জয়দেবপুর স্টেশনে টিকিট চেকিংয়ের নামে একী হচ্ছে?


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


জয়দেবপুর স্টেশনে টিকিট চেকিংয়ের নামে একী হচ্ছে?

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেল জংশন স্টেশনে দায়িত্বরত সব বিভাগের কর্মচারী-কর্মকর্তারা বিনা টিকিটে আসা যাত্রীদের চেকিংয়ের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তাই জয়দেবপুর রেল স্টেশনে অতি উৎসাহী হয়ে চেকিংয়ের কাজটাই করছেন বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

উত্তরবঙ্গসহ ময়মনসিংহ জামালপুরের প্রায় ৭২টি যাত্রীবাহী ট্রেন থামে জয়দেবপুর জংশনে। ট্রেন থামলেই তাদের দেখা যায়, গলায় ঝুলানো রেলওয়ে লেখা ফিতা আর পদ-সম্বলিত কার্ড থাকে পকেটে।

রবিবার (৮ মে) সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, জয়দেবপুর রেলস্টেশনে কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে সাদা কোট পরা পাঁচ/ছয় জন লোক। তাদের কাছাকাছি আরও জনসাতেক খাকি পোশাকের নিরাপত্তাকর্মী। রেলস্টেশনে কোট পরা লোকগুলো হলো টিকেট কালেক্টর (টিসি) এবং টিটিই। যাদের দায়িত্ব ট্রেনে আসা যাত্রীদের টিকেট কালেক্ট করা। কিন্তু এ টিকেট কালেক্ট করা নিয়েই চলছে জয়দেবপুর রেলস্টেশনে ঘটছে প্রতারণা ও দুর্নীতি। 

রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশে টিকেট কালেক্টররা ও নিরাপত্তাকর্মী রাজু, আশরাফুল, মফিজুর সহ নেইম প্লেট বিহীন আরও কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী মিলে টিকেটবিহীন যাত্রীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আদায় করছে দ্বিগুনের চেয়ে বেশী ভাড়ার টাকা। দু’একজনকে চড় থাপ্পর দিয়ে মাটিতে বসিয়ে রাখে। আবার অনেক যাত্রীকে টিসি রুমে নিয়েও আদায় করছে দ্বিগুনের চেয়ে বেশী ভাড়ার টাকা। অসহায় যাত্রীরা বিপাকে পড়ে তা মেনে নিচ্ছেন।

রশিদ ছাড়া টাকা আদায় সম্পূর্ণ বেআইনি। কিন্তু রশিদ চাইতেই জেলের ভয় দেখানো হয়। তারপর দু’একজন নিরাপত্তাকর্মী গেট পার করে দেয়। এসময় পরিচয় পেয়ে টিসি ও নিরাপত্তাকর্মীরা এক সাংবাদিককে লাঞ্চিত করে এবং পরিচয়পত্র নিয়ে যায়। পরে তা ফেরত দেয়। দেখা যায় টিকেট কালেক্টর ও নিরাপত্তাকর্মীর মধ্যে টাকা ভাগাভাগির দৃশ্য। কিন্তু যে টাকা সরকারের কোষাগারে যাওয়ার কথা, তা টিসি নিরাপত্তাকর্মীরা লুটেপুটে খাচ্ছে। টাকা আদায়ের রশিদ ব্যতিরেকে টাকা আদায় করে টিকিট কালেক্টর ও নিরাপত্তাকর্মীর পকেট গরম হচ্ছে।

অন্যদিকে ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও সরকারের। আবার কিছু যাত্রীকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করে রশিদও দিচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায়, নিরাপত্তাকর্মীরা বীরদর্পে টিকেট সংগ্রহ করছে, যা তাদের করার কথা নয়। আর এসবই দিনের বেলার চিত্র, রাতের চিত্র তো আরও ভয়াবহ। সরকারি কর্মচারীরা সরকারকে ফাঁকি দিচ্ছে, লুটেপুটে খাচ্ছে সরকারি আয়।

এসএ/