রাস্তায় জন্মানো ফাতেমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রথম দিনেই জমা ৬৫ হাজার টাকা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


রাস্তায় জন্মানো ফাতেমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রথম দিনেই জমা ৬৫ হাজার টাকা

ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়কে ভুমিষ্ট হওয়া সেই নবজাতকের জন্য উপজেলা প্রশাসন দ্বারা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এবং পরিবার দ্বারা নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে। নবজাতকের বড় বোন তার নাম রেখেছে ফাতেমা।

সোমবার (জুলাই) উপজেলা প্রশাসন নবজাতক ও অপর দুই সন্তানের সহায়তার জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর খোলেন। যারা নবজাতক শিশু ও তার বোন জান্নাত এবং ভাই এবাদতকে সহায়তা করতে চান তারা ব্যাংক হিসাবে সহায়তা পাঠাতে পারবেন। হিসাবের শিরোনাম ‘রত্না আক্তার রহিমার নবজাতক ও অপর দুই সন্তানের সহায়তার হিসাব। হিসাব নম্বর: ৩৩২৪১০১০২৮৭২৮ সোনালী ব্যাংক, ত্রিশাল শাখা। হিসাব পরিচালনা করবেন ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নবজাতকের দাদা মোস্তাাফিজুর রহমান বাবলু।

নবজাতক শিশু ফাতেমা ও তার বোন জান্নাত এবং ভাই এবাদতকে সহায়তার ঐ হিসাব নম্বরে মঙ্গলবার বিকাল ৪ টা পর্যন্ত জমা হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আক্তারুজ্জামান জনবাণীকে জানান, “সোনালী ব্যাংক ত্রিশাল শাখা থেকে স্টেটম্যান্ট নিয়েছি। সেখান দেখা যায়, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পর থেকে মঙ্গলবার বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ৬৫ হাজার টাকা জমা পড়েছে। আশা করছি, অসহায় পরিবারটির সহায়তায় আরও টাকা জমা পড়বে।”

সোনালী ব্যাংক ত্রিশাল শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ দিলোয়ার হোসেন জনবাণীকে জানান, “নবজাতকের পরিবারের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পর থেকে মানুষের সহযোগীতার ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের সোনালী ব্যাংক এ শাখা থেকে যতটুকু সহযোগীতা করার আমরা করবো। অ্যাকাউন্ট খোলার প্রথম দিনই মঙ্গলবার বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ৬৫ হাজার টাকা জমা পড়েছে।”

নবজাতক ফাতেমার দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু জনবাণীকে জানান, “নবজাতক ফাতেমা ছাড়াও আমার আরও দুটি নাতি রয়েছে জান্নাত ও এবাদত। তাদের জন্য প্রশাসন একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছে। সকলেই যদি সহায়তা করে তাহলে আমরা দুই প্রতিবন্ধী স্বামী-স্ত্রীসহ নাতিদের খাবার দাবার, পড়াশোনা চালাতে পারবো।”

গত শনিবার আলোচিত ময়মনসিংহের ত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের কোর্ট ভবন এলাকায় ট্রাকচাপায় জাহাঙ্গীর আলম, তার অন্তঃসত্তা স্ত্রী রত্না বেগম ও তাদের মেয়ে সানজিদা আক্তার প্রাণ হারান। প্রাণঘাতী ট্রাক একের পর এক প্রাণ কেঁড়ে নিলেও গর্ভবতী মায়ের পেট ফেঁটে বেরিয়ে আসে নবজাতক। পৃথিবীর আলোর মুখ দেখতে পেলেও নবজাতক শিশুটির মায়াভরা চোখ দুটি দেখতে পারেনি গর্ভধারিণী মা ও বাবার মুখখানা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়ে বেঁচে রইলো সে। এতিম হয়ে গেলো নিহত জাহাঙ্গীর আলম ও রত্না আক্তার দম্পতির নবজাতকসহ জান্নাত ও এবাদত নামে তিন শিশু। বর্তমানে নবজাতক ফাতেমা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে ডাক্তারদের তত্বাবধানে রয়েছে।

এসএ/