সব স্থাপনায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


সব স্থাপনায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

যে কোনো ভবন নির্মাণের আগে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (২৪ এপ্রিল) দেশে নতুন ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তাগিদ দেন তিনি। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সরকার প্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি স্থাপনায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেভাবেই বিল্ডিং স্থাপনা তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে মাঝেমধ্যেই অগ্নিনির্বাপণের মহড়া করতে হবে, যাতে সবাই সচেতন থাকতে পারে।’

এ সময় পর্যায়ক্রমে দেশের প্রত্যেকটি উপজেলায় ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা হবে বলেও জানান সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্র গঠনের পরই দুর্যোগ মোকাবিলায় রেডক্রস তৈরি করেছিলেন। যেখানে ৪৫ হাজার স্বেচ্চাসেবীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হতো। রেডক্রসকে পরে রেড ক্রিসেন্ট নাম দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু ফায়ার স্টেশন নির্মাণ এবং ফায়ার ফাইটাররা যাতে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন সেই উদ্যোগটা নিয়েছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারেই ছিল মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা প্রজেক্ট পরিকল্পনা করবেন তাদের অবশ্যই ফায়ার সার্ভিসের সুবিধার কথাটা মাথায় রাখতে হবে। তাদের গাড়ি যাওয়ার মতো রাস্তা রাখতে হবে। আশপাশের খাল-বিল, জলাধার রাখাটাও জরুরি। জলাধার বন্ধ করে উন্নয়ন প্রকল্প করা যাবে না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদিও করোনা ভাইরাসের জন্য সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। তার ওপর ইউক্রেন ও রাশিয়ার যে যুদ্ধ, সেই যুদ্ধ এর ওপর আরো বেশি প্রভাব ফেলছে। তারপরও আমি বলবো অনেক উন্নত দেশে এখন খাদ্যের জন্য হাহাকার। ইনফ্লেশন রেট কোথাও ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে। অনেক ইউরোপিয়ান দেশে ৭, ৮, ৯ শতাংশ ইনফ্লেশন (মূল্যস্ফীতি) রেট। তারপরও আমরা কিন্তু আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে।’

দেশের মানুষকে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সেই সঙ্গে দেশের মানুষকেও বলবো, এই যুদ্ধের কারণে আপনারা জানেন যে বিদেশ থেকে যে সব জিনিস আমরা আমদানি করি সেগুলো আনা খুব কষ্টকর হয়ে গেছে, পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক দেশ তাদের উৎপাদিত পণ্য আর রপ্তানি করছে না বা তারাও বিপদে আছে। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশে- আমাদের যে মাটি, মানুষ আছে এটা ব্যবহার করে আমাদের নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। যেখানে যার যতটুকু আছে তা আবাদ করবেন। নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস নিজেরা উৎপাদন করে নিজেরা ব্যবহার করার ব্যবস্থা নিতে হবে। যেন আমাদের কারো মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে না হয়। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের সুরক্ষার জন্য, মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য, মানুষের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেই কাজের সুফলটা মানুষ যাতে পেতে পারে সেটাই আমরা চাই।’

এর আগে দেশে নতুন করে ৪০টি ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। এ নিয়ে দেশে মোট ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৯৬ টি।

নতুন ৪০টি ফায়ার স্টেশন হলো- টাঙ্গাইলের ঘাটাইল ফায়ার স্টেশন, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, দৌলতপুর ও সাটুরিয়া ফায়ার স্টেশন, গাজীপুরের কাপাসিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর (পুনর্নির্মাণ) ও সিরাজদিখান, মাগুরা সদর (পুনর্নির্মাণ), কিশোরগঞ্জের নিকলী স্থল কাম-নদী, ঢাকার কল্যাণপুর, জামালপুর সদর ও সরিষাবাড়ি (পুনর্নির্মাণ), যশোর সদর ও ঝিকরগাছা (পুনর্নির্মাণ), যশোর সেনানিবাস, যশোরের চৌগাছা ও কেশবপুর, বাগেরহাটের মোল্লাহাট, ফরিদপুর সদর (পুনর্নির্মাণ), চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, খাগড়াছড়ির পানছড়ি, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, কিশোরগঞ্জের ইটনা, অষ্টগ্রাম, হোসেনপুর, মিঠামইন ও পাকুন্দিয়া, মেহেরপুরের মুজিবনগর, রাজবাড়ীর কালুখালী, সাতক্ষীরার দেবহাটা, নোয়াখালীর কবিরহাট, বিবাড়ীয়ার বিজয়নগর, বান্দরবানের থানচি ও রামু, খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, নেত্রকোনার পূর্বধলা, ময়মনসিংহের গৌরীপুর এবং মাদারীপুরের কালকিনি ফায়ার স্টেশন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন ও ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইনসহ অন্য কর্মকর্তারা।

ওআ/