বিদেশের কাছে কান্নাকাটি না করে আমার কাছে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি সেই সব শ্রমিক নেতাদের বলব যে আপনারা বিদেশের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি না করে আপনাদের যদি সমস্যা থাকে আমার কাছে আসবেন। আমি শুনব। মালিকদের কাছ থেকে যদি কিছু আদায় করতে হয় তাহলে আমি আদায় করে দেব। আমিই পারব। এটা আমি বলতে পারি।
রবিবার (৮ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান মে দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যে শ্রমিকদের জন্য এত কাজ করেছি, তারপরেও আমরা দেখি যে আমাদের দেশে কিছু কিছু শ্রমিক নেতা আছেন, তারা কোনো বিদেশি বা সাদা চামড়া দেখলেই তাদের কাছে নালিশ করতে খুব পছন্দ করেন। আমি জানি না এই মানসিক দৈন্যতাটা কেন? এর সঙ্গে কি অন্য কোনো স্বার্থ জড়িত আছে? কোন দেনা পাওনার ব্যবস্থা আছে? সেটা আমি জানি না।’
নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধানের সুযোগ আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো সমস্যা হলে, অন্তত আওয়ামী লীগ সরকার যতক্ষণ ক্ষমতায় আছে, অন্তত আমি যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি, এই নিশ্চয়তা দিতে পারি যে কোনো সমস্যা আমরা সমাধান করতে পারি নিজেরা। আর এটা আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দেশে মালিক এবং শ্রমিক তারা নিজেরা বসে আলোচনা করে সমস্যাগুলো সমাধান করবে। আমরা নিজের দেশের বিরুদ্ধে বা নিজের দেশের সম্পর্কে অন্যের কাছে কেন কাঁদতে যাব, বলতে যাব। আমরা তো এটা চাই না।’
বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প, যে সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প একসময় সম্পূর্ণ বিদেশি অনুদানে বা বিদেশি সহযোগিতায় নির্ভরশীল ছিল আজকে আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৯০ ভাগ আমরা নিজেদের অর্থায়নে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে পদ্মা সেতু। আমরা নিজেদের অর্থায়নে সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের টাকায় এই পদ্মা সেতু আমরা নির্মাণ করেছি।’
’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা আমরা মোকাবিলা করেছি, পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা আমরা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমরা পারি করতে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, কেউ দাবায় রাখতে পারবা না। বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। ২১ বছর অন্ধকারে ছিলাম। আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত অন্ধকারে ছিলাম। কিন্তু ২০০৯ থেকে যে আলোর পথে যাত্রা শুরু হয়েছে, এটা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের সব শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষ— তাদের কল্যাণ হোক সেই কামনা করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শ্রমজীবী মানুষের সুরক্ষা এবং তাদের কল্যাণের জন্য যেসব আইন, নীতিমালা, বিধিমালা বা সুরক্ষা নীতিমালা— সেগুলো কিন্তু আমরা সব করে যাচ্ছি। কারখানা সুরক্ষার জন্য আমরা কিন্তু শিল্প পুলিশও গঠন করে দিয়েছি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমি মনে করি সারা পৃথিবীতে ১০টা গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি আছে। তার মধ্যে ৭টা কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে। সেটা করার জন্য যা যা দরকার ছিল— ট্যাক্স কমিয়ে দিয়ে, কোনোটা সম্পূর্ণ করমুক্ত শুল্কমুক্ত করে দিয়েই কিন্তু আমরা সব প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের সুযোগটা মালিকদের জন্য করে দিয়েছিলাম। আমাদের শ্রমিকরা যেন সুন্দরভাবে-নিরাপদভাবে কাজ করতে পারে সে ব্যবস্থাটাও আমরা নিয়েছি।’
ওআ/