ড. ওয়াজেদ নিরহংকার প্রচারবিমুখ অনুকরণীয় প্রাণের দৃষ্টান্ত: তথ্যমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ড. ওয়াজেদ নিরহংকার প্রচারবিমুখ অনুকরণীয় প্রাণের দৃষ্টান্ত: তথ্যমন্ত্রী

বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী মরহুম ড. ওয়াজেদ মিয়াকে নিরহংকার, প্রচারবিমুখ, অনুকরণীয় প্রাণের দৃষ্টান্ত বলে বর্ণনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। 

সোমবার (৯ মে) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জোহর নামাজের পর ড. ওয়াজেদ মিয়ার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ-মাহফিল ও দোয়ায় তিনি এই কথা বলেন। 

ড. ওয়াজেদ মিয়ার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, যেহেতু আমি আওয়ামী লীগ সভাপতির বিশেষ সহকারী হিসেবে বেশ কয়েক বছর কাজ করেছি, সেজন্য তাকে নিয়ে আমারও কিছু স্মৃতি আছে। তিনি একজন নিভৃতচারী, নিরহংকার, মিতভাষী মানুষ ছিলেন, সবাইকে আপন করে নিতেন। তিনি যে জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রীর স্বামী সেটি অনেকেই জানতো না। নিজগুণে, নিজ নামেই পরিচিত এই মানুষটি পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন, একজন গবেষক ছিলেন, তার গবেষণালব্ধ বই ভারতে পাঠ্য বই হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ড. হাছান বলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ পরিবারের সদস্যরা জঘন্য হত্যাকান্ডে নিহত হওয়ার পর দু:সহ বেদনাক্লিষ্ট বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাকে সাহস দিয়ে আগলে রাখার মহান ও দুরূহ কাজটি ড. ওয়াজেদ মিয়া করেছেন।

স্মৃতিচারণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সালটি সম্ভবত ২০০৫, সুধা সদনের আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে আছি, তিনি বলছেন তার মনটা একটু ভালো, কারণ বাড়ির ঋণটা শোধ হয়েছে। আমি বললাম, দুলাভাই, কোন বাড়ির ঋণ? তিনি সুধা সদন দেখিয়ে বললেন, এই বাড়ির ঋণ। আপনারা জানেন, তার ডাক নাম সুধা মিয়া, সেই নামেই সুধা সদন হয়েছে। এই মানুষটি আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে বললেই ঋণ আরো আগেই পরিশোধ হয়ে যেতো কিন্তু তিনি কাউকে বলেননি। নিজেই কিস্তিতে ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণ সম্পূর্ণ শোধ করেছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি আমলে নানা মানসিক নির্যাতন এবং পরে জরুরি অবস্থার সরকারের সময় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার ফলে তার ওপর যে মানসিক নির্যাতন হয়েছে, তারপর ড. ওয়াজেদ মিয়া যে অসুস্থ হয়ে পড়েন, সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরতে পারেননি। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি। আমরা সবাই তার জন্য দোয়া করি যেন মহান স্রষ্টা তাকে বেহেস্ত নসীব করেন।

পরে সাংবাদিকরা বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য ‘ওবায়দুল কাদের বিএনপির উপদেষ্টা’এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, আমরা তো বিএনপির মঙ্গলই চাই, আমরা বিএনপির মঙ্গল চাইলেও তারা নিজেরা বিএনপি আত্মহনন চায়। তারা যে সমস্ত পদক্ষেপ বিভিন্ন সময়ে নিয়েছে বা নিচ্ছে এগুলো আত্মহননমূলক। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপিকে আত্মহননের পথ পরিহার করার পরামর্শ দিয়েছেন যেটি সঠিক পরামর্শ। এখন তারা সেটি গ্রহণ করবে কি করবেন না কি ক্রমাগতভাবে আত্মহননের পথে হাঁটবেন, সেটি বিএনপির ব্যাপার।

বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ‘সরকারের পদত্যাগ ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না’এর জবাবে ড. হাছান বলেন, আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। আমাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক, তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুক। কিন্তু বিএনপিকে নির্বাচন ভীতিতে পেয়ে বসেছে। আসলে ‘নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা’একটা কথা আছে, বিএনপির ক্ষেত্রে এটিই প্রযোজ্য। আশা করবো বিএনপি নির্বাচন ভীতি কাটিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: হুমায়ূন কবির, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ মিলাদ ও দোয়ায় অংশ নেন।

ওআ/