কুড়িগ্রামে চা চাষের সম্ভাবনা!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


কুড়িগ্রামে চা চাষের সম্ভাবনা!

কুড়িগ্রামে চা চাষ হবে এ ধরণের চিন্তাভাবনা তেমন কারও ছিলনা। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের মেধা প্রসূত একটি ধারণা থেকে এ জেলায় চা চাষ নিয়ে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি লালমনিরহাট জেলায় কর্মরত বাংলাদেশ চা বোর্ডের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকে কুড়িগ্রামে চা চাষের বাস্তব প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলার জন্য জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। উক্ত কর্মকর্তা কুড়িগ্রামের আবহাওয়া ও মাটিতে চা চাষ হবে মর্মে বিভিন্ন তথ্য ও যুক্তি তুলে ধরেন। প্রাথমিকভাবে রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কিছু উচু জমিতে সাধারণত: যে সব জমিতে ধান বা দানাশস্যের আবাদ হয় না সেকল জমিতে চা চাষ করা হবে। ছিনাইয়ের কৃষক সমাজও বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে। আশা করা হচ্ছে কুড়িগ্রামে চা উৎপাদন পঞ্চগড়ের মতোই হবে। চা উৎপাদনে এগিয়ে গেলে কুড়িগ্রামের অর্থনীতি হবে আরও সমৃদ্ধ, কৃষি হবে উন্নত ও বাণিজ্যিক এবং কৃষক হয়ে ওঠবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের  কৃষকের মতো স্বচ্ছল। চা উৎপাদনের মাধ্যমে কুড়িগ্রামের কৃষি দেশের অন্যান্য বড় কৃষি ফার্মগুলোর সাথে লিংকেজ ঘটিয়ে আঞ্চলিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার সৃষি করতে পারবে।

একসময় দেশের অন্যতম দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চল ছিল পঞ্চগড়। এক–দেড় একর জমি থেকে দুবেলা অন্নসংস্থান দুষ্কর ছিল প্রান্তিক চাষিদের জন্য। সে চাষি এখন তাঁর জমিতে ছোট চা–বাগানের মালিক। পাতা বিক্রির আয় থেকে ইট–সিমেন্টের ঘর উঠেছে, মোটরসাইকেল কিনেছেন অনেকেই। খেতমজুরদের কর্মের সুযোগ ও আয় বেড়েছে। এ সাফল্যের পিতৃত্ব দাবি করতে অনেকেই পছন্দ করেন, তবে সত্য হচ্ছে আর্থসামাজিক এ বিপুল পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে মোশাররফ হোসেন নামের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার উদ্যোগে।

১৮৪৩ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে প্রথম চা তৈরি এবং পান করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে প্রথম চা চাষ শুরু হয় ১৮৫৭ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানে।বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় পঞ্চগড় জেলায় ১৯৯৬ সালে প্রথম চা চাষের বিষয়ে গবেষণা শুরু হয়। এরপর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষ শুরু হয় ২০০০ সাল থেকে।জানা গেছে, ২০০৭ সালে হাতীবান্ধায় বাণিজ্যিকভাবে ১ একর সমতল ভূমিতে ব্যক্তি উদ্যোগে চা চাষ শুরু করেন শাহানারা বেগম সোমা ও ফেরদৌস আলম দম্পতি। 

কুড়িগ্রামবাসি  বিশ্বাস যে চা চাষে জেলা প্রশাসকের এ প্রচেষ্টা সার্থক হবে, কুড়িগ্রামের কৃষি চা চাষে আরও অনেকদুর এগিয়ে যাবে। পঞ্চগড়ে চা চাষের পথিকৃত হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেনের নাম ,লালমনিরহাটে শাহানারা বেগম সোমা ও ফেরদৌস আলম দম্পতি নাম যেমন স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে,  তেমনি চা চাষে সফলতা আসলে কুড়িগ্রামের চা চাষের পথিকৃত হিসেবে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে  এ অঞ্চলের মানুষ স্মরণ করবে।

এসএ/