চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
চা খাওয়া শুধুই কি অভ্যাস? নাকি এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে? অনেকের ধারণা, চা খাওয়ার কোনো উপকারিতা নেই। আসলে এই ধারণা মোটেই সঠিক নয়। কারণ নিয়মিত চা খেলে পাবেন অনেকগুলো উপকার। সারাদিনের সতেজ অনুভূতির জন্য হলেও এক কাপ চায়ের প্রয়োজন পড়ে। সেইসঙ্গে বাঁচা যায় বিভিন্ন অসুখ থেকেও। চা খাওয়ার অভ্যাস মোটেও ক্ষতিকর নয়। তবে তা খেতে হবে পরিমিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক নিয়মিত চা খাওয়ার উপকারিতা-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
যেকোনো অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে চা। চায়ে থাকা ভিটামিন আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত চা খেলে আপনি অনেক ধরনের অসুখ থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
ভালো থাকে হার্ট
হার্ট ভালো রাখার জন্য খাবারের তালিকায় নজর রাখতে হবে। প্রতিদিন অন্তত এক কাপ চা আপনাকে এই কাজে সাহায্য করবে। লিকার চায়ে থাকে এমন কিছু এনজাইম, যা আপনার হার্টে রক্ত সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে হৃৎপিন্ড সুস্থ থাকে। বিশেষজ্ঞরা দিনে দুইবার লিকা চা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
মরণঘাতি অসুখ ক্যান্সার থেকে বাঁচতে আপনাকে সাহায্য করবে চা। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে এমনটাই। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত গ্রিন টি খেলে তা শরীরে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি হতে দেয় না। তাই এই চা প্রতিদিন এক-দুই কাপ খেতে পারেন। এতে ক্যান্সারসহ আরও অনেক অসুখ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে।
মাইগ্রেন কমায়
মাইগ্রেন একবার দেখা দিলে কখনো আর পুরোপুরি সেরে যায় না। এ ধরনের সমস্যা যাদের আছে তাদের খাবারের বিষয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হয়। কারণ কিছু খাবারের কারণে মাইগ্রেন বেড়ে যেতে পারে। অন্যদিকে কিছু খাবার মাইগ্রেন কমাতে কাজ করে। তার মধ্যে একটি হলো ল্যাভেন্ডার চা। এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যে কারণে এই চা খেলে তা মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। ফলে কমে মাইগ্রেন।
স্বাস্থ্য রক্ষায় চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিগুণ সামান্য হলেও এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেমন- পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যাটেচিন। পলিফেনলস এবং ক্যাটেচিন ফ্রি রেডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয় এবং কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। একারণে চা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চায়ে উপস্থিত পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
চায়ে ৭% থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির জন্য অনেক উপকারী। চা এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলেও এতে রয়েছে ক্যাফেইন নামক উত্তেজক পদার্থ। সাধারণত এক কাপ চায়ে রয়েছে (৩০-৪০) মিলিগ্রাম ক্যাফেইন এবং এক কাপ কফিতে এর প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ (৮৫ মিলিগ্রাম) ক্যাফেইন রয়েছে। বস্তুত ক্যাফেইনের কারনেই ঘুম কম হওয়া,হজমে ব্যঘাত ঘটা ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এই ক্যাফেইনের কিছু ভালো দিকও রয়েছে। এটি হৃদপিন্ড ও দেহের অন্যান্য পেশি সতেজ রাখতে সহায়তা করে।
চায়ের উপকারিতা
যেহেতু চা আমাদের প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনের নিত্যসঙ্গী, সেহেতু এই চা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু উপকারী এবং কতটুকু ক্ষতি করছে তা জানা অত্যাবশ্যক। আজ আসুন জেনে নিই চা পানের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে।
ফিগার ঠিক রাখতে অনেকেই গ্রীন টি-এর প্রতি বেশি ঝুঁকছেন। গ্রীন টি প্রথমে ছিল ওষুধ, তারপর পানীয়তে পরিণত হয়েছে। জাপানের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে দুই কাপের বেশি গ্রিন টি পান করেন তারা মানসিকভাবে অনেক বেশি ফিট। সবুজ চায়ে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন খনিজ উপাদান যা প্রতিটি মানুষের শরীরেই প্রয়োজন। নিয়মিত সবুজ চা পান করলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কিছুটা কমিয়ে দেয়। এছাড়াও কিডনি রোগের জন্য উপকারী। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। পোকামাকড় কামড়ালে যদি ঐ স্থান চুলকায় ও ফুলে যায় তাহলে সবুজ চায়ের পাতা দিয়ে ঢেকে দিলে আরাম বোধ হয়। রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী।
জি আই/