মিনহাজ নদীর স্লুইচ গেট দিয়ে লবণ পানি উত্তোলন, কৃষির ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


মিনহাজ নদীর স্লুইচ গেট দিয়ে লবণ পানি উত্তোলন, কৃষির ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা

প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা উপেক্ষা করে খুলনার পাইকগাছার বহুল আলোচিত মিনহাজ বদ্ধ নদীর স্লুইচ গেট দিয়ে লবণ পানি উত্তোলন করা হয়েছে বলে ইজারাদারসহ এলাকার কতিপয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।  এভাবে লবণ পানি উত্তোলন অব্যাহত থাকলে কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। ইউপি চেয়ারম্যান ও থানাপুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। 

প্রাপ্য সূত্র অনুযায়ী উপজেলার গড়ইখালী, লস্কর ও চাঁদখালী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মিনহাজ বদ্ধ নদী। ২৫২ একর আয়তনের নদী দিয়ে একদিকে যেমন এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে তেমনি বদ্ধ জলাশয়ের মিষ্টি পানি দিয়ে নদীর ধারের জমিতে এলাকার কৃষকরা বোরো ধান, তরমুজ ও বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করে থাকে। 

এদিকে চলতি মৌসুমে লবণ পানি উত্তোলন না করার জন্য একদিকে যেমন স্থানীয় সংসদ সদস্যের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে, তেমনি উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে একটি মহল স্লুইচ গেট দিয়ে মিনহাজ নদীতে লবণ পানি উত্তোলন করার জন্য জোর চেষ্টা চালায় । যার ফলে গত ১৬ এপ্রিল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এর মধ্যে হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে বিধান, প্রসেন, বিলাস ও সাহবাজসহ এলাকার কতিপয় ব্যক্তিরা গেটের পাট তুলে বদ্ধ নদীর ভিতরে লবণ পানি উত্তোলন করে। এসময় বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউএনও ও ওসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। খবর পেয়ে ওই রাতেই থানাপুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও  পানি উত্তোলন করা বন্ধ হয়নি। পরের দিন শুক্রবার সকালে থানার ওসির সাথে কথা বলে এলাকাবাসীর উপস্থিতে গেটের পাট বন্ধ করে দেন ইউপি চেয়ারম্যান কে.এম আরিফুজ্জামান তুহিন। নদীর ধারে জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে কৃষি ফসল থাকায় লবণ পানি উত্তোলন অব্যাহত থাকলে কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্খা করছেন এলাকাবাসী। 

কানাখালী গ্রামের কৃষক নিমাই বাছাড় জানান বর্তমানে হাজার হাজার বিঘা জমিতে তরমুজসহ অন্যান্য কৃষি ফসল রয়েছে এখন লবণ পানি তুললে প্রচুর ক্ষতি হবে। কমল চন্দ্র মন্ডল জানান এক বিঘা জমির ফসল উৎপাদন করতে প্রচুর খরচ হয়। গেট দিয়ে লবণ পানি উঠাইলে আমাদের চরম ক্ষতি হবে। 

গইড়খালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম কেরু জানান আমি সবসময় লবণ পানির বিপক্ষে রয়েছি। বর্তমানে লাখ টাকায় বিঘা প্রতি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। এসময়ে লবণ পানি উঠাইলে কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। অতএব কোনো ভাবেই মিনহাজ গেট দিয়ে লবণ পানি উঠানো যাবে না। 

লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কে.এম আরিফুজ্জামান তুহিন জানান ইতোমধ্যে মিনহাজ নদীর গেটের সামনে খনন করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি। খুব দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। এরমধ্যে হঠাৎ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জানতে পারি কয়েকজন ব্যক্তি স্লুইচ গেটের পাট তুলে জোয়ার দিচ্ছে। বিষয়টি আমি সাথে সাথে ওসিসহ সবাইকে অবহিত করি। এরপর সকালে ওসির সাথে আলাপ করে আমি নিজে গিয়ে গেটের পাট বন্ধ করে দেই। 

কৃষি ফসল রক্ষার জন্য চলতি মৌসুমে মিনহাজ স্লুইচ গেট দিয়ে লবণ পানি উত্তোলন বন্ধ রাখার জোর দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী। 

এসএ/