চিন্তায় ঘুমহীন তারা!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


চিন্তায় ঘুমহীন তারা!

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল চরসুবুদ্ধী ইউনিয়নের মহেশবেরসহ দুর্গম নদীপাড়ের মানুষের নির্মাণাধীন গ্রাম রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। 

শনিবার (১১ জুন) দুপুরে হঠাৎ ওই ইউনিয়নের মহেশবের গ্রামের একশ মিটার বাঁধ ভেঙে জমিসহ বসত বিটা মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে শত শত বসত ভিটাসহ কয়েকশো পরিবার। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ একাধীক বার মাপামাপি করলেও কোনো প্রতিক্রয়া পাচ্ছে না। আজ নিজের ভিটা হারিয়ে আব্দুল কাশেম নদীর পাড়ে বসে কাঁদছে। কেউ তার সহযোগিতা না করায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

আব্দুল কাশেম জনবাণীকে বলেন, ‍“আমার বংশের একটি কবরস্থান ও ঈদগাঁহ্ মাঠ ভেঙ্গে নিয়ে গিছে এই মেঘনা নদী। অথচ ভাঙ্গার সময় স্থানীয় ইউ.পি চেয়ারম্যান বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো কিন্তু পরবর্তী কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আজকে আমার ৪টি সন্তান নিয়ে কোথায় গিয়ে দাড়াবো তা আমার নিজেরও জানা নেই।”
 
জানা গেছে, নরসিংদীর নদ-নদী পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চরসুবুদ্ধী ইউনিয়নে গত বছর ১৭০০ মিটার গ্রাম রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ হাতে নেওয়া হয়। এ প্রকল্পটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন বিগ্রেড বাস্তবায়ন করছে বলে জানায় স্থানীয় লোকজন।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী বিজয় চন্দ্র শংকর জনবাণীকে জানান, “সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে এখানকার কাজ চলমান রয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়া আবারও কিছু অংশে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।”

বীর চরমধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মকবুল হাসান জনবাণীকে জানান, “স্কুলে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। গতকালের ভাঙনে স্কুলটি ঝুঁকিতে আছে। ভাঙন রোধে সেনাবাহিনীর লোকেরা কাজ করছে।”

বীর চরমধুয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল কেফায়াতুল্লাহ জনবাণীকে জানান, “নির্মাণাধীন বাঁধটি থেকে মাদ্রাসার দূরত্ব মাত্র ৫০ ফুট। ফলে মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে মাদ্রাসাটি। ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানান তিনি।”

এদিকে চরসুবুদ্ধী নদীর পাড়ের বাসিন্দা হাসান উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, শুধু চরমধুয়া নয় আমাদের এলাকাটিও নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ছে। প্রায় ৭০টি বসতভিটা নদীতে বিলি হয়ে গেছে কিন্তু পানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আজ ১০ বছর যাবৎ এই এলাকায় এক বস্তা বালিও ফেলায়নি তারা। একাধিক বার মাপামাপি করেন গেছে কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নাই। 

এইদিকে চরসুবুদ্ধী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ নাসির উদ্দিন জনবাণীকে জানান, “এই বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেছি। আশাকরি দ্রুত আমার এলাকায় নদী রক্ষা বাধঁ করতে দ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করবে।”

এসএ/