খাল-বিলে অবাধে চলছে দেশীয় মাছের পোনা নিধন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


খাল-বিলে অবাধে চলছে দেশীয় মাছের পোনা নিধন

বর্ষার পানিতে এখন খাল-বিল, নদী-নালায় চড়ে বেড়াচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছের পোনা। কিছুদিনের মধ্যেই মাছগুলো বড় হবে। কিন্তু এরই মধ্যে এক শ্রেণির মৎস্য শিকারি বেড় ও সুতি জাল দিয়ে অবাধে পোনামাছ নিধন করছেন। বেশির ভাগ মৎস্যজীবী দরিদ্র হওয়ায় রুটি রুজির বিকল্প উপায় না থাকায় এসব পোনামাছ ধরতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তারা। 

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জের হাওরগুলোতে বৈশাখের ধান কাটা মাড়াই প্রায় শেষ। নদ-নদীর পানি হাওরে প্রবেশ করে ভরে উঠছে হাওরগুলো।  নতুন পানির সঙ্গে এসেছে ডিমওয়ালা মা মাছ। সেই মাছের পোনায় ভরে গেছে হাওরগুলো।  খাল-বিলে বর্ষার পানি প্রবেশের পর থেকেই মা মাছ ও পোনা মাছ শিকারের ধুম পড়ে গেছে।  নদী থেকে খাল-বিলে পানি প্রবেশের পথেই বেড় ও সুতি জাল দিয়ে ডিমওয়ালা মা মাছ নিধন করা হয়েছে। এখন চলছে পোনা মাছ নিধন। উপজেলার বিভিন্ন হাওরের মুখে প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এ মাছ শিকার। খুব সস্তায় গ্রামের হাট-বাজারে অবাধে এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে। 

শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ঘুরে দেখা যায়, মহাসিং নদী, সুরমা নদী, লাউগাঙ্গ নদী ও কালন নদী সহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি দ্রুত গতিতে হাওরে ঢুকছে। হাওরে পানি ঢুকার পথগুলোতে বসানো হয়েছে সুতি জাল, ভেসাল ও খড়া জাল দিয়া চলছে মা মাছ সহ পোনা মাছ নিধন। গত এক সপ্তাহ ধরে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজার, বীরগাঁও নতুন ও পুরাতন বাজার, দরগাপাশার আক্তাপাড়া মিনাবাজার, ছয়হাড়া-মৌগাঁও পয়েন্ট, জয়কলসের নোয়াখালী বাজার, পাথারিয়া বাজার, পূর্ব পাগলার পঞ্চগ্রাম, চিকারকান্দি বাজারসহ উপজেলার প্রায় সবক’টি ছোট-বড় বাজার ও পয়েন্টে নিয়মিত উঠছে দেশি জাতের মাছ। সেই সাথে আশঙ্কাজনক হারে বাজারগুলোতে আসছে পোনা মাছ।  এসব পোনা মাছের মধ্যে বোয়াল মাছের পোনা, টাকি মাছের পোনা, শোল মাছের পোনা লক্ষণীয়। বাজারে আসা বোয়াল মাছের পোনাগুলো দেড় থেকে দুই ইঞ্চি লম্বা এবং আকারে একেবারেই ছোট। খেতে স্বাদ হওয়ায় বাজারে এসব মাছের চাহিদা বেশি। পোনা মাছ মেরে নিজেদেরই ক্ষতি করছেন জেলেরা। 

দেখার হাওরে দীর্ঘদিন ধরে মাছ ধরেন মুজাহিদ আলম নামের এক জেলে তিনি বললেন, মাছ ধরাতো আমাদের কাজ, ছোট মাছ ধরতে আমাদেরও মন চায় না। কিন্তু কি করবো বলুন, এখন তো ছোট মাছেরই সময়। না ধরলে কি খেয়ে বাঁচবো। সরকার আমাদের কাজের ব্যবস্থা করে দিলে মাছ ধরা বাদ দিতাম। 

শান্তিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, জেলেদের সচেতন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। যেসব জাল দিয়ে পোনামাছ নিধন করা হচ্ছে সেসব জাল ধরতে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবো।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ্জ জামান জনবাণীকে বলেন, আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। মৎস্য অফিসারকে বলছি, প্রচারণা বাড়ানো হবে। পোনা মাছ ধরা বন্ধে সব ধরণের ব্যবস্থা হবে।

এসএ/