পুতিনের ইউক্রেন আগ্রাসন এবং মানবিক বিপর্যয়
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ইউক্রেন। দেশটির লাখ লাখ মানুষ তাদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, এরই মধ্যে ইউক্রেনে দেড় লাখের বেশি নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।সেখানে ক্রমেই মানবিক সংকট আসন্ন হচ্ছে। কিন্ত ইউক্রেনে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য রাশিয়াকে একতরফাভাবে দায়ি করে চলেছে পশ্চিমা দুনিয়া। সেখানে উল্টো মানবিক বিপর্যয় কম হওয়ায় রাশিয়ার প্রশংসা করেছে চীন। রাশিয়ার পদক্ষেপের কারণেই ইউক্রেনে বড় মাত্রায় মানবিক সংকট ঠেকানো গেছে বলে এক বক্তব্যে দাবি করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তিনি বলেন, পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধের মধ্যেও রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ক সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়াসহ অন্য যেসব পক্ষ ইউক্রেনে মানবিক সংকট ঠেকাতে কাজ করে যাচ্ছে তাদের সবাইকেই সমর্থন দেবে বেইজিং ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই চীনের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে পশ্চিমা দেশগুলো। রাশিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক এখন ইতিহাসের যে কোনো সময়ের থেকে ভাল। আর এটিই চীনের প্রতি অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে পশ্চিমা দুনিয়ায়। সমগ্র বিশ্ব যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধ, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চলেছে, হামলার নিন্দা জানাচ্ছে, চীন তখন নিরপেক্ষ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বরঞ্চ অভিযোগ উঠেছে, চীন রাশিয়াকে অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত। যদিও চীন ওই দাবি অস্বীকার করেছে।করোনা মহামারীর সময়ে উন্নয়নশীল অনেক দেশের ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে, অনেক কিস্তি জমে গেছে। এখন খাদ্য ও জ্বালানি পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে বিদেশি মুদ্রার সংকটে পড়ে কিস্তি পরিশোধে সমস্যায় পড়ছে অনেক দেশ। এরকম সংকটে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ভেঙে পড়ার দশা হয়েছে।এই আশঙ্কা খুবই বাস্তব। কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটতে শুরু করেছে, আমরা জানি না এটা কতদূর গড়াতে পারে।
এদিকে দরিদ্র দেশগুলোর ষাট শতাংশই হয় ঋণের নিচে চাপা পড়ছে, অথবা চাপা পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছ।জাতিসংঘের খাদ্য মূল্য সূচক বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কেনাবেচা করা ভোগ্য পণ্যের দরের ওঠানামা পর্যবেক্ষণ করে। এসব পণ্যের মধ্যে আছে-শষ্য, ভেজিটেবল অয়েল, দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস ও চিনি। ষাট বছর আগে শুরু হওয়া এই সূচকের হিসাব বলছে, এ বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে প্রায় ১৩ শতাংশ দাম বেড়েছে এসব পণ্যের, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি পুরো বিশ্বে মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞমহল।
এদিকে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর মার্চে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্য, ভোজ্য তেল, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস ও চিনির দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ, যা গত ৬০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির রেকর্ড। খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ অবশ্য দুই বছরের কোভিড মহামারি, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ নয়। মহামারির কারণে এই সংকট শুরু হয়েছিল, তাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে এই যুদ্ধ। এবং এই যুদ্ধ যদি চলতে থাকে, সেক্ষেত্রে তার প্রভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও অব্যাহত থাকবে। আর এতে সবচেয়ে বেশি ভুগবে দরিদ্র লোকজন, যাদের দৈনন্দিন খাদ্য জোগাড়ের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয় এবং খাদ্য কেনার পর হাতে প্রায় কোনো সঞ্চয় থাকে না।খাদ্যপণ্যের মূল্য বেশি বেড়ে গেলে দেশে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হওয়ার সমূহ শঙ্কা রয়েছে। একদিকে বিপুল সংখ্যক মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগবে, অন্যদিকে খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের অনেক দেশের সরকার। অর্থাৎ এমন একটা সংকটের কারণে তাদেরকে দোষারোপ করা হবে, যার জন্য তারা সরাসরি দায়ী নন।এখন পর্যন্ত বিশ্বে যে পরিমাণ খাদ্যপণ্য রয়েছে, তা এই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের ক্ষুধা নিবারণের জন্য যথেষ্ট। ইতিহাসের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে বিশ্বে খাদ্য মজুতের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
