প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছেলের পরিকল্পনায় ঘুমন্ত বাবাকে খুন
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষেকে ফাঁসাতে ছেলের পরিকল্পনায় ঘুমন্ত অবস্থায় বাবাকে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ময়মনসিংহের পাগলা থানার কোকসাইর এলাকার কেরামত আলীর ছেলে মো. আলম (৩৮) এবং একই জেলার ত্রিশাল উপজেলার কুষ্টিয়া এলাকার মো. আবু কালামের ছেলে মো. আরাফাত (২৬)।
সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে ময়মনসিংহের পাগলা থানাধীন কোকসাইর এলাকা থেকে মো. আলমকে এবং মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন কেওয়া এলাকা হতে মো. আরাফাতকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান জানান, “২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর ঘটনার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় গিয়াস উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গিয়াস উদ্দিন (৬০) গাজীপুর জেলার শ্রীপুর পৌর এলাকার ভাংনাহাটি পশ্চিম পাড়া নতুন বাজার গ্রামের আব্দুল মালেকের (মৃত) ছেলে। তিনি বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে গ্যারেজে চৌকিতে ঘুমাতেন। ঘটনার দিন রাতে সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন সকালে গ্যারেজের ভেতরে চৌকির ওপর গিয়াস উদ্দিনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যরা তাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মো. অলিউল্লাহ বাদী হয়ে ওই দিনই শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। শ্রীপুর থানা পুলিশ তদন্ত করার পর মামলাটি গাজীপুর পিবিআই তদন্তভার পায়। দীর্ঘ তদন্ত করে মো. আলম ও আরাফাতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায় পিবিআই। পরে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই।”
আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, গিয়াস উদ্দিনের গ্যারেজে অটোরিকশা রাখতেন গ্রেফতারকৃত মো. আলম ও আরাফাত। গিয়াস উদ্দিনের পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। সাহাবুদ্দিনকে ফাঁসাতে গ্রেফতারকৃতরা গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আবুজর (৩২) ও ভাই মো. সিরাজের ছেলে সবুজ (৩২) তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন আলমকে ফোন করে ডেকে আনেন আবুজর, সবুজ, আরাফাতসহ অন্যরা ঘটনাস্থলের পাশের দোকানে বসে চা পান করেন। পরে সবাই মিলে গ্যারেজে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় গিয়াস উদ্দিনকে মাথায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন।
এ বিষয়ে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, “এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। মূলত ভুক্তভোগীর ছেলে আবুজর এবং ভাতিজা সবুজ তাদের সহযোগীদের নিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। পিবিআইয়ের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মো. আলম ও মো. আরাফাত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে কথা স্বীকার করেন। মঙ্গলবার গাজীপুর আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।”
এসএ/