অর্থমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ৫১তম বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


অর্থমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ৫১তম বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

দেশের ৫১তম বাজেট পেশ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় সংসদের অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বেলা ৩টায় সংসদে বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী।

এর আগে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা।

এরপর বাজেট সংসদে উপস্থাপনের অনুমতি দিয়ে তাতে সম্মতিসূচক স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি আজ বঙ্গভবনের বদলে জাতীয় সংসদ ভবনের রাষ্ট্রপতির দপ্তরে অফিস করেন। এর পরই রীতি অনুযায়ী অর্থমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সংসদের অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছেন।

এর আগে দুপুর ১২টা ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার জন্য লাল রঙের ব্রিফকেস হাতে নিয়ে সংসদ ভবনে পৌঁছান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সংসদ ভবনে পৌঁছান তিনি। অর্থমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম  সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এটি বর্তমান সরকারের ২৩তম, বাংলাদেশের ৫১তম এবং বর্তমান অর্থমন্ত্রীর চতুর্থ বাজেট।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামে জাতীয় সংসদে আজ বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন বাজেটের আকার ধরা হয়েছে প্রায় ছয় লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছয় লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এতে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। গত অর্থ বছরের তুলনায় আসন্ন বাজেটের আকার ৭৬ হাজার কোটি টাকা বেশি হতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাজেটের মোট আকার নিয়ে এখনও পর্যালোচনা ও যাচাই-বাচাই চলছে। শেষ মুহূর্তে কিছু কম বেশি হতেও পারে। আগামী বাজেটে ঘাটতি দুই লাখ ৪৩ হাজার কোটি টাকার মতো হতে পারে। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছিল দুই লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। আসন্ন অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে যা ধরা হয়েছিল ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

সূত্র আরও জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরে মোট আয় ধরা হবে চার লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে আয় ধরা হয়েছিল তিন লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। সে অনুযায়ী এবারে বাজেটে মোট প্রাক্কলিত আয়ের পরিমাণ বাড়ছে ৪৪ হাজার কোটি টাকা।

মোট আয়ের মধ্যে আগামী অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হতে পারে। চলতি অর্থবছরে এনবিআরকে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। আগের অর্থবছরেও এনবিআরকে একই লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল।

চলতি ২০২১–২২ অর্থবছরে মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছিল দুই লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের জন্য তা দুই লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে বিদ্যুৎ খাতে। এ খাতে ১৮ হাজার কোটি টাকা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) আমদানিমূল্য পরিশোধ ও প্রণোদনা প্যাকেজের সুদ ভর্তুকি ১৭ হাজার ৩০০ কোটি, খাদ্য ভর্তুকি ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি এবং কৃষি প্রণোদনা বাবদ ১৫ হাজার কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের চতুর্থ বাজেট এটি। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি চতুর্থ বাজেট। দুপুর ৩টায় বাজেট বক্তৃতা শুরু করবেন তিনি।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম বাজেট ঘোষণা করেন তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৭২ সালের ৩০ জুন ঘোষণা করা সেই বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার। স্বাধীনতার ৫০ বছর শেষে এর আকার দাঁড়িয়েছে ছঠয় লাখ কোটি টাকার বেশি।  অর্থাৎ প্রথম বাজেট থেকে ৫১তম বাজেটের আকার বেড়েছে ৮৬৫.১৩ শতাংশ।

এ পর্যন্ত সর্বমোট ৫০টি বাজেট উত্থাপন করেছেন ১৩ জন ব্যক্তি। তাদের মধ্যে একজন রাষ্ট্রপতি, নয় জন অর্থমন্ত্রী ও দুজন অর্থ উপদেষ্টা। ব্যক্তি হিসেবে সবচেয়ে বেশি ১২টি করে বাজেট উত্থাপন করেছেন প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান এবং আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর মধ্যে আবুল মাল আবদুল মুহিত আওয়ামী লীগের হয়ে রেকর্ড টানা ১০টি বাজেট উপস্থাপন করেন।

এসএ/