কিন্ত বিভিন্ন দেশের সরকার জনভোগান্তি ঠেকাতে খাদ্যপণ্যের মূল্যে ভর্তুকি দিচ্ছে। ভর্তুকি দিয়ে কোনো সমাধান আসবে না, বরং সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করা হবে।তার পরিবর্তে যদি এসব সরকার সরবরাহ বৃদ্ধি করে এবং দরিদ্র লোক জনের ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে পারা নিশ্চিত করতে, দেশের বিপণন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনে-তাহলে আসন্ন এই বিপর্যয় অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব।এক মাসের বেশি সময় ধরে বাদবাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন মারিউপোল। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদন বলছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় এই বন্দরনগরী রুশ আগ্রাসনের ভয়াবহতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। লাশ উপচে পড়া মর্গ, সদ্য খনন করা গণকবর এবং কিছু ক্ষেত্রে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে বা রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলোর আবাস হয়ে উঠেছে মারিউপোল। কেবল এই বন্দরনগরী নয়, বিদ্যুৎ, পানি ও খাবারের অভাবে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে মানবিক সঙ্কট চরমে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে গেছে ত্রিশ লাখের বেশি মানুষ। আগামী বছর পর্যন্ত যুদ্ধ চললে ইউক্রেনের ৯০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যের কবলে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, ইউক্রেনের অর্থনীতি গভীর মন্দার মুখোমুখি হতে চলেছে।মানবিক করিডোরের মাধ্যমে শত শত মানুষ মারিউপোল থেকে পালিয়েছে; কিন্তু ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন যে, যারা পালিয়ে গেছে তারা শহরে আটকে পড়া দুই লাখ মানুষের একটি ছোট অংশ এবং জরুরি সহায়তার প্রয়োজন। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনী অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ত্রাণবাহী কনভয়কে প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছে। শহরের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করায় এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় মানবিক সঙ্কটের দিকটি ফাঁস হয়ে গেছে সংবাদমাধ্যমে।
অপরদিকে মারিউপোলের বাসিন্দারা জীবন-মৃত্যুর দুঃস্বপ্ন যাপন করছে।মারিউপোলের নাগরিকরা বলছেন, শহরের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে যেন একটি মাংস পেষণযন্ত্র; সেখানকার ভূমি ভিজে গেছে রক্ত, তিক্ততা আর হতাশায়। ভিডিওটিতে খালি রাস্তা, ভেঙে যাওয়া জানালার ব্লক এবং দোকান থেকে ক্ষুধার্ত নাগরিকদের খাবার লুটের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে সেখানে তীব্র শীতের মধ্যে তাপহীন ও পানি ছাড়া জীবন চালাতে হচ্ছে। একটি বিধ্বস্ত ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ওই নাগরিক বলছেন, মারিউপোলে কী ঘটছে কেউ জানে না। কেবল মারিউপোল নয়, অবরুদ্ধ ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ, উত্তরাঞ্চলীয় চেরনিহিভ, দক্ষিণাঞ্চলীয় মিকোলেইভসহ বিভিন্ন শহরেও এখন অনেকটা একই অবস্থা।এসব শহরে নিয়মিত গোলা নিক্ষেপের পাশাপাশি বিমান থেকে ফেলা হচ্ছে বোমা। এতে গ্যাস ও পানির সংযোগ কাটা পড়ছে, পুরো শহর বা একাংশ হয়ে পড়ছে বিদ্যুৎহীন। আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নেওয়া হলেও অনেক ক্ষেত্রে তা কার্যকর হচ্ছে না। এজন্য ইউক্রেন ও রাশিয়া কর্তৃপক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ হামলাকে ইউক্রেনকে নির্মূল করার যুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অনেকে ইউক্রেনের শহরগুলোর পরিস্থিতিকে সিরিয়ার সঙ্গে তুলনা করছেন। সিরিয়ায় বেশ কয়েক বছরের যুদ্ধের পর এ অবস্থা দেখা গিয়েছিল, সেখানে ইউক্রেনে রুশ হামলার মাত্র চতুর্থ সপ্তাহ চলছে। চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খারকিভ শহরের কমপক্ষে পাঁচশ'র বেশি বাসিন্দা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের জরুরি সেবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।অবরুদ্ধ শহর চেরনিহিভের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। তিন লাখ বাসিন্দার এই শহরে গ্যাস, ঘর উষ্ণ রাখার ব্যবস্থা এমনকি পানি সরবরাহও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
