সৌম্য-সাব্বিরের সামনে বড় সুযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২

এক সময়ের বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম দুই ব্যটার সৌম্য সরকার ও সাব্বির হোসেন। বিশেষ করে সীমিত ওভারের খেলায় যাদেরকে ছাড়া দলই কল্পনা করা যেতনা। এখন দু’জনই জাতীয় দল থেকে অনেকটাই দূরে। দলে ফেরার মতো কোন পারফরম্যান্সই নেই এ দুই ব্যাটারের। তারা যেন রান করাই ভুলে গেছেন। তবে তাদের সামনে এবার বড় সুযোগ। দুজনকেই রাখা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের বাংলাদেশ-এ দলে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের মতে, দুজনের জন্যই অনেক বড় মঞ্চ হতে পারে এটি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ-এ দলের বিপক্ষে দুটি আনঅফিসিয়াল টেস্ট ও তিনটি একদিনের ম্যাচ খেলতে এই মাসের শেষে ক্যারিবিয়ায় যাবে বাংলাদেশ-এ দল। সৌম্য ও সাব্বিরকে নেওয়া হয়েছে এক দিনের ম্যাচের সিরিজের স্কোয়াডে।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর বাংলাদেশের হয়ে কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি সৌম্য। সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন তিনি ১৬ মাস আগে। সাব্বিরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবশেষ পা পড়েছে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর ফেরার দাবি জানানোর মতো বড় কিছু করতে পারেনি কেউই। স্বীকৃত ক্রিকেটে দুজনই সবশেষ খেলেছেন গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। সেখানে তো মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের একাদশ থেকেও জায়গা হারান সৌম্য। লিগে ৮ ম্যাচ খেলে সৌম্যর মোট রান ছিল স্রেফ ১০২।
সাব্বির অবশ্য খুব খারাপ করেননি ঢাকা লিগে। ৫১৫ রান করে সর্বোচ্চ স্কোরারদের তালিকায় তিনি ছিলেন আটে। তবে ১৪ ইনিংসে স্রেফ একটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে ফুটে ওঠে, তার ধারাবাহিকতা খুব একটা ছিল না।
ঢাকা লিগের আগে বিপিএলে দুজনের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছে তাই। ফ্র্যাঞ্চাইজি এই ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি আসরে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের একাদশ থেকে বাদ পড়েছিলেন সাব্বির। টুর্নামেন্টে কেবল ৬টি ম্যাচ খেলতে পারেন তিনি। যে সংস্করণকে মনে করা হয় তার শক্তির জায়গা, সেখানে ৬ ইনিংসে রান করেন মোটে ১০৯।
প্রায় একই অবস্থা ছিল সৌম্যর। ৯ ইনিংস খেলে রান করেন মোট ১৬৪। এক ইনিংসেই করেন অপরাজিত ৮২, বাকি ৮ ইনিংস মিলিয়ে ৮২!
তারপরও তাদের প্রতিভা, সামর্থ্য আর বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রতিভাশূন্যতা মিলিয়ে বারবার তাদের দিকে ফিরে তাকাতে হয় নির্বাচকদের। বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পে রাখা হয় দুজনকেই। এরপর এবার ‘এ’ দলে সুযোগ।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘অনেক আশা নিয়েই এই দুজনকে ‘এ’ দলে রেখেছেন তারা। সৌম্য ও সাব্বির অনেক বড় একটি প্ল্যাটফর্ম পেয়েছে নিজেদের মেলা ধরার জন্য। আমরা চাইব, ওরা যেন আবার রানে ফিরে আসে এবং এত ভালো পারফর্ম করে যে, আমরা জাতীয় দলে ডাকতে পারি। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করা বেশ কজন ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ‘এ’ দলের দুটি সিরিজের দলে। তবে সৌম্য ও সাব্বিরের ক্ষেত্রে ঘরোয়া ক্রিকেটের ফর্ম বিবেচনা করা হয়নি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ওরা ভালো করেনি। তবে ওদের তো জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্মও করেছে। আমরা জানি ওরা কী করতে পারে। অনেক দিন ধরে সেভাবে ফর্মে নেই। এখন বাংলাদেশ টাইগার্স-এ ছিল। এই সফর ওদের জন্য বড় সুযোগ। সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, যে সংস্করণে বাংলাদেশ ধুঁকছে নিয়মিত। সৌম্য ও সাব্বির সেরা ছন্দে থাকলে, এই সংস্করণের জন্য সম্পদ হতে পারেন দুজনই। তবে এখনই তাদেরকে বিশ্বকাপের বিবেচনায় রাখা নিয়ে ভাবছেন না প্রধান নির্বাচক। বিশ্বকাপের কথা বলব না, তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এই দুজনের একটা আলাদা জায়গা তো সবসময় আছে। আমরা চাই আগে ওরা ফর্মে ফিরে আসুক।’
আনঅফিসিয়াল টেস্টের ‘এ’ দলের স্কোয়াডে মুমিনুল হককে রাখা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান কিছুদিন আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, টেস্টে বাজে ফর্মে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে ‘এ’ দলে নেওয়া হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত রাখা হয়নি অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানকে।
প্রধান নির্বাচকের মতে, “আপাতত খেলার বাইরে থেকে মুমিনুলের একটু চাপমুক্ত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। মুমিনুল তো সিনিয়র ক্রিকেটার অনেক। ওকে ‘এ’ দলে নেইনি। তরুণরা আছে, জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া কয়েকজন আছে। মুমিনুল একটু তরতাজা হয়ে নিক, ওর জন্য এটা জরুরি। তবে প্রয়োজন পড়লে সুযোগ সামনেও আছে। জরুরি মনে করলে যে কাউকে নেওয়া হতে পারে।”
এসএ/