ভাঙ্গন আতঙ্কে ধলেশ্বরী, জিও ব্যাগ ফেলায় কিছুটা স্বস্তি


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ভাঙ্গন আতঙ্কে ধলেশ্বরী, জিও ব্যাগ ফেলায় কিছুটা স্বস্তি

রাজধানী ঢাকার খুব কাছের নদী ধলেশ্বরী। শুষ্ক মৌসুমে নদী থাকে প্রায় প্রাণহীন। তবে বর্ষায় নেয় রুদ্ররূপ। এই নদী গত ২২ বছরে গ্রাস করেছে লক্ষাধিক ঘরবাড়ি। প্রতিবছর বন্যার পানি নামতেই বসতভিটা হারিয়েছে প্রায় ৫০ টি পরিবার।

শেষ সম্বল বসতভিটা গ্রাস করেছে ধলেশ্বরী। বর্ষার প্রবাহমান জলের স্রোতের উপর চোখ রেখে হারিয়ে যাওয়া চিহ্ন খুঁজে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান ডাকেরহাটি গ্রামের হাজারো অসহায় গ্রামবাসী। নদী ভাঙ্গনের আতঙ্ক থেকে এবার গ্রামবাসীকে মুক্ত করতে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে ধলেশ্বরী নদী ভাঙ্গনরোধে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ স্থাপন করা হচ্ছে। এতে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলছে সাধারণ মানুষ। 

গত বুধবার (৮ জুন) সকাল থেকে উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের তুলসীখালী ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় ডাকেরহাটি গ্রামের ৬৫ মিটার এলাকায় ৬ হাজার ৪০০টি বালু ভর্তি জিও ব্যাগ স্থাপন করার কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

জানা যায়, উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের ধলেশ্বরী নদীর পানির তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তুলসীখালী ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে গোয়ালখালী ও ডাকেরহাটি গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনের শঙ্কায় থাকে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, দুটি ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের খুঁটি। এছাড়াও গত বছরে প্রায় ৫০টির বেশি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জরুরি ভিত্তিক নদী রক্ষা বাধ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করে। আর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিমেক লিমিটেড কোম্পানী কাজটি সম্পন্ন করার চুক্তিবদ্ধ হন।

চিত্রকোট ইউপির চেয়ারম্যান শামসুল হুদা বাবুল জনবাণীকে বলেন, ‍“এই নদী ভাঙ্গন নিয়ে কয়েক বছর ধরেই আমি বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়ে আসছি কোনো কাজ হয়নি। অবশেষে মাত্র ৬৫ মিটার এলাকা স্থাপন করা হচ্ছে জিও ব্যাগ। আমি সকাল থেকে এই এলাকার মধ্যে রয়েছি। এতো বড় একটি ভাঙ্গনে এটি অনেক কম হয়ে গেছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে ধারাবাহিকভাবে আরো অনেকদূর পর্যন্ত এ ভাঙ্গনরোধে কাজ করে যাবে।”

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিমেক লিমিটেডের প্রজেক্ট প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার রাশেদুজ্জামান শাওলিন জনবাণীকে বলেন, “আমরা আজকে থেকে কাজ শুরু করেছি, যত দ্রুত এই কাজটি শেষ করার চেষ্টা করব। এছাড়া যেসব স্থানগুলোতে বেশি ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে, সেসব স্থানগুলোতে আমরা যতটুকু জিও ব্যাগ লাগে সেই পরিমাণ বস্তা দেওয়া হবে, যাতে করে ভাঙ্গন রোধ করা যায়।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শরীফুল আলম তানভীর জনবাণীকে বলেন, “ধলেশ্বরী নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি আমি জানি। আমার আগের ইউএনও মহোদয় এটা নিয়ে কাজ করেছেন। আমি আসার পর চিত্রকোটের চেয়ারম্যান এবং আমি নিজে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে দেখা করেছি, এ বিষয়ে কথা বলেছি। অবশেষে কাজ শুরু করেছে, তবে পর্যায়ক্রমে বাকি কাজ গুলো করবে তারা।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মুন্সিগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জনবাণীকে বলেন, “আমরা এই বিষয়টি গতবারও মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিলাম। তবে এবছরের শুরুতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদন পেয়েছি। এজন্য এখন কাজ করতে পারছি। ভবিষ্যতে যদি ভাঙ্গন আরো তীব্রতা বাড়ে তবে আরো বেশি জায়গার আবেদন করে অনুমোদন করে কাজ করা হবে।”

এসএ/