিয়ামুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর আতাউর রহমান মিয়াজী, বাংলাদেশ জামিয়াতুল মোদাররেসীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ সাব্বির আহমেদ মোমতাজী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ডক্টর সৈয়দ শাহ এমরান, হযরত শাহ আহসানুল্লাহ (রহ.) কমপ্লেক্সের সভাপতি শাহ মুহাম্মদ মোহসেনুজ্জামান, বেতাগী আস্তানা শরীফের পীর সাহেব আল্লামা গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, দারুণ উলুম আহসানিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মুফতি আবু জাফর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, উপাধ্যক্ষ আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা আবুল বাশার, সেন্টার ফর ইসলামিক হেরিটেজের উপদেষ্টা এড. হেলাল উদ্দিন, জাতীয় হিজরি নববর্ষ উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক ইমরান হুসাইন তুষার, হযরত কেবলা (রহ.)'র খোলাফায়ে কেরামের দরবারের গদ্দিনেশীনগণ, হযরত শাহ আহসানুল্লাহ (র.) কমপ্লেক্সের অধিভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, মশুরীখোলা আঞ্জুমানে আহসানিয়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ।


‎আল্লামা শাহ মুহাম্মদ আহছানুজ্জামান রহমাতুল্লাহি আলাইহির চেহলাম মাহফিলের শুরুতেই ইমরান হুসাইন তুষারের সংকলনে ও ডক্টর সৈয়দ শাহ এমরান সাহেবের সম্পাদনায় কর্মমুখর কিংবদন্তী আল্লামা শাহ মুহাম্মদ আহছানুজ্জামান রহমাতুল্লাহি আলাইহি সংক্ষিপ্ত স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয় এবং রাতে ‎দেশ জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে মুনাজাতের মধ্যদিয়ে মাহফিল শেষ হয়।


আরএক্স/