‘বিএনপির বক্তব্য উদভ্রান্তের মতো’


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


‘বিএনপির বক্তব্য উদভ্রান্তের মতো’

“সম্প্রতি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন সিলেটের বন্যা প্রধানমন্ত্রী জন্য হয়েছে এগুলো উদভ্রান্তের মতো বক্তব্য। বিএনপির কথা শুনে মনে হচ্ছে চেরাপুঞ্জি ও মেঘালয়ে ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী। তার কথায় তাই দাঁড়ায়। আসলে কোথায় যে কী বলবে বুঝতে পারেননি।”

মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সিলেটের বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন শেষে  তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন সিলেটের বন্যা প্রধানমন্ত্রীর জন্য হয়েছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‍“রিজভী সাহেবের কথা শুনে মনে হচ্ছিল আসামে ও মেঘালয়ে যে বন্যা হয়েছে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী। সিলেটে এক হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। আর ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে চেরাপুঞ্জি ও মেঘালয়ে। সিলেটেও ১শ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে। সেজন্যই এ বন্যা। রিজভী সাহের কথা শুনে মনে হচ্ছে ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী। তার কথায় তাই দাঁড়ায়। আসলে কোথায় যে কী বলবে বুঝতে পারেননি। সবকিছুতে সরকারকে দায়ী করার যে বাতিক সেখান থেকে এ কথাগুলো বলেছে। এগুলো উদভ্রান্তের মতো বক্তব্য। তাহলে এতো বৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী বা সরকার দায়ী তার বক্তব্য অনুযায়ী।”
  
সিলেট মহানগরের এমপি বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা ঢাকায় বসে বসে কথা বলছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি ঢাকায় বসে বসে কথা বলছেতো তাই তারা জানে না ওখানে কারা আছে। সিলেটে সবাই আছে। সিলেট অঞ্চলের সব মন্ত্রীরা সেখানে আছে। পরীকল্পনা মন্ত্রীর করোনার জন্য তিনি যেতে পারেনি। বাকি সব মন্ত্রী এমপিরা সেখানে আছেন। বিএনপি ঢাকায় বসে বসে কথা বলেতো তাই না জেনেই কথা বলেছে। ” 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সিলেটে বন্যাদুর্গত এলাকায় সবায় মিলে সম্মিলিতভাবে প্রশাসন, সেনা বাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, স্থানীয় জন প্রতিনিধিসহ আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই মিলে কাজ করে যাচ্ছেন। সেখানে সিলেটের মেয়র বক্তব্য রেখেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাকে বললেন, তোমাদের দলের কাছ থেকে জনগণ কী পেয়েছে একটু বলেন। তিনি কিছু বলতে পারলেন না। কারণ বিএনপির পক্ষ থেকে কিছুই করা হয়নি। সিলেটে তাদেরকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা ঢাকায় বসে বসে লম্বা লম্বা বক্তৃতা দেন বাক-বাকুম করে।”

তিনি বলেন, “সিলেটে বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে যার যা আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে আমাদের নেতাকর্মীরা। আজ প্রধানমন্ত্রী সেখানে নির্দেশনা দিয়েছেন, সিলেটের প্রধান নদীগুলো ড্রেজিং করা দরকার। প্রতিবছর পলি পড়ার কারণে নদীর ধারণক্ষমতা কমে গেছে। বন্যার অন্যতম একটি কারণও বটে। আর একটি বিষয় হচ্ছে উজানে অর্থাৎ চেরাপুঞ্জি ও মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টির কারণে ঢলের পানি দ্রুত চলে এসেছে। মানুষ বুঝতেও পারেনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে উঠানে পানি।”

মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী সিলেটে বন্যাদুর্গতের দেখতে সেখানে ছুটে গেছেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, “দলীয় নেতাদের ত্রাণ তৎপরতার সঙ্গে যারা আছেন তাদের উৎসাহ দিয়েছেন। সেখানে তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। স্বস্তির কথা হলো সেখানে আজকে বৃষ্টি হয়নি। বন্যা পরিস্থিতি আগের তুলনায় উন্নিত হয়েছে। কোন কোন স্থানে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি নেমে গেছে। তবে আমাদের দেশ একটি বন্যাকবলিত দেশ। প্রতিবছরই কমপক্ষে ২৫ শতাংশ স্থলভাগ বন্যা পানিতে তলিয়ে যায়। ১০ বছর পর পর আমাদের দেশের ৭৫ শতাংশ ভূমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। আমাদের দেশে বন্যা একটি নিয়মিত ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এটিকে মোকাবিলা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।”  

তিনি বলেন, “উজানের বন্যার পানি ইতোমধ্যে দেশের মধ্যাঞ্চলে নেমেছে তারপর দক্ষিণাঞ্চলে যাবে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে যদি দক্ষিণাঞ্চলে যদি দুর্যোগ হয় তাহলে সেটি মোকাবিলা করতে আমাদের সুবিধা হবে।”  

ড্রেজিংয়ের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত না নির্দেশ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সিলেটের নদীগুলোতে ড্রেজিং শুরু হয়েছে। ড্রেজিং হওয়ার পর সেখানে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন হয়। প্রধানমন্ত্রী সেই সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। নদীগুলোতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রতিবছর ম্যানটেনেস ড্রেজিং করা হবে। তাহলে নদীর ধারণক্ষমতা বাড়বে এবং বন্যার প্রকোপ কমবে।”

অপ-সাংবাদিকতা নিয়ে সোমবার (২০ জুন) একটি আইনের কথা বলা হয়েছে জাতীয় প্রেসকাউন্সিল আইন সেটা নিয়ে যদি বিস্তারিত একটু বলতেন এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “প্রেস কাউন্সিল যে আইন সেটা এখনও প্রক্রিয়ার মধ্যে। তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে যারা ঢাকায় বসে বসে বাগাড়ম্বর করছেন, নানা ধরনের মত দিচ্ছেন তারা এখন কোথায়। যারা সরকারকে কারণে অকারণে ছবোক দেন এই করতে হবে সেই করতে হবে কারা কোথায়। এনজিওর বড় বড় ব্যক্তিত্ব তারা কোথায়। তাদেরকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই প্রশ্ন সাধারণ জনগণসহ আমিও রাখছি।”

এসএ/