আঞ্চলিক গভর্নর ভিয়াচেস্লাভ চাউস এক ভিডিও বার্তায় বলেন, রুশ বাহিনী বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে। তাতে নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। এদিকে দারিদ্র্যের কবলে পড়তে পারে ৯০ শতাংশ ইউক্রেইনীয়।ইউক্রেনে যুদ্ধ যদি আগামী বছর পর্যন্ত চলে তাহলে দেশটির দুই দশকের অর্থনৈতিক অর্জন মুছে যাবে আর এতে তাদের প্রতি ১০ জন নাগরিকের ৯ জনই দারিদ্র্যের কবলে ও চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়তে পারে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সংঘাত যদি দীর্ঘ হয়, যদি চলতেই থাকে, তাহলে দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়তে দেখব আমরা। স্পষ্টতই এই দৃশ্যকল্পের চরম সমাপ্তি হলো সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির বড় পতন। এটি শেষ পর্যন্ত ৯০ শতাংশ লোককে দারিদ্র্যসীমার নিচে বা সেখানে যাওয়ার উচ্চঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এছাড়াও দারিদ্র্যসীমা সাধারণত সংজ্ঞায়িত হয় জনপ্রতি দৈনিক ক্রয়ক্ষমতা সাড়ে ৫ ডলার থেকে ১৩ ডলারের মধ্যে; ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর আগে আনুমানিক মাত্র ২ শতাংশ ইউক্রেনীয়র দৈনিক ক্রয়ক্ষমতা ছিল সাড়ে ৫ ডলারের নিচে। যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছে ৩০ লাখ মানুষ।ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ তিন সপ্তাহে গড়িয়েছে, রুশ বাহিনীর হামলা থেকে রেহাই পেতে এরই মধ্যে ত্রিশ লাখের বেশি মানুষ দেশ ছেড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত ৩০ লাখ ৩৮১ জন ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। ইউএনএইচসিআর ৪০ লাখ শরণার্থীর জন্য সহায়তার পরিকল্পনা করলেও ইউক্রেন ছাড়া মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তাদের ধারণা ইউক্রেনের অর্থনীতি গভীর মন্দার মুখোমুখি হতে চলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে চলমান রাশিয়ার আগ্রাসন মানব জীবনের ভয়াবহ ক্ষতি এবং দেশটির অর্থনীতিরও যথেষ্ট ক্ষতিসাধন করেছে।
এদিকে চলতি বছরে ইউক্রেনের অর্থনীতি ন্যূনতম ১০ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।আইএমএফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্বে ইরাক, লেবানন,সিরিয়া এবং ইয়েমেন থেকে সংগৃহীত যুদ্ধকালীন প্রকৃত জিডিপি সঙ্কোচনের তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা যায়, ইউক্রেনের অর্থনীতি ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হতে পারে। মানবিক সঙ্কটের কারণে দীর্ঘ মন্দা এবং ক্রমবর্ধমান পুনর্গঠন ব্যয় প্রত্যাশিত বলে জানায় আইএমএফ। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত মূল্যায়ন না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবেদনে অর্থায়নের হিসাবকে একেবারে ন্যূনতম হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। অর্থনৈতিক বাস্তবতা বর্তমান অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন নিয়ে অনেকে অনেক ধারণা পোষণ করতে পারেন। কিন্তু রাশিয়ার প্রভাববলয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা নিয়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা আরও বিচক্ষণ হতো, যদি ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ঐক্যবদ্ধ হতো এবং সংকট ব্যবস্থাপনায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পারদর্শী হতেন, তাহলে ইউক্রেন ট্র্যাজেডি এড়ানো যেত।ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান ইতোমধ্যে একটি ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে। এটি বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে খাধ্য সঙ্কটের পাশাপাশি, আরও কিছু বিপর্যয় ডেকে আনবে। এই বিপর্যয়গুলো তিনভাবে অনুভূত হবে। বর্তমান শস্যের চালানে ব্যাঘাত, ইউক্রেন ও রাশিয়ায় কম খাদ্য শস্যের কম ফলন বা ভবিষ্যত ফসলের অপ্রাপ্যতা এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে উৎপাদন হ্রাস পাওয়া। এর ফলে খাদ্য ও জ্বালানির এই উচ্চ মূল্য বিশ্বব্যাপি অনান্য পণ্যের ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি, মূল্যস্ফীতিকেও বাড়িয়ে তুলবে। আর বাড়িয়ে তুলবে অর্থনৈতিক সঙ্কট ও মানবিক বিপর্যয়।