দূর্নীতির মামলায় স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিসহ ৬ জনের বিচার শুরু


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


দূর্নীতির মামলায় স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিসহ ৬ জনের বিচার শুরু

হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার পরও করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এর করা মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত।

রবিবার (১২ জুন) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান আদালতে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে এ আদেশ দেন।  এ মামলায় চার্জ গঠনের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। 

 এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৪ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এরআগে, গত ৬ জুন চার্জ গঠন শুনানি শেষে ১২ জুন আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়। 

আসামি পক্ষের আইনজীবীরা প্রত্যেক আসামিদের জন্য আলাদাভাবে শুনানি করে নিজেদের নির্দোশ বলে দাবি করেন এবং চার্জ গঠন না করে ডিসচার্জ করার আবেদন জনান। এসময় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী তাদের বিরোধিতা করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আবেদন জানান।

আদালতের অনুমতি নিয়ে স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি আদালতে তার বিরুদ্ধে সকল আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে তার সকল কর্মকান্ড ব্যাখ্যা করে শুনান। নিজের নির্দোশ বলে দাবি করেন। আদালতকে  তিনি বলেন মাননীয় আদালত আমি সারাজীবন মানুষকে সেবা দিয়ে গিয়েছি সুনামের সাথে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার আগে তদন্ত কর্মকর্তা একবারের জন্যও কথা বলার প্রয়োজন মনে করে নাই। আমাকে সামাজিক ভাবে পারিবারিক ভাবে লজ্জাজনক অবস্থায় ফেলেছে। আমি মানষিক ভাবে বির্পযস্ত হয়ে পরেছি। আমাকে এই মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি 

এরআগে, আসামিপক্ষে আইনজীবী শুনানির জন্য প্রস্তুত নয় জানিয়ে সময় আবেদন করলে বিচারক আগামী ৬ জুন চার্জ শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

এ মামলায় স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি ছাড়াও অপর আসামিরা হলেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক আমিনুল হাসান, উপপরিচালক মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক মো. শফিউর রহমান এবং গবেষণা কর্মকর্তা মো. দিদারুল ইসলাম। আসামিদের মধ্যে সাহেদ কারাগারে আছেন।

গত বছর আবুল কালাম আজাদসহ ছয় জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।

চার্জশিটে আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্স নবায়নবিহীন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করার কথা থাকলেও টাকা নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

সেই সঙ্গে কোভিড পরীক্ষার সময় অবৈধ পারিতোষিকবাবদ রোগী প্রতি ৩,৫০০ টাকা হিসেবে মোট ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণ করেন করেছেন বলে চার্জশিটে অভিযোগ আনা হয়।

এ ছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের খাবার খরচ বরাদ্দের বিষয়ে ১ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার মাসিক চাহিদা তুলে ধরাসহ সমঝোতা স্মারকের খসড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

চার্জশিটে আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। সেখানে আবুল কালাম আজাদকে আসামি করা হয়নি। তবে তদন্তে নাম আসায় চার্জশিটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

জি আই/