নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে পদ্মা সেতু এলাকা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে পদ্মা সেতু এলাকা

আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পর উদ্ধোধন হবে বাঙালির গর্বের পদ্মা সেতু। শনিবার (২৫ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। পরে তিনি শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে এক বিশাল জনসমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। আগামী ২৬ তারিখ থেকে যানবাহন চলাচল করবে এ সেতু দিয়ে। ঐ দিন ভোর ৬টা থেকেই উন্মুক্ত হবে জনসাধারণের জন্য।

ইতোমধ্যেই প্রস্তুত হয়েছে জনসভার মঞ্চ। জনসভাস্থলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট এবং আশেপাশের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা। সভাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

শুক্রবার (২৪ জুন) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। দিন গড়িয়ে বিকাল পর্যন্ত জনসভাস্থল ও আশেপাশে বাড়তে থাকে তাদের উপস্থিতি।

বাংলাবাজার ঘাট ছাড়াও ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর ও জাজিরা এলাকায়ও মোতায়েন করা হয়েছে র‌্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রতি ১০ গজের ব্যবধানে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য। সকাল থেকেই আকাশে দেখা গেছে হেলিকপ্টারের মহড়া।

এদিন সকাল থেকেই দেখা গেছে বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল টিমের গাড়ি। শুধু তাই নয়, সকাল ১০টার দিকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বেলা ১১টার দিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বাংলাবাজার ফেরিঘাটে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল পরিদর্শনে আসেন।

এদিকে জনসভাকে ঘিরে পুরো এলাকার মানুষের মধ্যে বইছে উদ্দীপনা আর আনন্দের ঝড়। পুরো ঘাট এলাকায় একসঙ্গে এত পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের উপস্থিতি দেখে বিস্মিত হন তারা। অনেকেই বলেন, ‘জীবনে এরকম নিরাপত্তার আয়োজন দেখিনি।’

এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, “শনিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই এলাকায় আসবেন। আমরা তার আগমনকে ঘিরে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। তাছাড়া আমরা এসএসএফের সঙ্গে সমন্বয় করে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। সকালে ঘাটে আমাদের আইজিপি মহোদয় এসেছিলেন। তিনি সার্বিক প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন এবং ব্রিফিং করেন।”

র‌্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বৃহস্পতিবার পদ্মাসেতু এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে জনসভাস্থলসহ পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে। আকাশে হেলিকপ্টার, সেতুর দুই প্রান্তে স্পেশাল কমান্ডো টিমসহ উদ্বোধনস্থল এবং আশপাশের এলাকাজুড়ে থাকবে র‌্যাবের কড়া পাহারা।” 

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, “স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সব ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের প্রতিটি সদস্য তৎপর আছেন। পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া ১ এবং সার্ভিস এরিয়া ২-এ র‌্যাবের পোশাকধারী সদস্যদের পাশাপাশি র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। সমাবেশস্থল, টোল প্লাজা, ফলক উন্মোচন স্থানসহ আশপাশে র‌্যাবের টহল তৎপরতা রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স, মোটরসাইকেল পেট্রোল, বোট পেট্রোল, অবজারভেশন ফোর্স থাকবে সার্বক্ষণিক। সেতুর দুই প্রান্তসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট থাকছে। আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।” 

র‌্যাবের মহাপরিচালক বলেন, “এসব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি সেতুর দুই প্রান্তে র‌্যাবের মেডিক্যাল টিম থাকবে বলে জানান তিনি। এ সময় র‌্যাবের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।”

এসএ/