আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস  আজ

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শনিবার (২৮ মে) আলাদা বাণী দিয়েছেন।অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে দিবসটি।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার (২৭ মে) জানায়, রোববার সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।

রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকটাত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। বর্তমানে ৯টি মিশনে নিয়োজিত রয়েছেন ৬ হাজার ৮০২ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লাখ ৮০ হাজার ৬৬১ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের ৫৪টি শান্তি রক্ষা মিশনে অংশ নিয়েছেন।শান্তিরক্ষী মিশনে বর্তমানে ৩৮৭ জন নারী শান্তিরক্ষী রয়েছেন যার মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের একটি নারী কন্টিনজেন্ট রয়েছে। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় এ পর্যন্ত শহীদ হয়েছেন ১৬০ জন আর আহত হয়েছেন ২৪০ জন। 

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকটাত্মীয় এবং আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনীর প্রধান, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সামরিক উপদেষ্টা, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), পুলিশ মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার (ইউএনপিএসও) সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে বিশ্বে শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিত হয়েছে। ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীরা সর্বোচ্চমানের পেশাদারি মনোভাব, সাহসিকতা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

এ ছাড়াও রবিবার সকালে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়-২০২২’ অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী ২ জন বাংলাদেশীকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল প্রদান করেছে জাতিসংঘ। দায়িত্ব পালনকালে আত্মোৎসর্গকারী দুই বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান ও ল্যান্সকর্পোরাল মোঃ রবিউল মোল্লা এ পদক পান। মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে নিয়োজিত মিনুসকা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন। দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত আনমিস মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন ল্যান্সকর্পোরাল রবিউল মোল্লা। নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদর দফতরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ পদক দেয়া হয়।

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশেষ জার্নাল ও বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হবে বিশেষ ক্রোড়পত্র। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিশেষ টক-শো সম্প্রচারিত হবে। 

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে আকর্ষণীয় শান্তিরক্ষার দায়িত্ব ব্যাপক জনপ্রিয়। কারণ এতে অংশগ্রহণকারীদের মিশনের পর বাড়ি কেনার ও অবসরের জন্য সঞ্চয়ের সুযোগ করে দেয়। সামরিক বাহিনীতে কর্মরতরা এই মিশনে যাবার জন্য অপেক্ষা করে।

জি আই/