সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি: চিকিৎসাধীন ফায়ারফাইটারের মৃত্যু, ডিজি’র শ্রদ্ধা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি: চিকিৎসাধীন ফায়ারফাইটারের মৃত্যু, ডিজি’র শ্রদ্ধা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিনির্বাপণকালে কেমিক্যাল বিম্ফোরণজনিত দুর্ঘটনায়  গুরুতর আহত সীতাকুন্ড ফায়ার স্টেশনের ফায়ারফাইটার গাউসুল আজম রবিবার  (১২ জুন) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ট্রিটমেন্ট ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। একই দিন বিকেল ৩ ঘটিকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে তাঁর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
 
জানাজা অনুষ্ঠানে ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন, উপ-সচিব জাহিদুল ইসলাম, মরহুমের পরিবারের সদস্যগণ এবং ফায়ার সার্ভিসের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন। এর আগে জানাজা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শহিদ ফায়ারফাইটার গাউসুল আজমের কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এর পর তিনি শহিদ গাউসুল আজমের উদ্দেশে সশ্রদ্ধ অভিবাদন জ্ঞাপন পর্বে অংশগ্রহণ করেন। শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষে সকলকে শহিদ ফায়ারফাইটার গাউসুল আজমের জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান সংক্ষেপে বক্তব্য দেন এবং পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের কাছে মরহুমের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। 

নামাজে জানাজা শেষে সীতাকুণ্ড বিএম কনটেইনার ডিপোর অগ্নিদুর্ঘটনায় শাহাদত বরণকারী ১০ জন ফায়ারফাইটারসহ নিহত সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্ট তাঁর পরিবারের সকল শহিদ সদস্যসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মাহুতি দেয়া বীর শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির শান্তি ও মঙ্গল কামনা করা হয়। 

উল্লেখ্য, শহিদ ফায়ারফাইটার গাউসুল আজমের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স যশোরের মনিরামপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। সেখানে তাঁর মরদেহ চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে। ফায়ারফাইটার গাউসুল আজম ১৯৯৯ সালের ২২ জুন সাতক্ষীরা জেলার সাতক্ষীরা সদর থানার মাগুরা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আজগর আলী এবং মায়ের নাম আসিয়া বেগম। গাউসুল আজম ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে অগ্নিসেনা হিসেবে যোগদান করেন। কর্মজীবনের প্রতিটি সময় তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ তিনি সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। গত ৪ জুন দিবাগত রাতে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিনির্বাপণকালে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন। মহাপরিচালকের সানুগ্রহ উদ্যোগে তাঁকে প্রথমে চট্টগ্রাম সিএমএইচে এবং পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ট্রিটমেন্ট ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। রবিবার  (১২ জুন) ভোর রাত ৩ টায় তিনি চিকিৎসারত অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না-লিল্লাহ.... রাজিউন)। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত ছিলেন। তাঁর ৫ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বাবা-মায়ের ২ ছেলে-মেয়ের মধ্যে গাউসুল আজম ছিলেন কনিষ্ঠ।

এসএ/